“আমরা যদি ফেল করি তাহলে দায় নেব। তবে এর জন্য যারা দায়ী, আমাদের ফেল করতে বাধ্য করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Published : 19 Jan 2025, 09:53 PM
চট্টগ্রামবাসী জলাবদ্ধতার ক্ষেত্রে এবারে দৃশ্যমান সুফল পাবে মন্তব্য করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এজন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন।
রোববার বিকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় আয়োজিত এ সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক উপস্থিত ছিলেন।
ফাওজুল কবির খান বলেন, “চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসন প্রকল্পের আর্থিক সংস্থানের সমস্যা কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এই সমস্যা সমাধানে যে টাকা ব্যয় হয়েছে, মানুষ এর সুফল পাননি। পরিকল্পনা কমিশন জিজ্ঞেস করবে, আগে যে টাকা দেওয়া হয়েছিল, এর সুফল কী? নতুন করে টাকা বরাদ্দ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হবে।”
ফল না পেলে খামাকা টাকা ঢেলে লাভ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “মানুষ যদি সুফল না পান তাহলে কে টাকা দেবেন? যদি ব্যবসা করেন তাহলে নিয়মিত লস করেন, সে ব্যবসায় টাকা দেবে না। সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পও একই জিনিস। আপনি যদি ফল না পান তাহলে খামাকা টাকা ঢেলে তো হবে না।”
চট্টগ্রামবাসী এবারে জলাবদ্ধতার ক্ষেত্রে দৃশ্যমান সুফল পাবেন বলে আশা প্রকাশ করে উপদেষ্টা বলেন, “এ জন্য আমরা সবার সহযোগিতা চাই।”
অতীতের সাথে এবারের উদ্যোগে পার্থক্য আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এবার যারা ফেল করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবার সার্বক্ষণিকভাবে তদারকি করা হবে। আমরা আসছি, চলে গেলাম, এবারে তা হবে না। প্রতিটি পর্যায়ে তদারকি হবে। দপ্তর প্রধানেরা ঢাকা থেকে এসে তদারকি করবেন। আমাদের চার জনকে (উপদেষ্টা) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আমরাও আসব। আমরা যদি ফেল করি তাহলে দায় নেব। তবে এর জন্য যারা দায়ী, আমাদের ফেল করতে বাধ্য করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
চট্টগ্রাম মহানগরীর দীর্ঘদিনের সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৪ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্পের কাজ চলছে বেশ কয়েক বছর ধরে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ দুটি, সিটি করপোরেশন একটি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ইতিমধ্যে এসব প্রকল্পে খরচ হয়েছে ৮ হাজার ৩১২ কোটি টাকা।
মতবিনিময় সভায় নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে বেশকিছু করণীয় নির্ধারণ করে আগামী চারমাসের মধ্যে এসব কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে বলা হয়।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. নুরুল করিম।
সভায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, বিশেষজ্ঞ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদের মতামত তুলে ধরেন।