জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম স্তরে বিনা উইকেটে ৮৬ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে ঢাকা অলআউট হয় ২৩১ রানে। ১৮৮ রানের লিড পাওয়া খুলনা ফলো অন করায় প্রতিপক্ষকে। দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ঢাকার সংগ্রহ ১ উইকেটে ৪৬ রান। এখনও ১৪২ রানে পিছিয়ে আছে তারা।
ঢাকার হয়ে ফিফটি করেন অধিনায়ক সাইফ হাসান। তবে ইনিংস টেনে নিতে পারেননি তিনি। আউট হন ১৪০ বলে ৫২ করে।
খুলনার লেগ স্পিনার রায়হান ৯৬ রানে নেন ৬ উইকেট। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে এই প্রথম ৫ উইকেট পেলেন ৩৬ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। ৩৫ রানে ৩ উইকেট ছিল তার আগের সেরা বোলিং।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে মঙ্গলবার উইকেটে স্পিনারদের জন্য ছিল সহায়তা। দিনের শুরুতেই ঢাকাকে জোড়া ধাক্কা দেন মেহেদি হাসান মিরাজ। নিজের পরপর দুই ওভারে এই অফ স্পিনার ফিরিয়ে দেন দুই ওপেনারকে।
বেরিয়ে এসে ছক্কা মারার চেষ্টায় রনি তালুকদার ক্যাচ দেন ৪৫ রানে। আগের দিনের ৫০ রানের সঙ্গে মজিদ যোগ করতে পারেন ২ রান। তিনি হন এলবিডব্লিউ।
এরপর সাইফ ও রকিবুল হাসান এগিয়ে নেন দলকে। ৬৩ রানের এ জুটি ভাঙার পরই ধস নামে ঢাকার ইনিংসে। রকিবুলকে (৯১ বলে ১২) এলবিডব্লিউ করে জুটি ভাঙেন রায়হান।
তাইবুর রহমানকে টিকতে দেন নাহিদুল ইসলাম। সাইফ মাঝে ফিফটি তুলে নেন ১২৪ বলে। এরপরই তিনি এলবিডব্লিউ হন রায়হানের বলে।
রায়হান পরে একে একে ফেরান শুভাগত হোম, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, নাদিফ চৌধুরি ও এনামুল হককে। নাজমুল ইসলাম অপুকে ফিরিয়ে ইনিংস গুটিয়ে দেন নাহিদুল। ৬৯ রানে ঢাকা হারায় শেষ ৮ উইকেট।
তাদের সব উইকেটই ভাগ করে নেন খুলনার স্পিনাররা। রায়হানের ৬টি ছাড়া মিরাজ ও নাহিদুল নেন ২টি করে।
ঢাকার দ্বিতীয় ইনিংসে পড়া একমাত্র উইকেটও নেন রায়হান। শূন্য রানে ফেরান রনিকে। সাইফকে (২৮*) নিয়ে দিনের বাকিটা কাটিয়ে দেন মজিদ (১৮)। শেষ দিনে তাদের সামনে ইনিংস হার এড়ানোর চ্যালেঞ্জ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা বিভাগ ১ম ইনিংস: ৪১৯
ঢাকা ১ম ইনিংস: ১১১.২ ওভারে ২৩১ (আগের দিন ৮৬/০) (মজিদ ৫২, রনি ৪৫, সাইফ ৫২, রকিবুল ১২, তাইবুর ৪, শুভাগত ২, নাদিফ ৩৩, মাহিদুল ১৮, নাজমুল ৭, এনামুল ০, সালাউদ্দিন ০*; হালিম ১৩-৫-২৪-০, মৃত্যুঞ্জয় ১২-৪-২২-০, মিরাজ ৩১-১৩-৬১-২ রায়হান ৩৪-৮-৯৬-৬, নাহিদুল ২১.২-৮-২৩-২)
ঢাকা ২য় ইনিংস: (ফলো অন) ২০ ওভারে ৪৬/১ (মজিদ ১৮*, রনি ০, সাইফ ২৮*; রায়হান ৭-০-২৪-১, নাহিদুল ৫-২-১৬-০, মিরাজ ৫-৪-১-০, হালিম ৩-১-৫-০)
অমিতের দারুণ সেঞ্চুরি
প্রথম স্তরের আরেক ম্যাচে প্রথম ইনিংসে অল্পতে গুটিয়ে যাওয়া সিলেট বিভাগ ঘুরে দাঁড়িয়েছে অমিত হাসানের সেঞ্চুরিতে।
তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে সিলেটের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৫৮ রান। ১০৫ রানে এগিয়ে আছে তারা। ৩২১ বলে ১৬ চারে ১৪৭ রানে খেলছেন অমিত।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ১ উইকেটে ৩২ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে সিলেট। প্রথম ঘণ্টায় তারা হারায় শানাজ আহমেদ (২৮) ও জাকির হসানকে। শানাজকে কট বিহাইন্ড করানোর একটু পর জাকিরকে বোল্ড করে দেন পেসার মুকিদুল ইসলাম।
আগের দিন ২৮ রানে অপরাজিত থাকা অমিত চতুর্থ উইকেটে জাকের আলির সঙ্গে ৭৭ রানের জুটিতে এগিয়ে নেন দলকে। অনেকটা সময় উইকেটে কাটিয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি জাকের (১১০ বলে ৩৩)। এই কিপার-ব্যাটসম্যানকে এলবিডব্লিউ করে দেন রবিউল হক। দ্রুতই বিদায় নেন আসাদুল্লাহ গালিব।
১৬৮ রানে ৫ উইকেট হারানো দলের স্কোর দুইশ পার হয় অমিত ও শাহানুর রহমানের জুটিতে। শাহানুরকে (২১) বোল্ড করে ৫০ রানের জুটি ভাঙেন রবিউল। নিজের পরের ওভারে তিনি ফেরান এনামুল হক জুনিয়রকেও।
অমিত এগিয়ে যান রেজাউর রহমান রাজাকে সঙ্গী করে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি ২২৮ বলে। ১৪৭ রানের ইনিংসকে তরুণ এই ব্যাটসম্যান শেষ দিনে কতদূর টেনে নিতে পারেন, সেটিই এখন দেখার।
এখন পর্যন্ত ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন মুকিদুল ও রবিউল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিলেট বিভাগ ১ম ইনিংস: ১১৩
রংপুর বিভাগ ১ম ইনিংস: ২৬৬
সিলেট বিভাগ ২য় ইনিংস: ৯৮ ওভারে ২৫৮/৭ (সায়েম ২, শানাজ ২৮, অমিত ১৪৭*, জাকির ৪, জাকের ৩৩, গালিব ০, শাহানুর ২১, এনামুল জুনিয়র ১, রেজাউর ৪*; মুকিদুল ২১-৪-৭৬-৩, রবিউল ১৮-৫-৪৮-৩, সোহরাওয়ার্দী ৩০-১৪-৪৪-০, আরিফুল ৩-১-১৯-০, মাহমুদুল ৯-১-১৯-০, নাঈম ৫-০-১৫-০, জাহিদ ৯-০-২৮-০, তানবীর ২-০-২-০)