কত ফাঁদই না পাতা হলো। কিন্তু একটাতেও পা দিলেন না রাহুল দ্রাবিড়। শব্দের ব্যবহারে সচেতন থাকলেন পুরোটা সময় জুড়ে। সে কারণেই হয়তো ভারত ও পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের তুলনা টানতে গিয়ে একটি শব্দের বিকল্প খুঁজে পেলেন না তিনি। শেষ পর্যন্ত কাজ চালালেন অন্য একটি শব্দ দিয়ে।
দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে রোববার এশিয়া কাপে সুপার ফোরের ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে ভারত। আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে দুই দলের পেস বোলিংয়ের তুলনা টানতে গিয়ে দ্রাবিড় টেনে আনলেন প্রথম ম্যাচের কথাও।
“হ্যাঁ, ঠিক আছে, পাকিস্তানের পেসাররা ভালো বোলিং করেছিল। আমি অবশ্যই এটা মানি, ওদের বোলিং আক্রমণ ভালো। আর ওরা ভালো করেছিল। আমরাও ওদের ১৪৭ রানে থামানোর জন্য খুব ভালো বোলিং করেছিলাম।”
“কখনও কখনও দেখা যায়, কেউ ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার বেগে বল করছে, কেউ ১৪৭ কিলোমিটার বেগে। তবে দিন শেষে বোলিং অ্যানালাইসিসই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ১৩৫, ১৪৫ কিংবা ১২৫ কিলোমিটার বেগে বল করছে কি-না, সুইং করছে বা করছে না, স্কিলের মাপকাঠি বিবেচনা করা হয় ফলের ভিত্তিতে। আমাদের পেসারদের বোলিং অ্যানালাইসিসও খুব ভালো ছিল।”
আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়েছিল ভারত। প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট নিয়েছিল তাদের চার পেসার। ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন ভুবনেশ্বর কুমার। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৩ উইকেট নেন হার্দিক পান্ডিয়া। বাকি তিন উইকেট ভাগ করেন নেন আর্শদিপ সিং ও আভেশ খান।
ভারতের কেবল দুটি উইকেট নিতে পারেন পাকিস্তানের তিন পেসার। দুটি উইকেটই নেন ওই ম্যাচে টি-টোয়েন্টি অভিষিক্ত নাসিম শাহ। উইকেটশূন্য থাকেন শাহনওয়াজ দাহানি ও হারিস রউফ।
দুই দলের পেস আক্রমণের তুলনা টানতে গিয়ে যে শব্দটা মাথায় এসেছিল, সেটা সংবাদ সম্মেলনে ব্যবহার করতে চাননি দ্রাবিড়। আবার যথাযথ বিকল্প শব্দ মাথায় থাকলেও মুখে আসছিল না। পরিস্থিতি জন্ম দেয় হাস্যরসের, তবে দারুণভাবে সামাল দেন ভারতের সাবেক এই ব্যাটসম্যান।
“আমি ওদের বোলিংকে সম্মান জানাই। তবে আমি আত্মবিশ্বাসী, আমাদেরও খুব ভালো একটা বোলিং আক্রমণ আছে। যেটা ফল এনে দিচ্ছে। হয়তো আমাদের বোলিং আক্রমণ… (কুইকার?) না, আমি এই শব্দটা ব্যবহার করতে চাই না, আমি এই শব্দটা ব্যবহার করতে পারব না।”
“আমি যে শব্দটা বলতে চাই সেটা আমার মাথায় আছে, কিন্তু এখানে ব্যবহার করতে পারছি না। …যাই হোক, যে ব্যাপারটা আমি বোঝাতে চাচ্ছি সেটা হচ্ছে, (সমৃদ্ধ?) না, না, সমৃদ্ধ নয়, চার অক্ষরের একটা শব্দ, যেটা ‘এস’ দিয়ে শুরু…ঠিক আছে, ঠিক আছে (হাসি)।”
অবশেষে একজন সাংবাদিকের দেওয়া একটি শব্দ পছন্দ হয় দ্রাবিড়ের, শেষ করেন তার উত্তর।
“আমাদের বোলিং ‘গ্ল্যামারাস’ দেখায় না, কিন্তু ফল এনে দেওয়ার দিক থেকে, আমাদের কিছু পেসার আছে তারা সেটা এনে দিতে পারে।”
পরে আরেক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের শক্তির প্রসঙ্গ উঠল।
“একটু আগে ভাই যে প্রশ্নটা করলেন, পাকিস্তানের পেস আক্রমণ শক্তিশালী, এতেই বোঝা যায় আমাদের কাজ কতটা কঠিন। পাকিস্তানের বিপক্ষে জিততে হলে আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে।”
আলাদাভাবে আসে নাসিম শাহর প্রসঙ্গ। অভিষেকে দারুণ বোলিং করা তরুণ এই পেসারের চ্যালেঞ্জ সামলাতে কি প্রস্তুত ভারত?
“নাসিম খুব ভালো বোলার। কোনো সন্দেহ নেই আগের ম্যাচে সে খুব ভালো বোলিং করেছে। গত ম্যাচেও ওর বিপক্ষে আমাদের ব্যাটসম্যানরা রান করেছে। আমরা আত্মবিশ্বাসী, সামনের ম্যাচেও আমরা নাসিমকে ভালোভাবে সামলাতে পারব।”