বাবরের সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের চারে চার

চতুর্থ ওয়ানডেতে নিউ জিল্যান্ডকে ১০২ রানে হারিয়ে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠল বাবর আজমের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2023, 06:17 PM
Updated : 5 May 2023, 06:17 PM

দুই দলের একাদশে পরিবর্তন এলো সব মিলিয়ে আটটি। তবে প্রথম তিন ম্যাচের ধারাবাহিকতায় ফল অপরিবর্তিত রইল এবারও। নিউ জিল্যান্ডকে আবারও হারাল পাকিস্তান। উঠে গেল ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে। 

চতুর্থ ওয়ানডেতে শুক্রবার ১০২ রানের জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৪-০তে এগিয়ে গেল বাবর আজমের দল। 

জয়ের মূল কারিগরদের একজন অধিনায়ক বাবর নিজেই। সিরিজ জুড়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতায় এবার তিনি করেন সেঞ্চুরি। সঙ্গে আঘা সালমানের ঝড়ো ফিফটি ও কয়েকটি ক্যামিও ইনিংসে পাকিস্তান ৬ উইকেট হারিয়ে করে ৩৩৪ রান। নিউ জিল্যান্ড থমকে যায় ২৩২ রানেই। 

প্রথম তিন ম্যাচে ৪৯, ৫৪, ৬৫ রানের পর এবার ১০৭ রান করে ম্যাচের সেরা বাবর। তার ১১৭ বলের ইনিংসটি সাজানো ১০ চারে। এই ইনিংসের পথে ওয়ানডেতে দ্রততম ৫ হাজার রানের রেকর্ডও গড়েন তিনি।

বল হাতে ৪৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের সফলতম বোলার লেগ স্পিনার উসামা মির। পেসার মোহাম্মদ ওয়াসিমের প্রাপ্তি ৪০ রানে ৩টি। 

করাচির জাতীয় স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে পাঁচটি পরিবর্তন আনা পাকিস্তান। শুরুতে তারা হারায় অবশ্য ফখর জামানকে (১৭ বলে ১৪)। 

ইমাম-উল-হকের জায়গায় সুযোগ পাওয়া আরেক ওপেনার শান মাসুদ দ্বিতীয় উইকেটে বাবরের সঙ্গে ৫০ রানের জুটিতে এগিয়ে নেন দলকে। ফিফটির কাছে গিয়ে লেগ স্পিনার ইশ সোধির বলে স্টাম্পড হয়ে বিদায় নেন মাসুদ (৫৫ বলে ৪৪)। 

বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মোহাম্মদ রিজওয়ান। ম্যাট হেনরির সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হন এই কিপার ব্যাটসম্যান (২৮ বলে ২৪)। 

পাকিস্তানের ইনিংস গতি পায় সালমান উইকেটে যাওয়ার পর। সুইপ, রিভার্স সুইপ খেলে নিউ জিল্যান্ডের বোলারদের এলোমেলো করে দেন তিনি। ফিফটি তুলে নেন ৪০ বলে। এরপর আর বেশিদূর যেতে পারেননি। 

৪৬ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় গড়া সালমানের ৫৮ রানের ইনিংস। তার বিদায়ে ভাঙে ইনিংস সেরা ১০০ বলে ১১৭ রানের জুটি। 

এ দিন ১৯ রানে পৌঁছে দ্রুততম ৫ হাজার রানের রেকর্ড গড়েন বাবর। ৯৭ ইনিংসে মাইলফলক ছুঁয়ে তিনি ভেঙে দেন হাশিম আমলার রেকর্ড (১০১ ইনিংস)। ৫৮ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করা পাকিস্তান অধিনায়ক তিন অঙ্কের ঠিকানায় পৌঁছেন ১১৩ বলে।

তার অষ্টাদশ ওয়ানডে সেঞ্চুরির ইনিংসটি থামে ৪৮তম ওভারে ক্যাচ দিয়ে। মাঝে ২২ বলে ২৮ রান করেন ইফতিখার আহমেদ। 

শেষ দুই ওভারে ৩৮ রান যোগ করেন মোহাম্মদ হারিস ও শাহিন শাহ আফ্রিদি। এর মধ্যে টিকনারের করা শেষ ওভারে আফ্রিদি তিনটি ছক্কার সঙ্গে চার মারেন একটি। ৭ বলে ২৩ রান করেন তিনি। 

বড় লক্ষ্য তাড়ায় ৪৬ রানের মধ্যে দুই ওপেনার উইল ইয়াং ও টম ব্লান্ডেলকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় নিউ জিল্যান্ড। তৃতীয় উইকেটে ১০৩ বলে ৮৩ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন ড্যারিল মিচেল ও টম ল্যাথাম। 

৪৮ বলে ৩৪ রান করা মিচেলকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন উসামা। ফিফটি ছুঁয়ে বেশিদূর যেতে পারেননি ল্যাথাম। তার ৭৬ বলে ৬০ রানের ইনিংস থামান আফ্রিদি। 

আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে কিউইদের আশার পালে খানিকটা হাওয়া দেন মার্ক চাপম্যান। কিন্তু ৩৩ বলে ৩ ছক্কা ও ৪টি চারে ৪৬ রান করে এই ব্যাটসম্যান ফেরার পরই কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় সফরকারারী। ২৭ রানের মধ্যে তারা হারায় শেষ ৫ উইকেট। 

আগামী রোববার শেষ ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের সামনে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর চ্যালেঞ্জ। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ৩৩৪/৬ (ফখর ১৪, মাসুদ ৪৪, বাবর ১০৭, রিজওয়ান ২৪, সালমান ৫৮, ইফতিখার ২৮, হারিস ১৭*, আফ্রিদি ২৩*, হেনরি ১০-১-৬৫-৩, লিস্টার ১০-০-৫৭-১, টিকনার ৮-০-৭৪-০, সোধি ১০-১-৫৩-১, ম্যাকনকি ১০-০-৬১-০, নিশাম ২-০-১৫-০) 

নিউ জিল্যান্ড: ৪৩.৪ ওভারে ২৩২ (ইয়াং ১৫, ব্লান্ডেল ২৩, মিচেল ৩৪, ল্যাথাম ৬০, চাপম‍্যান ৪৬, নিশাম ১১, ম‍্যাকনকি ৮, সোধি ৯, হেনরি ৫, টিকনার ৬, লিস্টার ১*; আফ্রিদি ৬-১-৩৪-১, রউফ ৮-০-৩৭-২, ওয়াসিম ৮.৪-১-৪০-৩, সালমান ৯-০-৪৯-০, উসামা ১০-০-৪৩-৪, ইফতিখার ২-০-২১-০) 

ফল: পাকিস্তান ১০২ রানে জয়ী 

সিরিজ: ৫ ম‍্যাচের সিরিজে পাকিস্তান ৪-০তে এগিয়ে 

ম্যান অব দা ম্যাচ: বাবর আজম