‘রুট এখন সত্যিই ফ্যাব ফোরের একজন’

জো রুটকে নিয়েই ‘ফ্যাবুলাস ফোর।’ সংক্ষেপে বলা হয় ‘ফ্যাব ফোর।’ সময়ের সেরা চার ব্যাটসম্যান। তবে অনেকের চোখে এখানে রুট অনাহূত অতিথি। অনেকেরই প্রশ্ন, “রুট কি এই তালিকায় থাকার যোগ্য?” প্রশ্নটি করতেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকারও। তবে এখনকার দুর্দান্ত ফর্মের পর এই ধারাভাষ্যকার ও সাবেক ভারতীয় ব্যাটসম্যানের এখন আর সংশয় নেই রুটকে নিয়ে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 August 2021, 06:33 AM
Updated : 15 August 2021, 06:33 AM

বিরাট কোহলি, স্টিভেন স্মিথ, কেন উইলিয়ামসন ও রুট, সমসাময়িক এই চারজনকে একসঙ্গে ক্রিকেট দুনিয়ায় বলা হয় ‘ফ্যাব ফোর।’ তাদের সামর্থ্য, তাদের রান প্রবাহ, ধারাবাহিক পারফরম্যান্স এবং সামগ্রিক ব্যাটসম্যানশিপ, সব মিলিয়েই অন্যদের চেয়ে তাদের আলাদা করে দেখা হয় এই তকমায়।

তবে ওই তিনজনের কাতারে রুটকে রাখা যায় কিনা, প্রশ্ন উঠেছে বারবার। অনেকে তো এমনকি রুটকে বাদ দিয়ে তাদের পরের প্রজন্মের বাবর আজমকে রাখতে চেয়েছেন ‘ফ্যাব ফোর’-এ।

রুটকে নিয়ে মূল সংশয়টা ছিল বড় ইনিংস নিয়ে। থিতু হয়ে আউট হয়ে যাচ্ছিলেন। ফিফটিকে সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারছিলেন না অন্য তিনজনের মতো। গত বছরই ৮ টেস্ট খেলে তার কোনো সেঞ্চুরি ছিল না। আগের বছর ১২ টেস্ট খেলে ছিল কেবল দুটি, তার আগের বছর ১৩ টেস্ট খেলে দুটি।

এই জায়গায় এখন অভূতপূর্ব উন্নতি করেছেন রুট। ভারতের বিপক্ষে সিরিজে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি ও লর্ডসে ১৮০ রানের অসাধারণ ইনিংসের পর সনি সিক্স টিভিতে বিশ্লেষণে মাঞ্জরেকার বললেন, রুটকে নিয়ে এখন আর কারও সংশয় থাকার কথা নয়।

“অনেকবারই প্রশ্ন উঠেছে, কোহলি-স্মিথ-উইলিয়ামসনের পাশে রুট থাকতে পারেন কিনা, তিনি ওই একই মানের কিনা। সত্যি বলতে, ওই তিনজন বেশ এগিয়েই ছিলেন। কিন্তু এবছর শ্রীলঙ্কায় রুটকে যেমন দেখলাম, এরপর ভারত সফরে এবং এবার এই সিরিজে রুটের যে পারফরম্যান্স, তাতে আর প্রশ্নের অবকাশ নেই।”

“দারুণ ধারাবাহিকতা, দুর্দান্ত ব্যাটসম্যানশিপ এবং সবচেয়ে বড় কথা, দলের প্রয়োজনের সময় দায়িত্ব নিয়ে খেলা, সব মিলিয়ে রুট দারুণ। শুধু সেঞ্চুরি করেই দায়িত্ব শেষ মনে করছে না সে, বড় ইনিংস খেলে দলকে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। রুট এখন সত্যিকার অর্থেই ফ্যাব ফোরের একজন।”

লর্ডসে শনিবার করা সেঞ্চুরিটি এই বছর ১০ টেস্টে রুটের পঞ্চম সেঞ্চুরি। ৯ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে এই প্রথম এক পঞ্জিকাবর্ষে তিনটির বেশি সেঞ্চুরি করলেন তিনি। ইংল্যান্ড অধিনায়ক হিসেবে এক বছরে সবচেয়ে বেশি শতরানের রেকর্ডও এটি।

জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কা সফরে ২২৮ রানের ইনিংস খেলে শুরু হয় রুটের বছর। পরের টেস্টে খেলেন ১৮৬ রানের ইনিংস। পরের সিরিজেই ভারতে প্রথম টেস্টে আবার করেন ডাবল সেঞ্চুরি (চেন্নাইয়ে ২১৮)।

ওই সিরিজের পরের তিন টেস্টে আর বড় ইনিংস পাননি। দেশে ফিরে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্টেও নয়। এই পাঁচ টেস্টে বেশ কয়েকবার পুরনো রোগ পেয়ে বসে তাকে, আউট হন থিতু হয়ে। তবে ভারতের বিপক্ষে চলতি সিরিজে আবার তিনি সেরা চেহারায়। প্রথম টেস্টে ট্রেন্ট ব্রিজে ৬৪ ও ১০৯ রানের ইনিংসের পর লর্ডসে হার না মানা ১৮০।

১৮০ রানের ইনিংসটির পথে ৯ হাজার রানও হয়ে যায় রুটের। এই মাইলফলকে পা রাখলেন তিনি টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে কম সময় নিয়ে (৮ বছর ২৪২ দিন) এবং দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে।

সেঞ্চুরির তালিকায় অবশ্য এখনও অনেকটা পিছিয়ে তিনি। চলতি টেস্ট দিয়ে ৯৪ টেস্টে কোহলির সেঞ্চুরি ২৭টি, স্মিথের ২৭ সেঞ্চুরি কেবল ৭৭ টেস্টেই। উইলিয়ামসনের ২৪ সেঞ্চুরি এসেছে ৮৫ টেস্টে। রুটের সেখানে ২২ সেঞ্চুরি হলো ১০৭ টেস্টে।

তবে এই বছরের ধারাবাহিকতায় রুট তাদের পাশে থাকার দাবিদার নিশ্চিতভাবেই। এবছর ৬৯.১১ গড়ে ১২৪৪ রান হয়ে গেছে ইংলিশ অধিনায়কের। ৭০০ রানও করতে পারেননি অন্য কোনো ব্যাটসম্যান।