‘ভাগ্যবান’ মুশফিকের চাওয়া ঢাকার শিরোপা

চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, সিলেট-বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিতে নানা দলে খেলা হয়ে গেছে মুশফিকুর রহিমের। কিন্তু ঢাকার দলে খেলার স্বাদ পাননি কখনও। বিপিএলের সাত আসরে যা হয়নি, বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের প্রথম আসরেই তা পেয়ে গেছেন মুশফিক। ঢাকার ফ্র্যাঞ্চাইজিতে খেলার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে তার। দলকে ট্রফি এনে দিয়ে তিনি স্মরণীয় করে রাখতে চান এই টুর্নামেন্ট।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2020, 12:37 PM
Updated : 23 Nov 2020, 03:51 PM

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের প্লেয়ার্স ড্রাফটে লটারিতে প্রথম ডাকের সুযোগ পেয়েই বেক্সিমকো ঢাকা দলে নেয় মুশফিককে। ঢাকায় ঠাঁই পাওয়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া জানান মুশফিক। দলের জার্সি পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিসহ তিনি লেখেন, “নতুন দল, নতুন স্বপ্ন।”

এসবেই ফুটে উঠছিল তার রোমাঞ্চ। টুর্নামেন্ট শুরুর আগের দিন মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েও মুশফিক আবারও কণ্ঠে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করলেন তার ভেতরের উত্তেজনা।

“ঢাকায় প্রথমবার খেলছি। যেটা আমি অনেকবারই বলেছি, সবারই স্বপ্ন থাকে এমন বড় বড় দলে খেলার, বিশেষ করে ঢাকায়। আমি খুব ভাগ্যবান যে তারা এবার আমাকে নিয়েছে। চেষ্টা করব নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী প্রতিদান দেওয়ার।”

বেক্সিমকো ঢাকা শুধু মুশফিককে দলেই নেয়নি, অধিনায়কের দায়িত্বও দিয়েছে। মুশফিক দায়িত্বটি নেওয়ায় কিছুটা বিস্ময়েরও জন্ম হয়েছে। গত মাসে প্রেসিডেন্ট’স কাপ ওয়ানডেতে অধিনায়কত্ব করার প্রস্তাব দেওয়া হলেও রাখেননি মুশফিক। জাতীয় দলে তার নেতৃত্বের অধ্যায় শেষ হওয়ার পর নানা সময়ই তিনি নেতৃত্ব নিয়ে অনীহার কথা বলেছেন। এখন তাহলে কেন নিলেন দায়িত্ব?

মুশফিক ব্যাখ্যা করলেন সেটির কারণ। পাশাপাশি জানিয়ে দিলেন, দলকে শিরোপা জিতিয়ে পালন করতে চান দায়িত্ব।

“প্রেসিডেন্ট’স কাপ বা অন্যান্য সময় বোর্ডের অধীনে যখন খেলা হয়, তরুণ কিছু ক্রিকেটার আছে, তাদের সুযোগ দিলে ভবিষ্যতে ভালো হতে পারে। আমি মনে করি, তরুণ ক্রিকেটাররা যত দায়িত্ব নেবে, তাদের দায়িত্ববোধ তত বাড়বে।”

“এখন এরকম ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে অধিনায়কত্বের ব্যাপারটা অনেক সময় নির্ভর করে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা কী চায়। এখন তারা মনে করেছেন যে, আমি হয়তো সঠিক ব্যক্তি যে দলকে গাইড করতে পারি। এই জন্যই আসলে নেওয়া (নেতৃত্ব)। এটাও একটা চ্যালেঞ্জ, অধিনায়ক হিসেবে দলকে এক নম্বর করা। সেই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য আমি প্রস্তুত। আমার দলে যারা আছে, তারা যদি পাশে থাকে, এটা অসম্ভব নয়।”

ঢাকায় খেলার স্বপ্নপূরণের পাশাপাশি চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে একটি অপূর্ণতাও পূরণ হবে মুশফিকের। ঘরোয়া আসরে কখনোই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ তিনি পাননি। গত বিপিএলের আগে অবশ্য ফাইনালের মঞ্চেও পা রাখতে পারেননি একবারও। সেই আক্ষেপ কিছুটা ঘুচেছে গত বিপিএলে। মুশফিকের নেতৃত্বেই ফাইনালে খেলেছিল খুলনা টাইগার্স। তবে ট্রফির লড়াইয়ে তারা পেরে ওঠেনি আন্দ্রে রাসেলের রাজশাহী রয়্যালসের কাছে।

বিপিএলের পর কদিন আগে প্রেসিডেন্ট’স কাপেও শান্ত একাদশের হয়ে ফাইনালে খেলেন মুশফিক। কিন্তু এবারও হেরে যায় তাদের দল।

তবে এই দুটি ফাইনাল থেকে মুশফিক নতুন আশার জোগান পাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টিতে আরেক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার।

“প্রত্যেক টুর্নামেন্টেই একটা সুযোগ থাকে। সবশেষ যে দুই টুর্নামেন্ট খেলেছি, বিপিএল ও প্রেসিডেন্ট’স কাপে একটা হার্ডলের কারণে পারিনি। পাশাপাশি, আমার মনে হয়, এটাও একটা ধারাবাহিকতা যে আমি দুটি টুর্নামেন্টে ফাইনাল পর্যন্ত যেতে পেরেছি।। আশা থাকবে এবার যেন শেষ পর্যন্ত যেতে পারি।”

“আমাদের প্রথম লক্ষ্য থাকবে শীর্ষ চারে থাকা। তারপর অবশ্যই যেন ফাইনালটা খেলতে পারি। এরপর চূড়ান্ত লক্ষ্য তো হচ্ছে চ্যাম্পিয়নশিপ।  সেদিকেই আমাদের লক্ষ্য আছে।”

টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় মুশফিকের ঢাকার প্রতিপক্ষ মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী।

বেক্সিমকো ঢাকা স্কোয়াড:

মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), রুবেল হোসেন, তানজিদ হাসান তামিম, নাসুম আহমেদ, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, নাঈম হাসান, শাহাদাত হোসেন দিপু, আকবর আলি, ইয়াসির আলি রাব্বি, সাব্বির রহমান, মেহেদি হাসান রানা, মুক্তার আলি, শফিকুল ইসলাম, আবু হায়দার, পিনাক ঘোষ, রবিউল ইসলাম রবি।