মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথম জয়ের স্বপ্ন দিয়ে হ্যামিল্টনে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচ শুরু সোমবার বাংলাদেশ সময় ভোর চারটায়।
বিশ্বকাপে সাত প্রতিপক্ষের মধ্যে শক্তি-সামর্থ্যে বাংলাদেশ কেবল পাকিস্তানেরই কাছাকাছি। মুখোমুখি লড়াইয়ের ফলাফলেও সেটিরই প্রতিফলন। ১১ ম্যাচে পাকিস্তানের জয় ছয়টি, বাংলাদেশের পাঁচটি।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি জয় এই দলের বিপক্ষে। ওই পাঁচ জয়ের তিনটিই এসেছে সবশেষ চার ম্যাচে।
সবশেষ দুই লড়াইয়েই পাকিস্তানকে হারিয়েছে বাংলাদেশ, দুটিই দেশের বাইরে। একটি লাহোরে ২০১৯ সালে, আরেকটি গত নভেম্বরে জিম্বাবুয়েতে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে।
এই দুটি ম্যাচেই অবশ্য লড়াই হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি। একটিতে এক বল বাকি রেখে এক উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ, আরেকটিতে জয় দুই বল বাকি রেখে তিন উইকেটে।
তবে জয় মানেই তো বাড়তি আত্মবিশ্বাস। বিশ্বমঞ্চে প্রিয় প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াইয়ের আগে রোববার হ্যামিল্টনে সংবাদ সম্মেলনে সেই বিশ্বাসের প্রতিফলন পড়ল বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানার কণ্ঠে।
“সত্যি বলতে আমরা ওদেরকে খুব ভালোভাবে চিনি। ওদের সঙ্গে অনেক খেলেছি আমরা। খুব ভালো ধারণা আছে ওদের নিয়ে। আমি মনে করি, বিশ্বকাপে আমাদের প্রথম জয় পাওয়ার খুব ভালো সুযোগ আছে।”
বিশ্বকাপের পয়েন্ট তালিকায় এখন এই দুই দল আছে তলানিতে। দুই ম্যাচে কোনো জয় নেই বাংলাদেশের, তিন ম্যাচে পাকিস্তানের।
তবে হেরে যাওয়া দুই ম্যাচে লড়াইয়ের ছাপ ঠিকই রাখতে পেরেছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে দারুণ বোলিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২০৭ রানে আটকে রেখে রান তাড়ায় দারুণ শুরুর পরও শেষ পর্যন্ত ১৭৫ রানে আটকে যেতে হয়েছে। পরের ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ঝড়ো শুরুর পর পথ হারিয়ে খুব বড় হয়নি স্কোর, হারতে হয়েছে ৯ উইকেটে।
ওই দুই ম্যাচের ইতিবাচক দিকগুলোই একসঙ্গে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে মেলে ধরতে চান নিগার।
“গত দুই ম্যাচে মেয়েরা যেভাবে খেলেছে, তা দুর্দান্ত। হয়তো ফল আমাদের পক্ষে আসেনি। তবে আমি মনে করি, গত দুই ম্যাচে অনেক উন্নতি হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বোলাররা যেমন করেছে এবং নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটারদের পারফরম্যান্স দারুণ ছিল। যদি আমাদের ব্যাটিং ও বোলিং পরিকল্পনার বাস্তবায়ন একসঙ্গে করতে পারি, তাহলে দারুণ ম্যাচ হবে।”
প্রথম দুই ম্যাচ বাংলাদেশ খেলেছে ডানেডিনে। এর আগে প্রস্তুতি ক্যাম্প করেছে নেলসনে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের ভেন্যু হ্যামিল্টনে এখনও না খেললেও অন্য ম্যাচগুলি থেকে কিছুটা ধারণা পেয়েছেন নিগার।
এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে ভালো ব্যাটিং উইকেট দেখা গেছে এই মাঠেই। এখানে অস্ট্রেলিয়া তুলেছে ৩১০ রান, ইংল্যান্ড রান তাড়ায় গিয়েছে ২৯৮ পর্যন্ত। ভারতের বিপক্ষে নিউ জিল্যান্ড জিতেছে ২৬০ রান করে। সবশেষ ম্যাচে শনিবার স্মৃতি মান্ধানা ও হারমানপ্রিত কৌরের সেঞ্চুরিতে ভারত গড়ে ৩১৭ রানের পাহাড়। রান তাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ একশ ছাড়ায় ১২ ওভারেই!
বাংলাদেশ অধিনায়কের ধারণা, তাদের ম্যাচেও উইকেট একইরকম থাকবে।
“আমরা নেলসনে ও ডানেডিনে খেলেছি। আমার ধারণা, উইকেট একইরকম হবে এখানে। কয়েকটি ম্যাচ দেখেছিও এখানে। উইকেট ভালো হবে বলেই মনে করি।”
তিন দিনে দুই ম্যাচ খেলার পর ছয় দিন বিরতি পেয়েছে বাংলাদেশ। এই সময়টা দল দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছেন বলেই জানালেন নিগার।
“আমাদের ভালো অনুশীলন সেশন হয়েছে এখানে। খুব ভালো বিশ্রামও পেয়েছি আমরা। পরের ম্যাচের জন্য আমরা প্রস্তুত।”