আবারও লঙ্কান স্পিনে কুপোকাত পাকিস্তান

গলে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-১ ড্রয়ে শেষ হলো।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2022, 08:26 AM
Updated : 28 July 2022, 08:26 AM

জিততে হলে গড়তে হতো বিশ্ব রেকর্ড। শেষ দিনের পিচে চারশ ছাড়ানো লক্ষ্য প্রায় অসম্ভব হলেও অন্তত ম্যাচ বাঁচানোর সম্ভাবনা ভালোমতোই টিকে ছিল পাকিস্তানের। কিন্তু প্রবাথ জয়াসুরিয়া ও রমেশ মেন্ডিসের সামনে আরও একবার পথ হারিয়ে ফেলল তারা। যেতে পারল না লক্ষ্যের ধারে কাছেও। বিশাল ব্যবধানে জিতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ সমতায় শেষ করল শ্রীলঙ্কা।

সিরিজ জিততে গলে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের শেষ দিনটা পার করে দিলেই চলত পাকিস্তানের। হাতে ছিল ৯ উইকেট। কিন্তু অধিনায়ক বাবর আজম ছাড়া আর কেউ ইনিংস বড় করতে পারলেন না। ফলে ৫০৮ রানের পাহাড়সম লক্ষ্যে নেমে ২৬১ রানে গুটিয়ে গেল তারা।

২৪৬ রানের জয় নিয়ে ১-১ এ সিরিজ শেষ করল শ্রীলঙ্কা।

বাঁ হাতি স্পিনে বাবরের সবচেয়ে মূল্যবান উইকেটসহ ১১৭ রান খরচায় ৫ উইকেট নেন জয়াসুরিয়া। ৪ উইকেট নেন রমেশ মেন্ডিস।

তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৯ রান করে প্রতিপক্ষকে পাঁচশ ছাড়ানো লক্ষ্য ছুঁড়ে দেওয়ার কারিগর ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

এক উইকেটে ৮৯ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শেষ করা পাকিস্তানের আর দরকার ছিল ৪১৯ রান। যেকোনো পিচেই শেষ দিনে তা ভীষণ কঠিন। তবে ম্যাচ বাঁচানোর ভালো সুযোগ ছিল তাদের।

সে লক্ষ্যে দিনের শুরুতেই জোর ধাক্কা খায় সফরকারীরা; তৃতীয় ওভারে ফিরে যান ইমাম-উল-হক। ৪টি চারে ৪৯ রান করে মেন্ডিসের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন এই ওপেনার।

মোহাম্মদ রিজওয়ানের সঙ্গে বাবরের জুটিতে অবশ্য শুরুর ধাক্কা ভালোভাবেই সামাল দেয় তারা। তবে যখনই ভালো কিছুর সম্ভাবনা উঁকি দিতে শুরু করে তখনই জয়াসুরিয়ার আঘাত। রিজওয়ানকে বোল্ড করে ৭৯ রানের তৃতীয় উইকেটের জুটি ভাঙেন বাঁ হাতি স্পিনার।

এরপর আর তেমন কোনো জুটি গড়তে পারেনি পাকিস্তান। উইকেটে দাঁড়াতেই পারেননি ফাওয়াদ আলম ও আগা সালমান। একপাশ আগলে রেখে অনেকটা সময় চেষ্টা করা বাবরকে এলবিডব্লিউ করে ফেরান জয়াসুরিয়া। ওখানেই স্বাগতিকদের জয়ের পথ উন্মুক্ত হয়ে যায়।

শেষ ৪ উইকেটে জয়ের ব্যবধানই কমিয়েছে পাকিস্তান।

প্রথম ইনিংসে ৮০ রানে তিন উইকেট নেওয়া জয়াসুরিয়ার ম্যাচে শিকার ৮ উইকেট। সিরিজের প্রথম টেস্টে দল হারলেও তিনি ঠিকই ছিলেন সফল। এক ইনিংসে ৫ উইকেটসহ ৯টি শিকার ধরেন তিনি। মোট ১৭ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা হলেন তিনিই।

তিন টেস্টের ক্যারিয়ারে ৬ ইনিংসের চারটিতেই ৫টি করে উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়লেন জয়াসুরিয়া। এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে অভিষেক হয় তার। ৩০ বছর বয়সে টেস্ট ক্যাপ পেয়ে দুই ইনিংসে নেন ৬টি করে উইকেট। গড়েন অভিষেকে কোনো বাঁহাতি স্পিনারের সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড।

সঙ্গে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসেও ৫ উইকেট নিয়ে ১৪৫ বছরের টেস্ট ইতিহাসে প্রথম বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে ক্যারিয়ারের প্রথম তিন ইনিংসের প্রতিটিতেই অন্তত পাঁচ উইকেট নেওয়ার অনন্য কীর্তি গড়েন জয়াসুরিয়া। অবিশ্বাস্য সে সাফল্যগাঁথা চলছেই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৩৭৮

পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ২৩১

শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ৩৬০/৮ ডি.

পাকিস্তান ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৫০৮) ৭৭ ওভারে ২৬১ (আগের দিন ৮৯/১) (ইমাম ৪৯, বাবর ৮১, রিজওয়ান ৩৭, ফাওয়াদ ১, সালমান ৪, নওয়াজ ১২, ইয়াসির ২৭, হাসান ১১, নুমান ০*, নাসিম ১৮; আসিথা ৬-১-২০-০, জয়াসুরিয়া ৩২-৫-১১৭-৫, রমেশ ৩০-৭-১০১-৪, ধনাঞ্জয়া ২-০-৪-০, ওয়েল্লালাগে ৭-০-১৭-০)

ফল: শ্রীলঙ্কা ২৪৬ রানে জয়ী

সিরিজ: দুই টেস্টের সিরিজ ১-১ সমতা

ম্যান অব দা ম্যাচ: ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা

ম্যান অব দা সিরিজ: প্রবাথ জয়াসুরিয়া