চট্টগ্রামে ‘মহাসমুদ্র’ দেখাতে ফখরুলকে খুঁজলেন কাদের

“চট্টগ্রামের নোমান সাহেব, আমীর খসরু, মীর নাছির আপনারা কোথায়? দেখে যান, আজ চট্টগ্রামের কী অবস্থা।”

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2022, 04:29 PM
Updated : 4 Dec 2022, 04:29 PM

চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের জনসভা ‘মহাসমুদ্রে’ রূপ পেয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, “বিএনপির ফখরুল সাহেব, তিনি শুধু বলেন, খেলা হবে। ঠিক আছে, হবে খেলা। বীর চট্টলা তৈরি। গোটা চট্টগ্রাম আজ মহাসমুদ্র। সব ঢেউ মিলেছে পলোগ্রাউন্ডে। আজকের চট্টগ্রাম দেখে যান। কারণ আমরা যা দিয়েছি, আর কেউ তা দিতে পারেনি। পলোগ্রাউন্ডে সর্বকালের সর্ববৃহৎ এ জনসভা।”

রোববার চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “চট্টগ্রামের নোমান সাহেব, আমীর খসরু, মীর নাছির আপনারা কোথায়? দেখে যান, আজ চট্টগ্রামের কী অবস্থা!”

বিভাগে বিভাগে বিএনপির সমাবেশ নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “এক সপ্তাহ আগে থেকে তারা বিছানা বালিশ নিয়ে, তাঁবু নিয়ে মাঠে চলে যায়। দুবাইয়ের টাকা, বিদেশের টাকা, লন্ডনের টাকা ফখরুলের কাছে আসে। টাকার বস্তা নিয়ে সমাবেশ করতে যায়।”

শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা বর্ণনা করে কাদের বলেন, “সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। সফল কূটনৈতিক শেখ হাসিনা। তিনি জনগণের কথা বলেন। গরিব মানুষকে বাঁচানোর কথা বলেন।”

‘বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে’ মন্তব্য করে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র, উন্নয়ন, অর্জনকে বাঁচাতে হলে ক্ষমতায় শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। খেলা তো হবেই। ডিসেম্বরে খেলা হবে।”

চট্টগ্রামবাসীকে তৈরি থাকার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, “তারা এদেশে সহস্র মায়ের ‍বুক খালি করেছে। সন্তান হারা মা-বাবা, স্বামী হারা স্ত্রী, ভাই হারা বোনের আর্তনাদে বাংলার আকাশ ভারী করেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার দায়মুক্তি যারা দিয়েছিল, নেত্রীকে টার্গেট করে ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পদদলিত করেছিল; সেই দলের নাম বিএনপি- বাংলাদেশ নালিশ পার্টি।”

চট্টগ্রামের প্রতি আওয়ামী লীগ সভাপতি অনেক ‘আন্তরিক’ মন্তব্য করে কাদের বলেন, “কোভিডের সময়ে তিনি (শেখ হাসিনা) কোথাও যাননি। কিন্তু চট্টগ্রামে এসেছেন।”

বিএনপির প্রতি আওয়ামী লীগ সম্পাদক বলেন, “সংবিধান সংশোধন দিবা স্বপ্ন। ভুলে যান। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বপ্ন দেখবেন না আর। হবে না।”

সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণড্লীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, “জিয়ার পরিবার খুনির পরিবার। ২১ অগাস্ট তারা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল। বিজয়ের মাসে ১০ ডিসেম্বর ঢাকা শহর থাকবে মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে।”

সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, “ডিসেম্বর মাসে দেশে কোনো অঘটন ঘটাতে চাইলে দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়া হবে। শেখ হাসিনা যতদিন আছে, উন্নয়নের ধারবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। কোনো তর্জন-গর্জন করবেন না। সোজা আঙ্গুলে না উঠলে আঙ্গুল বাঁকা করতে আমরা জানি।”

শেখ হাসিনার ‘জাদুকরী’ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বদলে গেছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, “ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সেসময়ের রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল। এর আগে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন।

“তাই বিএনপি সোহরাওয়ার্দীতে যেতে চায় না। তারা ঢাকা শহরে গণ্ডগোল করতে চায়। ১০ ডিসেম্বর তারা ঢাকা শহরের ‍বুকে আত্মসমর্পণ করবে ইনশাল্লাহ।”

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, “২০১২ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত তারা উন্নয়নে বাধা দিতে বহু নাশকতা করেছে। সফল হতে পারেনি। এখন আবার সেই অন্ধকারের শক্তি মাঠে নেমেছে। চট্টগ্রাম থেকে রুখে দাঁড়ানো শুরু হবে।”

দেশের উন্নয়নের অগগ্রতি থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, “২০০৮ সাল থেকে আজ পর্যন্ত চট্টগ্রামে এক লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি গণতন্ত্রের ধারাকে থামিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাদের সচেতন থাকতে হবে। প্রতিহত করতে হবে।”

নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন রেলমন্ত্রী ‍নূরুল ইসলাম সুজন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডরীর সদস্য আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ, সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী ও ওয়াসিকা আয়েশা খান।