পাঠ্যবই: ‘হিন্দুত্ব ও নাস্তিক্যবাদ’ ছেঁটে ফেলায় হেফাজত আমিরের প্রশংসা 

হেফাজতে ইসলামের দাবি মেনে স্কুলের পাঠ্যবই থেকে ‘নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দু তত্ত্বের বিষয়বস্তু’ বাদ দেওয়ার সরকারের ‘প্রশংসনীয় ও ইতিবাচক’  উদ্যোগে ইসলামবিদ্বেষী গোষ্ঠীর গায়ে জ্বালা ধরেছে বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনটির আমির শাহ আহমদ শফী।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Jan 2017, 03:15 PM
Updated : 14 Jan 2017, 06:37 PM

শনিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের আন্দোলন ও প্রতিবাদের ফলে সরকারের নীতি নির্ধারকরা বিষয়টির গুরুত্ব ও নাজুকতা বুঝতে পেরে পেরে সিলেবাসে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছেন।

“কিন্তু পাঠ্যপুস্তকে হেফাজতের দাবি শতভাগ পূরণ হয়েছে বলে যারা বিতর্ক তুলে ইসলামি ভাবধারার গল্প-কবিতার প্রতি আঙুল তুলেছেন তারা ইমানি চেতনাবোধ মুছে বাংলাদেশে ইসলামবিদ্বেষ ও নাস্তিকতা ছড়িয়ে দেওয়ার এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছেন।”

বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৬ সালের ৮ই এপ্রিল হেফাজতে ইসলাম স্কুল পাঠ্যবইয়ের মাধ্যমে দেশের স্কুল-কলেজগুলোতে মুসলমানদের সন্তানদের নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দু তত্ত্বের বিষয়ে পড়ানোর অভিযোগ তোলে।

“২০১২ সাল পর্যন্ত চলে আসা সিলেবাস পাল্টে ২০১৩ সাল থেকে স্কুল পাঠ্যবইয়ে এমন ১৭টি রচনা বাদ দেওয়া হয়েছে, যেগুলো নৈতিকতা ও আদর্শিকভাবে স্বীকৃত হয়ে আসছে কয়েক যুগ ধরে। তার পরিবর্তে এমন ১২টি নতুন রচনা সংযোজন করা হয়েছে, যেগুলো তাত্ত্বিকভাবে সরাসরি হিন্দুত্ব ও নাস্তিক্যবাদী ধ্যান-ধারণার সঙ্গে যুক্ত।”

হেফাজত আমীরের প্রেসসচিব মাওলানা মুনির আহমদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, পাঠ্যবইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ইসলামবিদ্বেষী এই চক্রের বক্তব্য গ্রহণের সুযোগ নেই। এদের কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।

স্কুল পাঠ্যবই নিয়ে সমালোচনার মুখে গণতান্ত্রিক শাসনের দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা থেকে সরকারের ‘এই ইতিবাচক উদ্যোগ প্রশংসনীয়’ বলে মন্তব্য করে এতে বলা হয়, “স্কুল পাঠ্যবইয়ে কি পরিবর্তন হয়েছে, তা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন, সামাজিক নেতৃবৃন্দ ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে যাচাই করে দেখা হোক।”

স্কুল পাঠ্যপুস্তকের পরিবর্তন নিয়ে যারা বিতর্ক তুলতে চাইছে তাদের ‘ক্ষুদ্র অংশ’ আখ্যা দিয়ে আহমদ শফী বলেন, “তাদের কাজই হচ্ছে নৈতিক আদর্শ ও ইসলামি চেতনাবোধের বিপক্ষে এবং নাস্তিক্যবাদ ও স্বেচ্ছাচারিতার পক্ষে কথা বলা।

“তারা ‘ও’ দিয়ে ‘ওড়না’ লেখায় সাম্প্রাদয়িকতা ও অসামঞ্জস্য খুঁজে পায়, কিন্তু ‘র’ দিয়ে ‘রথ টানি’, ‘ত’ দিয়ে ‘তবলা বাজাই’, ‘ঢ’ দিয়ে ‘ঢাক বাজাই’, ‘ঋ’ দিয়ে ‘ঋষি’র মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা ও অসামঞ্জস্য খুঁজে পায় না।”

হেফাজত আমীর বিবৃতিতে পাঠ্যবইয়ে হেফাজতের দাবি শতভাগ পূরণ হয়েছে বলে কয়েকটি পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলের উস্কানিমূলক সংবাদ প্রতিবেদন ও চিহ্নিত ব্যক্তিদের নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানের সমালোচনা করে তাদের ইসলামবিদ্বেষীদের মুখপত্রের ভূমিকা বাদ দিয়ে দেশের গণমানুষের পক্ষে ভূমিকা পালনের আহবান জানান।