চট্টগ্রামে ভুল চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ

চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় আড়াই বছর বয়েসী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2018, 06:20 AM
Updated : 30 June 2018, 10:30 PM

ম্যাক্স হাসপাতালে শুক্রবার গভীর রাতে শিশুটি মারা যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সকে পুলিশ ধরে থানায় নিলেও পরে ছেড়ে দেয়।

শিশুটির মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মারা যাওয়া শিশু রাইফা দৈনিক সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুবেল খানের মেয়ে।

রুবেল খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ঠাণ্ডা লেগে গলা ব্যথা করায়  রাইফা খাওয়া বন্ধ করে দিলে বৃহস্পতিবার বিকালে ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে।

“ওই রাতে  রাইফাকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হলে সে অস্বস্তি বোধ করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা শিশু বিশেষজ্ঞকে কল দেওয়ার পরামর্শ দেন।”

এরপর শিশু বিশেষজ্ঞ বিধান বড়ুয়াও একই ধরনের ওষুধ দেন জানিয়ে রুবেল বলেন, “রাতে ওই ওষুধ দেওয়ার পর থেকে রাইফার খিঁচুনি শুরু হয়। দায়িত্বরত চিকিৎসককে জানালে তিনি ডা. বিধান বড়ুয়ার সাথে কথা বলে ‘সেডিল’ ইনজেকশন পুশ করেন। এরপর রাইফা নিস্তেজ হয়ে যায়।”

রুবেল খানের মেয়ের মারা যাওয়ার খবর পেয়ে রাতেই ম্যক্স হাসপাতালে ছুটে যান সাংবাদিকরা। তাদের প্রতিবাদের মুখে পুলিশ গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যুর প্রতিবাদে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব এলাকায় মানবন্ধন করে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন। ছবি: সুমন বাবু

খবর পেয়ে রাতে কয়েকজন সহযোগী নিয়ে থানায় উপস্থিত হন চিকিৎসকদের সংগঠন বিএমএ’র চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল ইকবাল।

এরপর ভোরে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পর আটক চিকিৎসক ও নার্সকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানান চকবাজার থানার ওসি আবুল কালাম। 

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়েনের (সিইউজে) সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সাংবাদিক, বিএমএ ও পুলিশের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পর একটি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনকে প্রধান করে গঠিত কমিটিতে বিএমএ প্রতিনিধি, সিইউজে প্রতিনিধি, বিএমএ ও সিইউজে’র পক্ষ থেকে একজন করে শিশু বিশেষজ্ঞ থাকবেন।

আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে জানিয়ে হাসান ফেরদৌস বলেন, “তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

শিশুটির মৃত্যুর বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এই ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করে তদন্তের মাধ্যমে ‘দোষী’ ব্যক্তিদের শাস্তি চেয়েছে সাংবাদিক সংগঠনগুলোর নেতারা। বিএমএ নেতা ফয়সাল ইকবালের আচরণের নিন্দা জানিয়েছেন তারা।