“নির্বাচনী আইন সংস্কার কাগুজে ব্যাপার, তাই সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বেশি সময় লাগার কথা নয়,” বলেন তিনি।
Published : 18 Jan 2025, 11:17 PM
রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
শনিবার চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি আয়োজিত এক সভায় তিনি বলেন, “সংস্কার প্রক্রিয়া প্রলম্বিত করে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় দীর্ঘায়িত করার প্রচেষ্টা চলছে। কোনো মহলকে সুবিধা দিতে তা করা উচিত হবে না।”
সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। ভোটার তালিকাসহ নির্বাচন সম্পর্কিত অন্যান্য কাজ চলমান।
“নির্বাচনী আইন সংস্কার কাগুজে ব্যাপার, তাই সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বেশি সময় লাগার কথা নয়। আগামী জুলাই-অগাস্টের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন সম্ভব।”
এর আগেও বিএনপি বলেছে, চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে সংসদ নির্বাচন করা সম্ভব।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। দেশে হাল ধরার পর অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে দুই ধাপে ১১টি কমিশন গঠন করে।
চলতি বছর ১৫ জানুয়ারি প্রথম ধাপের ছয় কমিশনের মধ্যে চারটির প্রতিবেদন জমা পড়েছে। এ মাসের মধ্যে বাকি দুই কমিশনের প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে।
সংস্কার ও নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপির বিপরীত অবস্থানে অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও তাদের সংগঠন জাতীয় নাগরিক কমিটির, যারা ইতোমধ্যে দল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে।
সংগঠন দুটি সংস্কার শেষে জাতীয় নির্বাচনের পক্ষে। তার আগে তারা স্থানীয় সরকারের নির্বাচন চায়। অন্যদিকে ‘প্রয়োজনীয়’ সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি। বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলেরও একই অবস্থান।
শুক্রবার পঞ্চগড়ে এক অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন করা অসম্ভব।
চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন বলেন, “কোন একটি মহলকে রাজনৈতিক দল গঠন করার সুযোগ দেওয়ার জন্য, তাদেরকে অবৈধভাবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে কালক্ষেপণ করা অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত হবে না।”
তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমানের জন্ম হয়েছিল বলেই বাকশালের কথা বলে যে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয় সে গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করা সম্ভব হয়েছিল।”
বাংলাদেশের প্রতিটি সাংবিধানিক, রাষ্ট্রীয় ও গণতান্ত্রিক সংকটে প্রয়াত জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন সালাহউদ্দিন।
এক-এগারোর সরকারের সঙ্গে মিলে শেখ হাসিনার ‘ষড়যন্ত্রের’ কারণে দেশে একদলীয় শাসনের পথ সুগম হয় বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য।
তিনি বলেন, “ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে শেখ হাসিনা সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের কবর রচনা করেছিলেন।”
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নগরীর আলমাস মোড় এলাকায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে মহানগর বিএনপি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সেখানে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা। কমিটির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন চ্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বে থাকা বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।