বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ
পরিশ্রমের ফল মিলতে শুরু করেছে, বললেন ওয়েস্ট ইন্ডিজে ম্যান অব দা সিরিজ হওয়া এই পেসার।
Published : 04 Dec 2024, 08:55 AM
ম্যান অব দা সিরিজের স্বীকৃতি দেওয়া হলো যৌথভাবে দুজনকে। তবে একটি ট্রফি তো আর দুজনকে ভাগ করে দেওয়া যায় না। জেডেন সিলস সৌজন্য দেখিয়ে তাসকিন আহমেদকে বললেন ট্রফি রেখে দিতে। বাংলাদেশের অভিজ্ঞ পেসার তাতে বেজায় খুশি। মুখ থেকে হাসি সরছিলই না তার। ট্রফিকে নিজে বারবার দেখছিলেন, উঁচিয়ে ধরে দেখাচ্ছিলেন। তার চোখ-মুখ, শরীরী ভাষায় ছড়িয়ে পড়ছিল উচ্ছ্বাস।
বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে আগে দুই দফায় সিরিজ-সেরা হয়েছেন তিনি। ওয়ানডেতেও হয়েছেন একবার। টেস্টেই কেবল শূন্যতা ছিল। এবার সেটিও হয়ে গেল। তার এত উল্লাসের কারণ বোধগম্যই। টেস্ট বলে বাড়তি আবেগের ছোঁয়াও আছে এখানে। এই বছরের শুরুতে যে তিনি সাময়িক বিদায় নিয়েছিলেন টেস্ট ক্রিকেট থেকে!
বিসিবির তিন সংস্করণের চুক্তিতে থাকলেও গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে তাসকিন বোর্ডকে জানান, আপাতত দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে চান তিনি। পরে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, কাঁধের চোট গুরুতর হয়ে যাতে অস্ত্রোপচারের দিকে ঠেলে না দেয়, এজন্যই এমন সিদ্ধান্ত তার।
তবে তার সেই বিরতি স্থায়ী হয়নি ছয় মাসও। তার কাঁধের অবস্থার উন্নতি হয়। বাংলাদেশের ব্যস্ত টেস্ট মৌসুমের আগে তার মনোভাবও বদলে যায়। আবার টেস্ট ক্রিকেটে ফেরেন তিনি অগাস্টে পাকিস্তান সফর দিয়ে।
পাকিস্তান ও ভারত সফরে একটি করে টেস্টে খেলেন তিনি। দুই ম্যাচেই নেন চারটি করে উইকেট। পরে দেশের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে আবার তিনি ছিলেন বাইরে। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে খেললেন দুটি টেস্টই।
প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে তো বিধ্বংসী বোলিংয়ে ছয় উইকেট শিকার করলেন। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার পেলেন ইনিংসে পাঁচ উইকেটের স্বাদ। ম্যাচে পান আট উইকেট। জ্যামাইকায় এত উইকেট পাননি। তবে তিনটি উইকেট নিয়ে দলের দারুণ জয়ে ভূমিকা রাখেন ঠিকই। সঙ্গে প্রাপ্তি সিরিজ সেরার পুরস্কার।
পিছিয়ে পড়েও বাংলাদেশের সিরিজ ড্র করতে পারা এবং সেখানে সিরিজ-সেরা হয়ে তাসকিনের খুশি ছুঁতে চাইল আকাশ।
“এটা অনেক বড় অর্জন। আমরা টেস্ট সিরিজ ড্র করলাম। ওদের কন্ডিশনে অনেক বড় বড় দল ভোগান্তিতে পড়ে। আমরা একটু কঠিন সময় পার করছিলাম। পাকিস্তানে সিরিজ জয়ের পর কয়েকটি সিরিজ হেরে যাওয়াতে আমরা মানসিকভাবে দমে গিয়েছিলাম। তবে শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি।”
“দুটি ম্যাচেই আমি আমার সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করেছি এবং আল্লাহতায়ালা আমাকে এই পুরস্কার দিয়েছেন ম্যান অব দা সিরিজ হিসেবে।”
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরুর আগে থেকেই চোট তার নিত্য সঙ্গী। এখনও তিনি বেশ চোটপ্রবণ। অনেকবার পুনবার্সনের কষ্টদায়ক ও ক্লান্তিকর প্রক্রিয়ায় তাকে যেতে হয়েছে। সবশেষ এই কাঁধের চোট কাটিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে ফিরতেও অনেক ঘাম ঝরাতে হয়েছে তাকে।
সেই বিন্দু বিন্দু ঘাম এখন সাফল্যের ফুল হয়ে উঠছে। তাসকিন আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বললেন, সামনে আরও দারুণ অনেক কিছু পাওয়া যাবে তার কাছ থেকে।
“আশা করি, মেনি মোর টু কাম…। কাঁধের সমস্যা কাটিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে ফেরার অনেক চেষ্টা করছিলাম। এখন আগের চেয়ে ভালো আছে (অবস্থা)। আশা করছি এমন আরও অর্জন হবে সামনে।”
“আমি খুবই খুশি। যদিও কাজটা সহজ ছিল না। কাঁধের অবস্থা বাজে ছিল। স্রষ্টার কৃপায় এখন টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে আসছি। অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। সেটি এখন ফলপ্রসূ হতে শুরু করেছে। আশা করি, মেনি মোর টু কাম।”