২০০৯ সিরিজের সঙ্গে মিল দেখছেন রোচ

প্রেক্ষাপট ভিন্ন কিন্তু মূল ঘটনা একই। এক যুগের ব্যবধানে আবার বাংলাদেশের মুখোমুখি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেবার কেমার রোচ ছিলেন তরুণ গতিময় এক পেসার, এখন তিনি টেস্টে ক্যারিবিয়ানদের বড় এক অস্ত্র। ২০০৯ সালের সেই সিরিজের সঙ্গে এবারের সিরিজের বেশ মিল দেখছেন রোচ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Jan 2021, 11:33 AM
Updated : 15 Jan 2021, 11:34 AM

বেতন নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে ঝামেলায় সেবার বাংলাদেশের বিপক্ষে দেশের মাটিতে খেলেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের মূল দলের ক্রিকেটাররা। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে এবার বাংলাদেশ সফরে আসেননি গুরুত্বপূর্ণ অনেক খেলোয়াড়।

২০০৯ সালে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশে পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে এসে ২০১৮ সালে হেরেছে ওয়ানডে সিরিজ, টেস্টে হয়েছে হোয়াইটওয়াশ। এবারও যে কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে বেশ ভালোভাবেই অনুভব করতে পারছেন রোচ।

মিরপুরে জাতীয় ক্রিকেটে একাডেমি মাঠে শুক্রবার অনুশীলনের পর ৩২ বছর বয়সী পেসার জানান, এবার বাংলাদেশে এসে এক যুগের আগের সেই সিরিজের কথাই মনে পড়ছে তার। 

“তখন আমিও বেশ অনভিজ্ঞ ছিলাম। ছেলেরা তখন বেশ চাপে ছিল ভালো করার জন্য কিন্তু তারা পারেনি। আমাদের বেশিরভাগের জন্যই সেই সিরিজ বড় একটা শিক্ষা ছিল।”

“আর এবার এটা আমাদের জন্য দ্বিতীয়বার একই পরিস্থিতি হয়েছে। গ্রুপ হিসেবে, দল হিসেবে আমাদের কি করতে হবে এর ভালো পারিকল্পনা করেছি আমরা। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ভালো আলাপ হচ্ছে, আজকে এবং গতকালকে তাদের দেখে ভালোই মনে হচ্ছে। আশা করছি ভালো প্রস্তুতি নিয়েই আমরা টেস্ট সিরিজ শুরু করব।”

টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষেই রেকর্ড সবচেয়ে ভালো রোচের। ৮ টেস্টে ১৯.৭৮ গড়ে নিয়েছেন ৩৩ উইকেট। স্ট্রাইক রেট ৪১.৩। তবে বাংলাদেশের মাটিতে রেকর্ড অতটা উজ্জ্বল নয়। ৩ টেস্টে পেয়েছেন কেবল ৪ উইকেট। গড় ৫৯, স্ট্রাইক রেট ৯৮।

ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামে কতটা সংগ্রাম করতে হবে ভালো করেই জানেন রোচ। তবে একই সঙ্গে বিশ্বাস করেন, ভালো একটি পরিকল্পনা এবং এর যথাযথ বাস্তবায়নে পাল্টাতে পারে পরিস্থিতি।

“সবাই জানি বাংলাদেশ সবসময় পেসারদের জন্য কঠিন। যদি ভালো পরিকল্পনা করতে পারি, ভালো জায়গায় বল করতে পারি তা আমাদের জন্য সহায়ক হবে। এসব ঠিকমতো করতে পারলে আমি মনে করি, আমরা সিরিজে ভালো করতে পারব।”

“বাংলাদেশের বিপক্ষেই টেস্টে আমার শুরু হয়েছিল, অবশ্য সেটা ঘরের মাঠে ছিল। কিন্তু বেশ কয়েকবারই বাংলাদেশে আসা হয়েছে। ওয়ানডে ও টেস্ট খেলেছি এখানে। এটা সবসময় আমাকে বিশ্বাস জোগায় মানসিকভাবে। তারা খুব কঠিন প্রতিপক্ষ। দল হিসেবে তারা গড়ে উঠেছে।”

টেস্টে পেস বোলিং আক্রমণে রোচের সঙ্গে আছেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ও আলজারি জোসেফ। মরা উইকেটেও ব্যাটসম্যানদের ভোগানোর সামর্থ্য তাদের আছে। রোচ মনে করছেন, মূল কাজটা করতে হবে স্পিনারদেরই। তারা যতটা সম্ভব সহায়তা দিয়ে যাবেন। 

“বোলিং ইউনিটের সাফল্যের জন্য দলীয় প্রচেষ্টার প্রয়োজন হবে। আর সেরকমটা হলে আমাদের বোলিং ইউনিট ভালোভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবে। আমরা ভালো পরিকল্পনা করছি, বোলিং কোচের সাথে কথা হচ্ছে, নিজেদের মধ্যেও আলাপ আলোচনা করছি। আমরা জানি, আমাদের কি করতে হবে।”

প্রতিপক্ষের স্কোয়াডের দিকে তাকিয়ে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ দেখছেন রোচ। 

“তামিম ইকবাল তাদের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের একজন। সাকিব আল হাসান ফিরেছে। মুশফিকুর রহিম আছে, তাদের অধিনায়ক মুমিনুল হকও ভালো ব্যাটসম্যান... বেশ কিছু ভালো নাম আছে তাদের। তবে আমরা আসলে নিজেদের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি।”

“বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের চেপে ধরতে হলে মাঠে আক্রমণাত্মক থাকতে হবে। পিচে খুব একটা বাউন্স থাকবে না। মাঠে পরিকল্পনাটা ঠিকঠাক করতে হবে এবং সেটার প্রয়োগও। বোলিংয়ে ক্ষেত্রে গতির সংমিশ্রণ করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ভালো জায়গায় টানা বল করে যেতে হবে যতটা সম্ভব।”