রেকর্ড লিড পেয়েও পাকিস্তানকে ফলোঅন করাল না অস্ট্রেলিয়া

ব্যাটসম্যানদের পর বল হাতে নিজেদের মেলে ধরেন সফরকারী বোলাররা। ফিল্ডিংও হয় দুর্দান্ত। তাতে পাকিস্তান গুঁড়িয়ে যায় দেড়শর আগেই। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া পায় রেকর্ড গড়া লিড। তবে প্রতিপক্ষকে ফলোঅন না করিয়ে আবারও ব্যাটিংয়ে নামে প্যাট কামিন্সের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2022, 04:07 PM
Updated : 14 March 2022, 04:07 PM

করাচি টেস্টের তৃতীয় দিন ৯ উইকেটে ৫৫৬ রান নিয়ে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। দুর্দান্ত বোলিং-ফিল্ডিংয়ে প্রতিপক্ষকে স্রেফ ১৪৮ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৪০৮ রানের লিড পায় তারা। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে যেকোনো দলের যা সর্বোচ্চ রানের লিড।

পরে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ডেভিড ওয়ার্নারকে হারিয়ে ৮১ রান তুলে সোমবার দিন শেষ করে অস্ট্রেলিয়া। স্বাগতিকদের চেয়ে তারা এগিয়ে ৪৮৯ রানে।

ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে ৩৭ রানে খেলছেন মার্নাস লাবুশেন। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান উসমান খাওয়াজা অপরাজিত ৩৫ রানে।

উইকেট এখনও ব্যাটিংয়ের জন্য ভয়ঙ্কর কিছু নয়। তবে শেষ দুই দিনে আরও ভাঙার সম্ভাবনাই প্রবল। সেই চিন্তা মাথায় রেখে, সঙ্গে বোলারদের বিশ্রাম দেওয়ার পরিকল্পনায় হয়তো আবারও ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

৮ উইকেটে ৫০৫ রান নিয়ে দিন শুরু করা অস্ট্রেলিয়া ৯ ওভার ব্যাটিং করে ইনিংস ঘোষণা করে দেয়। এই সময়ে মিচেল স্টার্ককে হারিয়ে তারা তোলে ৫১ রান।

ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুত আবদুল্লাহ শফিককে হারায় পাকিস্তান। অভিষিক্ত মিচেল সোয়াপসনের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে ফেরেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান। গত ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরি করা ইমাম-উল-হক ফেরেন ন্যাথান লায়নকে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায়।

আজহার আলিকে টিকতে দেননি স্টার্ক। দ্বিতীয় স্লিপে অসাধারণ এক ক্যাচ নিয়ে গত ম্যাচের আরেক সেঞ্চুরিয়ানকে ফেরান ক্যামেরন গ্রিন। দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে এলবিডব্লিউ করে ফাওয়াদ আলমকে গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ দেন স্টার্ক।

৬০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা পাকিস্তানকে টানতে পারেননি বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, ফাহিম আশরাফরা। পাকিস্তান অধিনায়ককে ফিরিয়ে টেস্টে নিজের প্রথম উইকেট নেন লেগ স্পিনার সোয়েপসন।

শেষ দিকে নোমান আলি ও শাহীন শাহ আফ্রিদির কিছু রানে দেড়শর কাছাকাছি যায় পাকিস্তান। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন বাবর। একটি পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটিও পায়নি স্বাগতিকরা।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন স্টার্ক। সোয়েপসনের প্রাপ্তি দুটি।

রেকর্ড রানে এগিয়ে থেকে দিনের শেষ বেলায় আবার ব্যাটিংয়ে নামে অস্ট্রেলিয়া। চতুর্থ ওভারেই তারা হারাতে পারত ওয়ার্নারকে। কিন্তু হাসান আলির বলে অল্পের জন্য বেঁচে যান অস্ট্রেলিয়া ওপেনার।

হাসানের পরের ওভারেই অবশ্য ফিরে যান ওয়ার্নার। গালিতে চমৎকার ক্যাচ নেন ফাওয়াদ। অস্ট্রেলিয়ার আরেকটি উইকেট নিতে পারত পাকিস্তান। কিন্তু সাজিদ খানের বলে উইকেটের পেছনে খাওয়াজার ক্যাচ ছাড়েন রিজওয়ান।

শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় উইকেটে ৬১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন শেষ করে অস্ট্রেলিয়া।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ১৮৯ ওভারে ৫৫৬/৯ ডিক্লে. (আগের দিন ৫০৫/৮) (স্টার্ক ২৮, কামিন্স ৩৪*, সোয়েপসন ১৫*; আফ্রিদি ৩২-৮-৯৫-১, হাসান ২৫-৭-৭১-১, ফাহিম ২১-৪-৫৫-২, সাজিদ ৫৭-১০-১৬৭-২, নুমান ৪৮-৬-১৩৪-১, বাবর ৪-০-৭-১, আজহার ২-০-১০-০)

পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৫৩ ওভারে ১৪৮ (শফিক ১৩, ইমাম ২০, আজহার ১৪, বাবর ৩৬, ফাওয়াদ ০, রিজওয়ান ৬, ফাহিম ৪, সাজিদ ৫, হাসান ০, নুমান ২০*, আফ্রিদি ১৯; স্টার্ক ১৩-৫-২৯-৩, কামিন্স ১৯-২-৩৯-১, লায়ন ৯-৫-১৩-১, সোয়েপসন ৯-১-৩২-২, গ্রিন ৮-১-২৩-১, লাবুশেন ১-০-৪-০)

অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ১৭ ওভারে ৮১/১ (খাওয়াজা ৩৫*, ওয়ার্নার ৭, লাবুশেন ৩৭*; আফ্রিদি ৪-০-১৪-০, হাসান ৪-০-১৪-১, সাজিদ ৫-০-৩১-০, ফাহিম ৩-০-১৩-০, নুমান ১-০-৭-০)