সেরা ফিল্ডার: রাজ্জাকের চোখে আফতাব
আরিফুল ইসলাম রনি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 07 Jul 2020 06:32 PM BdST Updated: 15 Jul 2020 05:02 PM BdST
একসময় বাংলাদেশের তুমুল দর্শকপ্রিয় ক্রিকেটার ছিলেন আফতাব আহমেদ। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে যেমন মাতিয়েছেন, তার মিডিয়াম পেস বোলিংও ছিল অনেক সময় কার্যকর। প্রতিভাবান এই ক্রিকেটার শেষ পর্যন্ত তার সম্ভাবনার পূর্ণতা দিতে পারেননি, লম্বা হয়নি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। একটি জায়গায় তবু তাকেই সবার ওপরে রাখেন আব্দুর রাজ্জাক। অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার বললেন, বাংলাদেশে তার দেখা সেরা ফিল্ডার আফতাব।
আফতাবের ব্যাটিংয়ের তুলনায় ফিল্ডিং আলোচিত হয় কমই। ঠিক যেমন, বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে ফিল্ডিং গুরুত্ব পায় কম। ধারাবাহিক আয়োজনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা ফিল্ডার।
দেশের বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটাররা জানাচ্ছেন তাদের ভাবনায় সেরাদের কথা। তিনটি ক্যাটাগরিতে আলাদাভাবে সেরার পাশাপাশি বাছাই করা হচ্ছে সার্বিকভাবে সেরা। আয়োজনের দশম পর্বে রাজ্জাক জানালেন তার ভাবনা।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে রাজ্জাকের পথচলা প্রায় দুই দশকের। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে ২০০ উইকেট নেওয়া প্রথম বোলার তিনি, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দেশের সেরা উইকেট শিকারি বোলার। বল হাতে আছে আরও দারুণ সব কীর্তি ও রেকর্ড। এখনও ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলে চলেছেন দাপটে। দীর্ঘ এই ভ্রমণে কাছ থেকে দেখেছেন দেশের অসংখ্য ক্রিকেটারকে। তার পছন্দের ওজন তাই যথেষ্টই বেশি!
স্লিপে:
“একটুও ভাবার প্রয়োজন নেই, চোখ বন্ধ করে সেরা জুনায়েদ সিদ্দিক। স্লিপে আর কাউকে সেরা ভাবার অবকাশই নেই।”

“খুব ভালো স্লিপ ফিল্ডার আমাদের দেশে না পাওয়ার অনেক কারণ আছে। তবে জুনায়েদকে আমি দেখেছি, আলাদা করে স্লিপ ফিল্ডিং নিয়ে অনেক খাটতে। জাতীয় দলে আসার অনেক আগে থেকেই স্লিপ ফিল্ডিং নিয়ে কাজ করত। আমার মনে আছে, প্রথম যে ম্যাচে ওকে দেখেছি, রাজশাহীতে সেই ম্যাচে চার-পাঁচটি ক্যাচ নিয়েছিল স্লিপ ও গালি মিলিয়ে। তার মধ্যে তিনটি ক্যাচই ছিল ফিফটি-ফিফটি, কিন্তু জুনায়েদ ক্যাচ বানিয়ে নিয়েছিল। তারপর থেকে নিয়মিতই দেখেছি অমন। আমাদের বেশির ভাগ স্লিপ ফিল্ডার যেসব ক্যাচ নেওয়ার চিন্তাও করত না, জুনায়েদ সেগুলো নিয়ে ফেলত। ওকে স্লিপে দেখলে সবসময়ই বোলারদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যেত।”
“টেকনিক্যালি স্লিপ ফিল্ডারের সবকিছুই ওর আছে। তবে আমার কাছে সবচেয়ে বেশি যেটা গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়, ওর হ্যান্ড-আই কো অর্ডিনেশন অসাধারণ। স্লিপে তো চোখের পলকে বল চলে আসে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় থাকে না। জুনায়েদ সেই চ্যালেঞ্জ সামলেছে দারুণভাবে।”
৩০ গজ বৃত্তে:
“বৃত্তের ভেতর নাসির হোসেন কিছুদিন খুব ভালো ছিল। তবে কাঁধের ইনজুরির পর ওর থ্রো কমজোর হয়ে গেছে একটু। অলক কাপালী দুর্দান্ত ছিল। ডাইভিং, রিফ্লেক্স দারুণ ছিল। ওরও ঘাটতি কিছুটা ছিল থ্রোয়িংয়ে। এখন আফিফ হোসেন, নাজমুল হোসেন শান্ত বেশ ভালো।”
“তবে সবার চেয়ে এগিয়ে রাখব আমি আফতাবকে। বৃত্তের ভেতর অসাধারণ ছিল। ওকে দেখলে মনে হতো না দারুণ কোনো ফিল্ডার। কিন্তু ওর দিকে ক্যাচ বা বল গেলে বোঝা যেত। দারুণ ক্ষিপ্রতায় কাজ সেরে ফেলত।”

সীমানায়:
“সীমানায় ভালো অনেকেই ছিল বা আছে। কেউ ক্যাচিংয়ে খুব ভালো, কেউ বা থ্রোয়িংয়ে বা গ্রাউন্ড কাভার করায়। আমি যে দুজনের কথা বলব, অনেকে অবাক হতে পারেন। তবে আমি অনেক দেখেছি বলেই বলছি ওদের কথা, একদমই নিজস্ব অভিমত এসব।”
“ক্যাচিংয়ে রুবেল হোসেন দারুণ। উঁচু ক্যাচে বরাবরই বেশ নিরাপদ। তবে রুবেলের থ্রোয়িংয়ে একটু ঘাটতি আছে। আরেক পেসার শফিউল ইসলামের সেই ঘাটতিও নেই। শফিউলের হাত ভালো, ক্যাচিং ভালো, থ্রোয়িং ভালো, অনেক দ্রুত ছুটতে পারে ও গ্রাউন্ড কাভার করতে পারে। বাউন্ডারিতে শফিউলই আমার মতে সেরা।”
সব মিলিয়ে সেরা:
“আমরা পজিশন অনুযায়ী স্পেশালিস্ট ফিল্ডার খুব কমই পেয়েছি। সবাই নানা সময় মিলিয়ে সব জায়গায় ফিল্ডিং করেছে। এতে কারও নিজস্বতা সেভাবে গড়ে ওঠেনি। সেরা বাছাই করাও খুব কঠিন।”
“রাজিন সালেহ একসময় খুব ভালো অলরাউন্ড ফিল্ডার ছিল। ইনজুরির আগে নাসির ভালো ছিল। সাকিব আল হাসান অনেকটা সময় সেরাদের একজন ছিল ফিল্ডিংয়েও। পরে স্বাভাবিকভাবেই ধার কমেছে, তবে এখনও নিরাপদ যথেষ্ট। এখন সৌম্য সরকার ভালো, আফিফ হোসেন খুব ভালো।”
“আরও অনেকের কথা মনে পড়ছে। সবার নাম উল্লেখ করলে অনেক বড় হবে তালিকা। স্রেফ বাছাইয়ের স্বার্থে যদি কাউকে বেছে নিতে হয়, আমি এগিয়ে রাখব আফতাবকে। বেশির ভাগ সময় হয়তো বৃত্তের ভেতরই ফিল্ডিং করেছে ও, তবে বাউন্ডারিতে যখন করেছে, সেখানেও নিজের দক্ষতা দেখিয়েছে।”
“ওপরে যাদের কথা বললাম, তাদের সবারই ক্যাচ ছাড়ার ঘটনা মনে পড়ে আমার। কিন্ত আফতাবের কিছু মনে পড়ে না। নিশ্চয়ই ক্যাচ ছেড়েছে আফতাবও, কিন্তু আমার মনে পড়ে না। এতটাই ভালো ছিল ও। ব্যাটিংয়ে যেমন আফতাব ভয়ডরহীন ছিল সবসময়, ফিল্ডিংয়েও তেমনি যে কোনো পজিশনে ছিল আত্মবিশ্বাসী।”
“এই সময়ের আফিফের কথাও বলতে হবে আলাদা করে। ফিল্ডিংয়ে চোখধাঁধানো সব কাজ করতে পারে সে। এখনও খুব বেশি খেলেনি বলে সেভাবে বিবেচনা করছি না। তবে নিজেকে ধরে রাখতে পারলে অসাধারণ ফিল্ডার হয়ে উঠবে ছেলেটা।”
-
অবশেষে নায়ক কোহলি, টিকে রইল বেঙ্গালোর
-
লিটন ও তামিম যদি পরপর আউট না হতেন…
-
জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় সময়ে আছি: কোহলি
-
ড্র হবে, প্রথম দিনেই ‘জানত’ শ্রীলঙ্কা
-
পেসারদের পারফরম্যান্সে খুশি নন অধিনায়ক
-
'১১ জন ১০০ করলে তো ১১০০ রান হবে'
-
চট্টগ্রাম থেকেই মিরপুর টেস্টের পরিকল্পনা জানিয়ে দিল শ্রীলঙ্কা
-
তাইজুলের দারুণ বোলিংয়েও জমল না শেষ দিনের রোমাঞ্চ
সর্বাধিক পঠিত
- তাইজুলের দারুণ লড়াইয়ের পরও ড্র চট্টগ্রাম টেস্ট
- ‘বাংলাদেশে আসলে অভিজ্ঞতার দাম নেই’
- ‘দল আমার কাছে অনেক কিছু চায়, আমাকে মূল্যবান মনে করে’
- ডলারের তেজ খানিকটা কমল
- ‘পোশাকে আপত্তি তুলে’ তরুণী লাঞ্ছিত নরসিংদী স্টেশনে
- ‘সালিশে ক্ষুব্ধ’: চেয়ারম্যানের ছেলেকে ‘হত্যার পর আত্মহত্যা’
- একুশের গানের রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরীর চিরবিদায়
- উল্টে যাওয়া কভার্ডভ্যান সরাতে ৬ ঘণ্টা, ব্যাপক যানজট
- শেষের নাটকীয়তায় হেরে কলকাতার বিদায়
- রেঞ্জার্সের অপেক্ষা বাড়িয়ে ইউরোপা লিগ চ্যাম্পিয়ন আইনট্রাখট