কোহলিকে থামিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল অস্ট্রেলিয়া

ভারতের জয়ের আশা বেঁচে ছিল বিরাট কোহলির ব্যাটে। দুর্দান্ত খেলতে থাকা এই ব্যাটসম্যানকে থামিয়ে ম্যাচ নিজেদের দিকে ঘুরিয়ে দিলেন অ্যান্ড্রু টাই। রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত জিতে নিল অস্ট্রেলিয়া। টি-টোয়েন্টি সিরিজে এড়াল হোয়াইটওয়াশ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2020, 01:17 PM
Updated : 8 Dec 2020, 01:18 PM

সিডনি ক্রিকেট মাঠে মঙ্গলবার তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ১২ রানে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাথু ওয়েড ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ফিফটিতে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৮৬ রান করে স্বাগতিকরা। কোহলির দারুণ ফিফটির পর সফরকারীরা ৭ উইকেটে থামে ১৭৪ রানে। তিন ম্যাচের সিরিজটি ভারত জেতে ২-১ ব্যবধানে।

সবশেষ ১২ টি-টোয়েন্টিতে এটি ভারতের প্রথম হার। ঘরের বাইরে ১১ ম্যাচের মধ্যে প্রথম।

ওপেনিংয়ে নেমে ওয়েড ৫৩ বলে করেন ৮০, মিডল অর্ডারে ঝড় তোলা ম্যাক্সওয়েল ৩৬ বলে করেন ৫৪। রান তাড়ায় ভারত অধিনায়ক কোহলি খেলেন ৬১ বলে ৮৫ রানের ইনিংস।

অস্ট্রেলিয়ার জয়ে বড় অবদান আছে মিচেল সোয়েপসনের। ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে তিনি নেন ৩ উইকেট। দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনি।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ভালো হয়নি। দলে ফেরা অ্যারন ফিঞ্চকে দ্বিতীয় ওভারেই হারায় তারা। ওয়াশিংটন সুন্দরকে উড়িয়ে মারার চেষ্টায় মিড অফে হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে ধরা পড়েন স্বাগতিক অধিনায়ক।

দ্রুত উইকেট হারানোর চাপ অবশ্য পড়তে দেননি ওয়েড। আগের ম্যাচের মতো এদিনও তিনি ছিলেন মারমুখী। তিনে নামা স্টিভেন স্মিথের সঙ্গে তার জুটি ছিল ৬৫ রানের। বেশিরভাগ রানই ছিল এই কিপার-ব্যাটসম্যানের।

সাবধানী শুরু করা স্মিথ সুন্দরের বলে বোল্ড হন ২৩ বলে ২৪ করে। ওই ওভারেই অবশ্য একবার জীবন পান তিনি। তাকে সহজ স্টাম্পিংয়ের সুযোগ হাতছাড়া করেন লোকেশ রাহুল।

অস্ট্রেলিয়ার বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেয় ম্যাক্সওয়েল ও ওয়েডের জুটি। তৃতীয় উইকেটে তারা ৫৩ বলে তোলেন ৯০ রান। শার্দুল ঠাকুরের বলে ওয়েড এলবিডাব্লিউ হলে ভাঙে এই জুটি।

গত ম্যাচে ফিফটি করা ওয়েড এই ম্যাচে ৭ চার ও দুই ছক্কায় খেলেন ৮০ রানের ইনিংস। ম্যাক্সওয়েল ৩১ বলে করেন এই সংস্করণে নিজের অষ্টম ফিফটি। তিনটি করে ছক্কা-চারে ৫৪ রান করা এই বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করে থামান টি নাটরাজন।

ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হওয়া ম্যাক্সওয়েল অবশ্য দুবার জীবন পেয়েছেন, আরেক বার বেঁচে গেছেন ‘নো’ বলের জন্য।

রান তাড়ায় ভারতও ধাক্কা খায় শুরুতে। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই শূন্য রানে আউট হন রাহুল। ম্যাক্সওয়েলকে ছক্কার চেষ্টায় ডিপ মিডউইকেটে স্মিথের হাতে ক্যাচ দেন ভারতীয় ওপেনার।

দারুণ ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নেন শিখর ধাওয়ান ও কোহলি। ২১ বলে ২৮ করা ধাওয়ানকে ফিরিয়ে ৭৪ রানের জুটি ভাঙেন লেগ স্পিনার সোয়েপসন। পরে তিনি দ্রুত ফেরান সাঞ্জু স্যামসন ও শ্রেয়াস আইয়ারকেও।

গত ম্যাচের নায়ক পান্ডিয়াও এই ম্যাচে খুব বেশি ভূমিকা রাখতে পারেননি। ঝড় তোলার আগেই তাকে থামান অ্যাডাম জ্যাম্পা।

অন্য প্রান্তে একের পর এক উইকেট পড়লেও কোহলির ব্যাটে রানের চাকা সচল থাকে ভারতের। ৯ রানে বাউন্ডারিতে স্মিথের হাতে জীবন পাওয়া এই ব্যাটসম্যান ৪১ বলে ক্যারিয়ারের ২৫তম ফিফটি তুলে নেন। পরেও অবশ্য তাকে আউট করার সুযোগ আরও দুইবার পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।

১৯তম ওভারে শেষ পর্যন্ত আউট হওয়া কোহলির ৮৫ রানের ইনিংস সাজানো ৪ চার ও ৩ ছক্কায়। তার বিদায়ের পর আর পেরে ওঠেননি ভারতীয় লোয়ার-অর্ডার ব্যাটসম্যানরা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ২০ ওভারে ১৮৬/৫ (ওয়েড ৮০, ফিঞ্চ ০,  স্মিথ ২৪, ম্যাক্সওয়েল ৫৪, হেনরিকস ৫*, শর্ট ৭, স্যামস ৪*; চাহার ৪-০-৩৪-০, সুন্দর ৪-০-৩৪-২, নাটরাজন ৪-০-৩৩-১, চেহেল ৪-০-৪১-০, শার্দুল ৪-০-৪৩-১)

ভারত: ২০ ওভারে ১৭৪/৭ (রাহুল ০, ধাওয়ান ২৮, কোহলি ৮৫, স্যামসন ১০, শ্রেয়াস ০, পান্ডিয়া ২০, সুন্দর ৭, শার্দুল ১৭*, চাহার ০*; ম্যাক্সওয়েল ৩-০-২০-১, অ্যাবট ৪-০-৪৯-১, স্যামস ২-০-২৯-০, টাই ৪-০-৩১-১, সোয়েপসন ৪-০-২৩-৩, জ্যাম্পা ৩-০-২১-১)

ফল: অস্ট্রেলিয়া ১২ রানের জয়ী

সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ ভারত ২-১ ব্যবধানে জয়ী

ম্যাচ অব দা ম্যাচ: মিচেল সোয়েপসন

ম্যান অব দা সিরিজ: হার্দিক পান্ডিয়া