‘সবকিছু সবসময় ব্যাখ্যা করা যায় না’, দল থেকে জোর করে খেলানো প্রসঙ্গে মাশরাফি

মাঠে নামার কারণ বিস্তারিত ব্যাখ্যা না করলেও সিলেট স্ট্রাইকার্স অধিনায়ক বললেন, চোট নিয়ে খেলা আদর্শ মনে করছেন না তিনি নিজেও।

চোটাঘাতকে সঙ্গী করে মাশরাফি বিন মুর্তজা খেলে যাচ্ছেন অনেক বছর ধরে। তবে এবারের বিপিএলে তার যা অবস্থা, তাতে বেশ প্রশ্নও উঠে যাচ্ছে। মাশরাফি নিজেও অনুভব করছেন, এবার তার না খেললেই ভালো হতো। তার পরও মাঠে নামার কারণ নিয়ে কিছুটা ইঙ্গিত দিলেও পুরোপুরি তা খোলাসা করলেন না সিলেট স্ট্রাইকার্স অধিনায়ক।

জাতীয় দলের হয়ে মাশরাফি সবশেষ খেলেছেন প্রায় চার বছর আগে। আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও অবসর না নিলেও তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অধ্যায় শেষই। এখন তার খেলোয়াড় সত্ত্বা টিকে আছে কেবল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ও বিপিএলে।

এই দুই আসরেও মূলত চোট-টোট সামলেই খেলেন তিনি। মোটামুটি পারফর্মও করেছেন। গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ১৫ ম্যাচে ১৮ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। ৫ উইকেট শিকার করেছিলেন এক ম্যাচে। গত বিপিএলে উইকেট নিয়েছিলেন ১৪ মাচে ১২টি।

ওই বিপিএলেও শুরুটা ভালো করেছিলেন তিনি। তবে চোটের থাবায় টুর্নামেন্টের পরের দিকে আর বোলিংই করতে পারেননি সেভাবে।

এবার টুর্নামেন্ট শুরুর বেশ আগেই তার হাঁটুর সমস্যা মাথাচাড়া দেয়। চিকিৎসক অস্ত্রোপচারের পরামর্শও দেন। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত মাশরাফি অস্ত্রোপচার করাননি তখনই। বিপিএলের আগে এবার একদিন অনুশীলনও তিনি করতে পারেননি।

তার পরও প্রথম ম্যাচে বোলিংয়ের শুরুটা ভালো করেছিলেন তিনি। প্রথম বলেই উইকেটের দেখা পান। প্রথম ২ ওভারে রান দেন ৯। কিন্তু শেষ দিকে তার বলে দুই ছক্কা ও এক চার মেরেই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে জেতান নাজিবউল্লাহ জাদরান। দ্বিতীয় ম্যাচে মঙ্গলবার তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ রানে রান আউট হন তিনি আলসে ভঙ্গিতে। পরে এই ম্যাচে বোলিং করেননি তিনি।

শুধু পারফরম্যান্স নয়, মাঠে তার হাঁটাচলা, তার বিচরণ, সবকিছুতেই ফুটে উঠছে, খেলার মতো যথেষ্ট ফিট তিনি নন। রংপুর রাইডার্সের কাছে সিলেটের পরাজয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে তার দিকে প্রশ্ন ছুটে গেল, শুধু কি ভালোবাসার জায়গা থেকেই তিনি খেলছেন?

উত্তরে মাশরাফি যতটুকু বললেন, তার চেয়ে বেশি অপ্রকাশ্যই রাখলেন।

“না, সেটা অবশ্যই। তবে সত্যি বলতে, আর্দশ পরিস্থিতিতে… না হলে (না খেললে) ভালো হয়। তবে সবকিছু বা অনেককিছু ব্যাখ্যা করা যায় না (প্রকাশ্যে)। আইডিয়ালি হয়তোবা আরেকটু… এমনিতে আমার সবকিছু ঠিক আছে, স্রেফ হাঁটুর সমস্যাটা হচ্ছে, যেটা খুব ছোট, কিন্তু ভোগাচ্ছে।”

মোহাম্মদ আশরাফুলের মন্তব্য ধরে এরপর সরাসরিই প্রশ্ন করা হলো তাকে। এই ম্যাচ শুরুর আগে টি-স্পোর্টসে আলাপচারিতায় বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক বলেন, মাশরাফির খেলার ইচ্ছে না থাকলেও দল থেকে অনেকটা জোর করেই তাকে খেলানো হচ্ছে। মাশরাফির জায়গায় রেজাউর রহমান রাজাকে মাঠে নামালে দল উপকৃত হবে বলেও ধারণা আশরাফুলের।

এবারও মাশরাফির কথায় থাকল কেবল ইঙ্গিত, অনেকটুকুই তিনি রেখে দিলেন নিজের ভেতরে।

“এটা তো বললাম, সব জিনিস সবসময় ব্যাখ্যা করা যায় না। অবশ্যই আমি যেটা মনে করেছি যে, আইডিয়াল সিচুয়েশন না।”

“আর কে খেললে কে ভালো হতো, সেটা পরের বিষয়, সেটা দলের বিষয়। দেখা গেল, ওকে (রেজাউর) না খেলিয়ে আরেকজনকে খেলাতে পারত। সেটা ভিন্ন জিনিস। কে খেললে কে ভালো হতো, ওটা তো দল কারও সাথে আলোচনায় বসবে না বা করবে না। তবে যেটা আপনি বলছেন, আইডিয়াল সিচুয়েশনে অবশ্যই ওইটাই হওয়া উচিত।”