দলীয় একতার শক্তিতে পাকিস্তানের সঙ্গে ভালো করার আশায় সোহান

ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নিয়ে না ভেবে সবাইকে দলীয় পারফরম্যান্সে জোর দেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে, বললেন বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক সোহান।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Oct 2022, 02:21 PM
Updated : 5 Oct 2022, 02:21 PM

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে নিয়ম মেনে তিন দলের প্রতিনিধি ট্রফি নিয়ে পোজ দিলেন হাসিমুখে। ক্রাইস্টচার্চে ত্রিদেশীয় সিরিজের ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠান হয়ে গেল বুধবার। তবে এই মুহূর্তের যে বাস্তবতা, ট্রফির লড়াইয়ে থাকবেন কেবল কেন উইলিয়ামসন ও বাবর আজম। তিনজনের মধ্যে নুরুল হাসান সোহানের হাসি মিলিয়ে যাওয়ার কথা সবার আগে। সোহান যদিও আশায় বসতি গড়ছেন। দলীয় পারফরম্যান্সের তরী বেয়ে ছুটতে চান তিনি প্রাপ্তির ঠিকানায়। প্রথম প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের সঙ্গে ভালো কিছুর আশায় বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক।

আইসিসি টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে চার নম্বরে থেকে এই টুর্নামেন্ট শুরু করতে যাচ্ছে পাকিস্তান। নিউ জিল্যান্ড আছে পাঁচে। বাংলাদেশ সেখানে নয় নম্বরে। র‌্যাঙ্কিংয়ের এই ব্যবধান তবু ভদ্রস্থই বলা চলে। শক্তি-সামর্থ্য, ফর্ম ও এই সংস্করণের বাস্তবতায় বাংলাদেশ আসলে বাকি দুই দলের চেয়ে যোজন যোজন পিছিয়ে।

দলকে তবু আশায় ভর করে সামনে এগোতেই হয়। সোহানও সেই চেষ্টা করলেন। ফ্লাইট জটিলতায় অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এখনও যোগ দেননি দলের সঙ্গে। সহ-অধিনায়ক সোহানই আপাতত দলের নেতা। বিসিবির ভিডিও বার্তায় এই কিপার-ব্যাটসম্যান বললেন, শুক্রবার পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়াইয়ে ভালো কিছু করতে চান তারা।

“অবশ্যই পাকিস্তান অনেক ভালো দল। তবে আমরা যদি ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং, তিন দিক থেকে ভালো কিছু করতে পারি, তাহলে ভালো কিছুর সম্ভাবনা আছে।”

ভালো পারফরম্যান্সের জন্য সোহানের ভরসা আপাতত দলীয় পারফরম্যান্স। ব্যক্তিগত অর্জন, মাইলফলক বা জায়গা ধরে রাখার তাড়নাকে পাশে সরিয়ে দলের চাওয়া পূরণের মন্ত্র শোনানো হচ্ছে বলে জানালেন তিনি।

“সত্যি কথা বলতে, আমাদের দলের পরিবেশ ও আবহ খুবই ভালো। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো যে সবাইকে একটা বার্তা দেওয়া হচ্ছে, আমরা যেন ফলাফল নিয়ে না ভাবি, প্রক্রিয়ায় যেন থাকি। ফল আগে থেকে অনুমান করার সুযোগ নেই। তবে আমরা যদি সৎ থেকে কঠোর পরিশ্রম করতে থাকি… সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দল হিসেবে খেলা। ব্যাক্তিগত চিন্তা না করে যেন দল হিসেবে খেলতে পারি।”

“১১ জনই হয়তো পারফর্ম করবে না। কিন্তু যখন যার যে পরিস্থিতিতে যতটুকু পারফর্ম করা দরকার, দলের জন্য যা দরকার, সেটা যেন করতে পারি। আমাদের মনোযোগ সেখানেই। ব্যক্তিগত কিছুর চেয়ে দলীয় পারফরম্যান্স এখন গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য।”

দলীয় একতা গড়ে তোলার চেষ্টা অনুশীলনেও চলছে, জানালেন সোহান।

“একজন আরেকজনকে সাহায্য করেছ। সবাই চাচ্ছে যার যার জায়গা থেকে নিজেরটা করার পাশাপাশি আরেকজনের পাশে দাঁড়াতে। দলীয় একতার জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একটা প্রক্রিয়ার মধ্যেই এটা করার চেষ্টা করছি।”

নিউ জিল্যান্ডে প্রতিপক্ষের পাশাপাশি লড়াই করতে হবে প্রকৃতির সঙ্গেও। ক্রাইস্টচার্চে এখন প্রচণ্ড ঠাণ্ড। হীমশীতল বাতাসের সঙ্গে বরফও পড়ছে কখনও কখনও। তবে এর মধ্যেও লিঙ্কনে হাই পারফরম্যান্স সেন্টারে পুরোদমে অনুশীলন করতে পেরেছে দল। সোহান তাই প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি দেখছেন না।

“কন্ডিশন তো অবশ্যই এখানে ভিন্ন। একটু ঠাণ্ডা। তবে এখানে আমরা দুই দিন অনুশীলন করার সুযোগ পেয়েছি, কালকে আবার করব। সবাই মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে এবং সবাই আত্মবিশ্বাসী যে ম্যাচের আগে আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেব। এটা আমাদের জন্য বড় ব্যাপার হবে না। আমরা শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করব।”

“বৃষ্টি ও বরফ পড়ার পরও আমরা দুই দিন অনুশলন করেছি। এর আগে দুবাইয়ে দুটি ম্যাচ খেলে এসেছি। প্রস্তুতির দিক থেকে সবাই খুব ভালো করছে। এরকম আবহাওয়া থাকার পরও অনুশীলন করতে পারা দারুণ ব্যাপার। প্রস্তুতির দিক থেকে আমি মনে করি শতভাগ ঠিক আছে।”

ক্রাইস্টচার্চের কন্ডিশন এখন যেমন, তাতে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পার্থক্য আছে কিছুটা। তবে হ্যাগলি ওভালের উইকেটের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বেশির ভাগ উইকেটের অনেকটা মিল থাকার কথা। বিশেষ করে গতি ও বাউন্সে। বিশ্বকাপের ঠিক আগে এমন টুর্নামেন্ট খেলতে পারাটাকে বড় সৌভাগ্যের ব্যাপার মনে করছেন বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক সোহান।

“আমাদের এশিয়ার কন্ডিশন থেকে নিউ জিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশন পুরো আলাদা। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে এটা অনেক বড় সুযোগ যে এই কন্ডিশনে কয়েকটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছি। পাকিস্তান ও নিউ জিল্যান্ডের মতো দলের সঙ্গে খেলার সুযোগ পাচ্ছি। অবশ্যই বিশ্বকাপে এটা আমাদের সহায়তা করবে এবং ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে বিশ্বকাপে যেতে পারলে ভালো কিছু আশা করতে পারি।”