জাতীয় দলের কোচিং স্টাফে গুরুত্বপূর্ণ পদে দেশের কোনো কোচের সুযোগ পাওয়ার পথ অন্তত আনুষ্ঠানিকভাবে অবশেষে তৈরি হলো। চান্দিকা হাথুরুসিংহের সহকারীর দায়িত্বে বিদেশি কোচদের সঙ্গে দেশের আগ্রহী কোচদেরও আবেদন করতে আহবান জানালেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান।
হাথুরুসিংহেকে নতুন মেয়াদে ফেরানোর ঘোষণা দেওয়ার দিন জানানো হয়, জাতীয় দলের জন্য একজন সহকারী কোচ নেওয়া হবে। প্রায় তিন সপ্তাহ পর বুধবার আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বিসিবি।
জাতীয় দলের কোচিং স্টাফে বিভিন্ন দায়িত্বপ্রাপ্য বেশ কজন থাকলেও সুর্নির্দিষ্ট করে সহকারী কোচ নেই অনেক দিন ধরেই। সবশেষ হাথুরুসিংহের সময়ই সহকারী কোচ ছিলেন রিচার্ড হ্যালসল। ইংলিশ এই কোচ দায়িত্ব ছাড়েন ২০১৮ সালের মার্চে।
দেশের কাউকে সহকারী হিসেবে দেখা গেছে আরও আগে। ডেভ হোয়াটমোর প্রধান কোচ থাকার সময় ২০০৫ সালে সহকারী কোচের দায়িত্ব পান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। পরে ২০০৭ সালে জেমি সিডন্স প্রধান কোচ হয়ে আসার পরও তিনি দায়িত্বে রয়ে যান। ২০০৯ সালে ছেড়ে দেওয়ার পর সিডন্সের সহকারী হিসেবে কাজ করেন খালেদ মাহমুদ।
পরে ২০১৩ সালে এক দফায় সহকারী কোচ নিয়োগের কথা বলা হয়েছিল বিসিবি থেকে। তখন আলোচনায় ছিল সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম ও আবারও খালেদ মাহমুদের নাম। তবে সেবার আর উদ্যোগ এগোয়নি।
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কোচের নাম আলোচনায় এলেও জাতীয় দলের কোচিং প্যানেল সাজানো হয় বিদেশিদের প্রাধান্য দিয়েই। বিসিবিতে বুধবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান বললেন, এবার সেই ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে চান তারা।
“আজকে আমরা সহকারী কোচের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছি। আমি আশা করছি দেশি-বিদেশি যারা আগ্রহী তারা আবেদন করবে। এখানে আরেকবার আমি এই কথাটা জোর দিয়ে বলছি, আমরা যখন এরকম বিজ্ঞাপন দেই, সাধারণত বিদেশিরা আবেদন করে। আমরা চাচ্ছি, দেশি যদি কেউ আগ্রহী থাকে, তারা যেন আবেদন করে।”
“অনেক সময় কথাবার্তা শুনলে মনে হয় অনেকে আগ্রহী। কিন্তু কখনও আমাদের কাছে অ্যাপ্রোচ করে না বা আবেদন করেনি। এই দূরত্বটা দূর করার জন্য আমরা ঠিক করেছি... বিজ্ঞাপন দিয়েছি আজকে এবং আপনাদের মাধ্যমে সবাইকে বলছি, দেশি-বিদেশি যারাই এই পদের জন্য আগ্রহী, তারা যেন আবেদন করে।”
জাতীয় দলের সহকারী কোচের পদে না হলেও, দেশি কোচদের মধ্য থেকে আবেদনকারীদের জন্য অন্য কোনো দায়িত্বে কাজের সুযোগের পথও খোলা রেখেছেন বিসিবি সভাপতি।
“এই (সহকারী কোচ) পদে হলে তো হলোই, যদি না হয়, তাহলে আমরা চেষ্টা করব অন্যান্য জায়গায় তাদের সুযোগ করে দিতে। যাতে ভবিষ্যতে তারা (জাতীয় দলে) আসতে পারে।”
ভারতের বিপক্ষে সবশেষ সিরিজে জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টরের দায়িত্ব থেকে বিশ্রাম নিয়েছিলেন খালেদ মাহমুদ। সামনের ইংল্যান্ড সিরিজেও তাকে দেখা যাবে না। বিসিবি প্রধান নিশ্চিত করে দিলেন, ঘরের মাঠে খেলা হওয়ায় টিম ডিরেক্টর হিসেবে আলাদা কাউকে দলের সঙ্গে রাখছেন না তারা।
“এখন পর্যন্ত আমরা এই ধরনের (টিম ডিরেক্টরের) কোনো পরিকল্পনা করিনি। তাকে (খালেদ মাহমুদ) বাদও দেওয়া হয়নি। টিম ডিরেক্টর হিসেবে (বিদেশ সফরে) যাচ্ছিল খালেদ মাহমুদ সুজন। এখন সে একটু বিশ্রামে আছে। আর ঘরের মাঠে সিরিজে থাকা বা না থাকা একই কথা।”
“সে (মাহমুদ) ক্রিকেট অপারেশনসের ভাইস-চেয়ারম্যান। এই কমিটির চেয়ারম্যান জালাল (ইউনুস) ভাই আছেন। তারা থাকতে আবার আলাদা কাউকে লাগবে কি না, সেটাও দেখার বিষয়। বিদেশ সফরে আমরা কাউকে পাঠাই। এসব সিরিজে কাউকে লাগবে না।”