সঞ্চালক প্রশ্নটি করলেন কণ্ঠে অনেক উচ্ছ্বাস নিয়ে, ‘২০০তম ম্যাচে নেতৃত্ব দিলেন, নিশ্চয়ই অনেক আবেগ, অনেক উদযাপনের ব্যাপার, কেমন লাগছে?’ মহেন্দ্র সিং ধোনি নির্লিপ্ত কণ্ঠে উত্তর দিলেন, “আমি তো জানতামই না…এসব মাইলফলকে কী যায়-আসে!”
আইপিএলে অধিনায়কত্বের নানা মাইলফলকে ধোনির ধারেকাছে কেউ নেই অনেক আগে থেকেই। সব মিলিয়ে ২১৪টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ১৪৬ ম্যাচে টস করে অনেকটা পেছনে থেকে রেকর্ডের দুইয়ে রোহিত শর্মা।
ধোনির ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট অধ্যায়ের প্রায় পুরোটায় আছে চেন্নাই সুপার কিংসই। রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে বুধবার ঘরের মাঠের ম্যাচটি দিয়ে পূরণ হলো চেন্নাইয়ের জার্সিতে তার নেতৃত্বে দ্বিশতক।
আইপিএলের শুরু থেকেই ধোনি, নেতৃত্ব ও চেন্নাই একরকম সমার্থক। এমএ চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামে এই ম্যাচের আগে ধোনির হাতে বিশেষ স্মারক তুলে দেন চেন্নাই সুপার কিংসের সত্ত্বাধিকারী নারায়ণাস্বামী শ্রীনিবাসন।
ম্যাচের পর ধোনিকে জিজ্ঞেস করা হয় মাইলফলক নিয়ে। কিন্তু তিনি পাত্তাই দিলেন না ব্যক্তিগত এই প্রাপ্তিকে।
“সত্যি বলতে আমি জানতামই না (ম্যাচের আগে) এটা আমার ২০০তম ম্যাচ। খুব বেশি কিছু যায়-আসে না। মাইলফলক নিয়ে আমার কখনোই খুব একটা ভাবনা নেই। ১৯৯ আর ২০০তম ম্যাচের মধ্যে পার্থক্যই বা কতটুকু! এটা তেমন কোনো ব্যাপার নয়।”
“আসল ব্যাপার হলো মাঠে কীভাবে নামছি এবং ক্রিকেট কতটা উপভোগ করছি। এটাই আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ২০০তম ম্যাচ এমনিতে ভালো অবশ্যই, এত লম্বা সময় খেলতে পারা… সর্বশক্তিমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা, তার সহায়তায় এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি। তবে যেমনটি বললাম, এই মাইলফলকে কিছু যায়-আসে না।”
ধোনির কাছে যেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেই মাঠের পারফরম্যান্সে অবশ্য হতাশা নিয়েই এ দিন মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাদেরকে। রাজস্থান রয়্যালসের কাছে তারা হেরে গেছেন ৩ রানে।
ধোনি যদিও শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করে যান রবীন্দ্র জাদেজাকে সঙ্গে নিয়ে। শেষ ৩ ওভারে চেন্নাইয়ের প্রয়োজন ছিল ৫৪ রান। অ্যাডাম জ্যাম্পার ওভারে ধোনির দুই ছক্কায় তখন খেলায় ফেরে উত্তেজনা। পরের ওভারে দুই ছক্কা ও এক চার আসে জাদেজার ব্যাট থেকে। শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ২১ রানের।
ওভারের প্রথম দুটি বলই ওয়াইড করেন সন্দিপ শর্মা। পরের বলে ইয়র্কার থেকে রান নিতে পারেননি ধোনি। কিন্তু এরপর টানা দুটি দুর্দান্ত ছক্কা মেরে দেন তিনি। ৩ বলে লাগে তখন আর ৭ রান। চতুর্থ বলে সিঙ্গেল নেন ধোনি। পঞ্চম বলে ইয়র্কারে সিঙ্গেল নেন জাদেজা। শেষ বলটিও ইয়র্কার করেন সন্দিপ। ধোনি পারেননি এক রানের বেশি নিতে।
রাজস্থানের অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসন ম্যাচ শেষে বললেন, ধোনি ক্রিজে ছিলেন বলেই তারা শেষ পর্যন্ত নিশ্চিন্ত হতে পারছিলেন না।
“ওই মানুষটি (ধোনি) যতক্ষন ক্রিজে আছে, কখনোই ম্যাচ শেষ নয়। তাকে সমীহ করতেই হবে এবং সবাই জানে তিনি কী করতে পারেন। এজন্যই সবাই ম্যাচে পুরোপুরি সম্পৃক্ত ছিল, কারণ সবাই জানত যে তিনি টিকে থাকলে শেষের আগে শেষ বলে কিছু নেই।”