একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি নাছির ও ছালামের

নগরীর উন্নয়ন কাজে সমন্বয়হীনতা নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলে বিভিন্ন সময়ে সংবাদ শিরোনামে আসা চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন এবং সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। 

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2018, 01:39 PM
Updated : 17 Sept 2018, 01:39 PM

নির্বাচন সামনে রেখে সোমবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সম্মেলন কক্ষে এক বৈঠকে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের এই দুই শীর্ষ নেতার তরফ থেকে এই প্রতিশ্রুতি আসে।

সিডিএ ও সিটি করপোরেশনের কাজে কোনো ‘সমন্বয়হীনতা নেই’ দাবি করে মেয়র নাছির বলেন, “উন্নয়নের কারণে দুর্ভোগ হচ্ছে সেটা অস্বীকার করার কিছু নেই। এটা পুরানো শহর, উন্নয়ন হলে কিছু দুর্ভোগ হয়।” 

আর সিডিএ চেয়ারম্যন আবদুচ ছালাম বলেছেন, মেয়রের সঙ্গে তার দূরত্বের বিষয়টি একেবারেই ‘অপপ্রচার’।

সিটি মেয়র নাছির চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আর কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম চট্টগ্রাম নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএর চেয়ারম্যান।

চট্টগ্রামের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে সিডিএ এবং সিটি করপোরেশনের কাজে সমন্বয়হীনতা নিয়ে দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল মেয়র নাছিরের।

আর সিডিএ চেয়ারম্যান ছালামকেও সিটি করপোরেশনের সমন্বয় সভাসহ কোনো বৈঠকে দেখা যেত না। 

এ নিয়ে দলীয় বৈঠকে দুইজনের বাকবিতণ্ডার খবরও চট্টগ্রামের রাজনীতিতে আলোচনার খোরাক যুগিয়েছে।

সোমবারের বৈঠকে নিজেদের মধ্যে দূরত্বের কথা অস্বীকার করে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির বলেন, “আমরা সরকারে আছি। সরকারের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।

“চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রত্যেকটি আসন যাতে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে পারি সেজন্য দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। সে সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে আমাদের বসা।”

নগরীর উন্নয়নে সিডিএ অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং সিটি করপোরেশনও নগরবাসীর সেবা দিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে মেয়র বলেন, “আমাদের সরকার দায়িত্বে আছেন। যদি আমাদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়, এটা কান টানলে মাথা আসার মত করে সরকারের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ হবে। জনগণের মধ্যে অসন্তোষ হবে, অটোমেটিকালি নির্বাচনের মধ্যে প্রভাব পড়বে। সে কারণে আমরা সতর্ক থাকছি।” 

‘ঐকবদ্ধভাবে’ সামনে আরও ভালো কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন চট্টগ্রামের সিটি মেয়র।

সিডিএ চেয়ারম্যন আবদুচ ছালামও সভায় একই সুরে কথা বলেন।

“আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে আমি সিডিএ চেয়ারম্যান হয়েছি। কোনো পরীক্ষায় পাস করে কিংবা বিসিএস দিয়ে সিডিএ চেয়ারম্যান হইনি। প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব দিয়েছেন; কর্মী হিসেবে কাজ করব। আমাদের মধ্যে দূরত্ব হওয়ার কোনো কারণ নেই।”

দুই নেতার মধ্যে দূরত্বের বিষয়টিকে ‘অপপ্রচার’ হিসেবে উড়িয়ে দেন নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ।

তিনি বলেন, “ষড়যন্ত্রকারীদের কোনো সুযোগ দেব না। তারা প্রপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছে, মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। তাদের মেসেজ দেয়ার জন্য আমরা এখানে বসেছি। উই আর স্ট্রংলি ইউনাইটেড।”

চট্টগ্রামে কর্ণফুলীর তলদেশে টানেলসহ ৫০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে জানিয়ে সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, “উন্নয়ন হচ্ছে আমাদের সমস্যা। উন্নয়ন করতে গেলে কিছু কষ্ট হয়। উন্নয়ন কাজ কঠিন। না হলে এসব উন্নয়ন আরও ৫০ বছর আগে হওয়ার কথা ছিল। কঠিন বলে কেউ হাত দেয়নি, আমি দিয়েছি।”

দুই নেতা ছাড়াও নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, সহ-সভাপতি সুনীল সরকার, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন বাচ্চুসহ ডজন খানেক নেতা এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচন সামনে রেখে দলকে এক করার চেষ্টায় মূলত তাদের উদ্যোগেই মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানকে নিয়ে এ বৈঠক হয়।