চট্টগ্রামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের পর তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার রাতে নগরীর পাঁচলাইশ থানার নাজিরপাড়া নিজাম কলোনীতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে জানান ওই থানার ওসি নাজিম উদ্দিন মজুমদার।
নিহত আব্দুল মান্নান (৪৩) ইসলামিক ফাউন্ডেশনে ফটিকছড়ি উপজেলায় কর্মরত ছিলেন। ফটিকছড়ির দৌলতপুরে তার বাড়ি।
রাতে মান্নানের লাশ উদ্ধারের পরপরই তার স্ত্রী খাদিজা বেগমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ওসি নাজিম বলেন, “পারিবারিক বিষয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতির এক পর্যায়ে মান্নান খাটের ওপর পড়ে গেলে খাদিজা কম্বল দিয়ে তার মুখ চেপে ধরে। শ্বাসরোধ হয়ে মান্নান ঘটনাস্থলেই মারা যায়।”
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খাদিজা ঘটনা ‘স্বীকার করেছেন’ বলে জানান ওসি।
তিনি জানান, ওই বাসার আরেকটি কক্ষে মান্নান-খাদিজা দম্পতির দশম শ্রেণি পড়ুয়া সন্তান ও মান্নানের ‘অসুস্থ ভগ্নিপতি’ ছিলেন। সবদিক খতিয়ে দেখতে তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
স্বজনরা জানিয়েছে, নিহত মান্নানের দুই স্ত্রী রয়েছে। প্রথম স্ত্রী খাদিজা নগরীর নাজিরপাড়া এলাকায় সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। আর দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিদা আক্তার থাকেন হাটহাজারীর নূর মসজিদ এলাকায়।
মান্নানের ভাতিজা রাকিব হাসান বলেন, প্রথম পক্ষে এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। প্রথম পক্ষের ছেলে দশম শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। আর সাত বছর বয়সী মেয়ে একটি হেফজখানায় আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে থাকেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাবিদা আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রথম স্ত্রীর কথা গোপন রেখেই চার বছর আগে তাকে বিয়ে করেছিলেন মান্নান। তাদের ১৭ মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান আছে।
সাবিদা জানান, তার বাড়ি দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায়। বিয়ের পর তাকে চট্টগ্রামে এনে হাটহাজারী নূর মসজিদ এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকতেন মান্নান। বিয়ের তিন মাস পর মান্নানের আগের স্ত্রীর বিষয়ে জানতে পারেন তিনি।
মান্নান দুই স্ত্রীর বাসায় থাকতেন জানিয়ে সাবিদা বলেন, “একদিন পরপর মান্নান তার প্রথম স্ত্রীর বাসায় গিয়ে থাকতেন। বুধবারও তিনি ওই বাসায় গিয়েছিলেন।”
তিনি অভিযোগ করেন, গত রোজার সময় তার সতীন খাদিজা বেগম ছেলেকে নিয়ে হাটহাজারীতে তাদের বাসায় যান। সেখানে গিয়ে মান্নানকে হুমকি দিয়ে আসেন।
এ ঘটনায় মান্নানের ছোট ভাই বেলাল উদ্দিন খাদিজাকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেছেন বলে জানান পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদেকুর রহমান।