সিরিজ হারের হতাশা আছে। হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর স্বস্তি আছে। আর আছে অভিযোগ কিংবা আক্ষেপ। তা টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়ে। সাকিব আল হাসান পরিষ্কার বলে দিলেন, টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কাছে দলের চাওয়া সেঞ্চুরি। ফিফটি করে থমকে যাওয়া মানে প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হওয়া।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের দুই ওপেনারই ছিলেন ব্যর্থ। লিটন কুমার দাসের জন্য তো সিরিজটি ছিল বিভীষিকা। প্রথম ম্যাচে ৭ রানে আউট হওয়ার পর শেষ দুই ম্যাচে তিনি রানই করতে পারেননি। অধিনায়ক তামিম ৩ ম্যাচ মিলিয়ে করতে পারেননি ৭০ রানও।
নাজমুল হোসেন শান্ত তিনে নেমে দুটি ফিফটি করেছেন। তবে দুবারই ফিফটির পরপরই আউট হয়ে গেছেন। শেষ ম্যাচে অবশ্য রান আউট হয়েছেন। সিরিজে তার তার স্ট্রাইক রেট ৭২.০৭। পাঁচে নেমে সাকিবের স্ট্রাইক রেট এই সিরিজে ৯২.৭৬।
এই তিন নম্বর পজিশনটিকেই ২০১৮ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন সাকিব। ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময় পাঁচ নম্বরে ব্যাট করলেও সেই সময়ের কোচ-অধিনায়ককে যুক্তি দিয়ে রাজি করিয়েই তিনি তিন নম্বর জায়গাটা পেয়েছিলেন এবং পারফরম্যান্স দিয়ে নিজের করে নিয়েছিলেন। তিনে ৩৬ ইনিংস ব্যাট করে তার গড় ৪৯.৬৪, অন্য যে কোনো পজিশনের চেয়ে যা ঢের ভালো। শীর্ষ তিনে ব্যাট করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটিং গড়ও এটিই। তিনে তার স্ট্রাইক রেট ৮৬.৮০।
গত মার্চেও দক্ষিণ আফ্রিকায় তিনে নেমে তার দুর্দান্ত এক ইনিংসে বাংলাদেশ পেয়েছিল দারুণ জয়। তবে সবশেষ ভারত সিরিজে দুই ম্যাচে তাকে দেখা যায় চারে নামতে, শেষটিতে তিনে। এবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে তিন ম্যাচেই তিনি খেলেন পাঁচে। কোনো ম্যাচ অপরপ্রান্তে ডানহাতি কোনো ব্যাটসম্যান থাকলে হয়তো তাকে নামানো হতো চারে।
চারে নেমে মুশফিকুর রহিম আগের দুই ম্যাচে ব্যর্থ হলেও শেষ ম্যাচে ফিফটি পেরিয়ে যান। তবে ৭০ করে তিনি যখন আউট হন, তখনও ইনিংসের ১৭ ওভারের বেশি বাকি।টপ অর্ডারে ব্যাটিংয়ের রসায়নটা সাকিব জানেন। জানেন তাদের কাছে দলের প্রত্যাশার কথাও। শেষ ম্যাচের পর সেটিই মনে করিয়ে দিলেন তিনি।
“যখন কেউ টপ অর্ডারে ব্যাট করছে, আমরা তাদের কাছে শতরান প্রত্যাশা করি, ফিফটি নয়। এই জায়গায় আমরা উন্নতি করতে পারি এবং আরও ভালো হয়ে উঠতে পারি।”
সাকিব নিজে এই সিরিজে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান স্কোরার। শেষ ম্যাচে তার ৭১ বলে ৭৫ রানের ইনিংস ও ৩৫ রানে ৪ উইকেট শিকারের সৌজন্যেই দারুণ জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারে বাংলাদেশ।
সিরিজ হেরে গেলেও শেষ ম্যাচের জয়ে দলের লড়িয়ে মানসিকতার প্রতিফলন দেখছেন সাকিব। কৃতিত্ব দিলেন তিনি বোলারদের।
“গত ৫-৭ বছরে আমরা দেশের মাঠে খুব ভালো খেলেছি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই সিরিজ হেরে গেছি। তবে এই ম্যাচ জয়ের জন্য কৃতিত্ব আমরা পেতেই পারি। দারুণ মানসিকতার পরিচয় দিয়েছি আমরা। খুব সহজেই আমরা ৩-০তে হেরে যেতে পারতাম। কিন্তু আমরা দুর্দান্ত মানসিকতার ছাপ রেখেছি ও শেষ পর্যন্ত লড়েছি। সৌভাগ্যবশত জিততে পেরেছি।”
“আমার মনে হয়, ২০-৩০ রানের ঘাটতি ছিল আমাদের। যে অবস্থা ছিল, আরও ২০-৩০ রান করতে পারতাম আমরা। তবে বোলাররা ঠিক করেছিলাম, আমাদের এগিয়ে আসতে হবে ও দলের জন্য নিজেদের মেলে ধরতে হবে। সব বোলার আজকে অবদান রাখতে পেরেছে।”