আইপিএল নিলামে অবিক্রিত মর্গ্যান-স্মিথ-রায়না

গত আইপিএলে তার নেতৃত্বে কলকাতা নাইট রাইডার্স ফাইনালে খেললেও আসর জুড়ে নিষ্প্রভ ছিলেন ওয়েন মর্গ‍্যান। বাজে সেই পারফরম‍্যান্সের প্রভাবই হয়তো পড়ল এবারের মেগা নিলামে। বাঁহাতি এই ইংলিশ ব‍্যাটসম‍্যানকে দলে টানল না কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিই।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2022, 05:35 PM
Updated : 13 Feb 2022, 05:35 PM

শুধু তিনিই নন, ২০২২ সালের আইপিএল নিলামে দল পাননি আরও অনেক তারকা। স্টিভেন স্মিথ, মুজিব-উর-রহমানদের সঙ্গে এই তালিকায় আছেন সাকিব আল হাসান, সুরেশ রায়নার মতো ক্রিকেটাররা।

মর্গ্যানকে ২০২০ আসরের আগে নিলামে সোয়া পাঁচ কোটি রুপিতে দল নিয়েছিল কলকাতা। সেবার ভালোই ছিল তার পারফরম্যান্স। ১৪ ম্যাচে ১৩৮.৪১ স্ট্রাইক রেটে করেন ৪১৮ রান। কিন্তু গত আসরে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ১৭ ম্যাচ খেলে রান কেবল ১৩৩, ফিফটি নেই একটিও, স্ট্রাইক রেটও ছিল একশর কম। দেড় কোটি রুপি ভিত্তিমূল্যের এই ক্রিকেটারকে এবার কিনতে কেউ আগ্রহই দেখায়নি।

স্মিথকে অবশ্য গত নিলামেই দলে নিতে খুব একটা আগ্রহী ছিল না ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। ২ কোটি রুপি ভিত্তিমূল্যের ক্যাটাগরিতে থাকা অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানকে ২০ লাখ বাড়িয়ে দলে নেয় দিল্লি ক্যাপিটালস। সেবার ব্যাট হাতে পারফরম্যান্সও খুব একটা ভালো ছিল না তার। ৮ ম্যাচে ১১২.৫৯ স্ট্রাইক রেটে রান করেন ১৫২।

এবারও ২ কোটির ক্যাটাগরিতে ছিলেন স্মিথ। কিন্তু ব্যাঙ্গালুরুতে শনি ও রোববার হওয়া নিলামে তিনি রয়ে যান অবিক্রিত।

২ কোটি রুপি ভিত্তিমূল্যের ক্যাটাগরিতে থাকা সাকিব প্রথম দিন দল পাননি। পরে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের আগ্রহের তালিকায় থাকায় আবারও উঠানো হয় তার নাম। কিন্তু দ্বিতীয়বারেও বাংলাদেশ অলরাউন্ডারের জন্য বিড করেনি কোনো দল।

২০১০ আসরের পর তাই প্রথমবার আইপিএলের নিলাম থেকে হতাশ হতে হলো সাকিবকে। এখন তার খেলার সুযোগ আছে কেবল চোট বা অন্য কোনো কারণে কেউ অনুপস্থিত থাকলে সেই ক্রিকেটারের বদলি হিসেবে। বাংলাদেশের লিটন কুমার দাস, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামের নামই ওঠেনি নিলামে।

আইপিএলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় চতুর্থ স্থানে আছেন রায়না। ২০৫ ম্যাচ খেলে ১৩৬.৭৬ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৫ হাজার ৫২৮ রান। অথচ এবারের নিলামে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে দলে ভেড়াল না কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিই।

গত আসর অবশ্য তেমন ভালো ছিল না রায়নার জন্য। ৩৫ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার সেবার ১২ ম্যাচে রান করেছিলেন কেবল ১৬০।

আইসিসি টি-টোয়েন্টি বোলারদের র‍্যাঙ্কিংয়ে রিস্ট স্পিনারদের জয়জয়কার। প্রথম পাঁচটি স্থানই তাদের। শীর্ষে শ্রীলঙ্কার ভানিন্দু হাসারাঙ্গা, এরপর যথাক্রমে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকান তাবরাইজ শামসি, ইংল্যান্ডের আদিল রশিদ, অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম জ‍্যাম্পা ও আফগানিস্তানের রশিদ খান।

কিন্তু তাদের মধ্যে নিলাম থেকে দল পেয়েছেন কেবল হাসারাঙ্গা। আর রশিদ খানকে নিলামের আগেই নিয়েছিল নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি গুজরাট টাইটান্স।

অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক ও টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ের ছয় নম্বর ব্যাটসম্যান অ্যারন ফিঞ্চকে এবারও কেউ দলে ডাকেনি। গত নিলামেও দল পাননি তিনি। নিউ জিল্যান্ডের বিধ্বংসী ওপেনার মার্টিন গাপটিলকে দলে নিতে আগ্রহ দেখায়নি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি। এই নিয়ে টানা তিনবার আইপিএল নিলামে উপেক্ষিত হলেন তিনি।

টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যানদের র‍্যাঙ্কিংয়ে লম্বা সময় ধরে শীর্ষে থাকা দাভিদ মালানও পাননি কোনো দল। গত নিলামে তাকে ভিত্তিমূল্য দেড় কোটি রুপিতে দলে নিয়েছিল পাঞ্জাব কিংস। একই ক্যাটাগরিতে থাকলেও ইংলিশ ব্যাটসম্যানকে এবার কেউই দলে ডাকেনি।

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে বেশ চাহিদা মুজিবের। বিগ ব্যাশের গত আসরেও খেলেছেন তিনি। এখন খেলছেন বিপিএলে, ফরচুন বরিশালের হয়ে। প্রতিনিধিত্ব করেছেন আইপিএলেও। কিন্তু আফগানিস্তানের এই স্পিনারের জন্য এবার মেগা নিলামে আইপিএলের কোনো দলই আগ্রহ দেখায়নি।

গত বিগ ব্যাশে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দেন বেন ম্যাকডারমট। আসরে দুই সেঞ্চুরি ও ১৫৩.৮৬ স্ট্রাইক রেটে রান করেন সর্বোচ্চ ৫৭৭। টুর্নামেন্টে সেরার পুরস্কার জেতা বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানকে টি-টোয়েন্টি দলেও ফেরায় অস্ট্রেলিয়া।

কিন্তু আইপিএল নিলামে দেখা গেল না এসবের কোনো প্রভাব। তাকে দলে নিতে কোনো দলই আগ্রহ দেখাল না।

ভারতীয়দের মধ্যে দল পাননি ইশান্ত শর্মা, চেতেশ্বর পুজারা, অমিত মিশ্র, পিযুষ চাওলা, শচিন বেবি, সন্দিপ ওয়ারিয়রসহ আরও অনেকে।