রেয়াজউদ্দিন বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীদেরও সরানো হল

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে জনসমাগম ঠেকাতে চট্টগ্রামের রেয়াজউদ্দিন বাজারের খুচরা বিক্রেতাদের রেল স্টেশনের পার্কিং এলাকার খোলা জায়গায় সরিয়ে নিয়েছে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2020, 12:24 PM
Updated : 24 April 2020, 12:24 PM

চট্টগ্রামে পাইকারি ও খুচরা বাজারের জন্য প্রসিদ্ধ রেয়াজউদ্দিন বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীদের সরিয়ে নেওয়া হলেও পাইকারি বেচাবিক্রি চলছে সেখানেই।

রেল স্টেশন পার্কিং এলাকায় অস্থায়ী ভিত্তিতে স্থাপন করা এ বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের গ্লাভস, মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিদিন ক্রেতা-বিক্রেতাদের শরীরের তাপমাত্রা  মাপারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে পুলিশের অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।

শুক্রবার দুপুরে এই বাজার স্থানান্তরের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তিনি বলেন, “দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন জায়গায় আসা যাওয়া করতে হয়। লকডাউনের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে এটা সত্য। কিন্তু সরকারের উদ্যোগ করোনাভাইরাসকে জয় করে একটা মানুষও যেন অভুক্ত না থাকে, না খেয়ে কেউ যেন মারা না যায়।”

সচিব মোস্তফা কামাল বলেন, “যেহেতু এ রোগের ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি, এটা মোকাবেলা করা কঠিন। সারা বিশ্বে প্রচুর লোক মারা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থা অনেক ভালো।”

এই বৈশ্বিক মহামারীতে বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চল আক্রান্ত হওয়ার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ও আন্তরিকতায় করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবাই একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়েছি।

“সরকার ত্রাণ সাহায্য দিচ্ছে। মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বেসরকারি পর্যায়েও অনেকে এগিয়ে আসছে। এতে আমরা মানুষের অভুতপূর্ব সাড়া পাচ্ছি।”

করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েও বিভিন্ন কাজে পুলিশ সদস্যদের এগিয়ে আসার প্রশংসা করেন স্বরাষ্ট্র সচিব।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে অস্থায়ী এ বাজারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিএমপি কমিশনার মাহবুবর রহমান।

তিনি বলেন, “বিশ্বব্যাপী এ দুর্যোগ কিন্তু মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। যারা মানুষের জন্য কাজ করতে চায় বিত্তবান, জনপ্রতিনিধিদের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সুযোগ করে দিয়েছে।

“যারা জনপ্রতিনিধি আছেন এবং ভবিষ্যতে জনপ্রতিনিধি হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তাদের জন্যও এটা একটা সুযোগ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। এখন মানুষের পাশে দাঁড়ানো আর নির্বাচনের সময় দাঁড়ানো এক নয়।”

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের বিভিন্ন কর্মতৎপরতা তুলে ধরে সিএমপি কমিশনার মাহবুব তাদের কাজকে ‘সারা দেশের মধ্যে ব্যতিক্রমী’ বলে দাবি করেন।

তিনি জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর সাথে সাথেই সরকারি নির্দেশনা দেওয়ার আগেই পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতসহ সব পর্যটন কেন্দ্র, সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ।

বিদেশফেরত ৯০ শতাংশ মানুষকে খুঁজে বের করে কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত এবং নগরীর ২০টি কাঁচাবাজার ইতোমধ্যে ২০টি খোলা স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংশ্লিষ্ট কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন। উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) শ্যামল কুমার নাথ।