মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিনে ৯৯ রান নিয়ে লাঞ্চে গিয়েছিলেন মুশফিকুর। লাঞ্চের পর দ্বিতীয় ওভারেই বাউন্ডারিতে পা রাখেন তিন অঙ্কের সীমানায়। টেস্টে তার আগের ৬ সেঞ্চুরির সবকটিই ছিল কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে। শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলে শতরান এই প্রথম।
টেস্টে কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে মুশফিকের খেলা নিয়ে বিতর্ক-আলোচনা কম হয়নি। নানা সময়েই শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে কিছু টেস্ট তিনি খেলেছেন, তবে প্রায় সবকটিই ছিল দলের চাওয়ায়। মুশফিক নিজে বরাবরই পছন্দ করেছেন কিপার হিসেবে খেলতে। তার ভাবনায় বদল আসে গত অক্টোবরে ভারত সফরের আগে। নিজেই ঘোষণা দেন, ‘ওয়ার্কলোড’ কমাতে কিপিং ছাড়তে চান।
এরপর ভারতে দুই টেস্টে চ্যালেঞ্জিং বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে সতীর্থদের চরম ব্যর্থতার সিরিজে দুটি ফিফটি করেন। শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলার সাহস হয়তো তাতে বেড়েছে আরও। বিশ্বাসটা পোক্ত করতে জরুরি ছিল সেঞ্চুরির। অবশেষে ফুরোলো সেই অপেক্ষা।
শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলার ২৬ ইনিংসে এলো তার প্রথম সেঞ্চুরি। আগের সর্বোচ্চ ৯২ ছিল ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রামে।
সপ্তম টেস্ট সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির তালিকায় মুশফিক উঠে এসেছেন দুইয়ে। পেছনে পড়ে গেছে মোহাম্মদ আশরাফুলের ৬ সেঞ্চুরি। ৯ সেঞ্চুরির রেকর্ডে এ দিনই তামিম ইকবালকে ছুঁয়েছেন মুমিনুল হক।
এই সেঞ্চুরি আরেকটি দিক থেকেও জরুরি ছিল মুশফিকের জন্য। বাংলাদেশ দলে তার জায়গা নিয়ে সামান্যতম প্রশ্ন ওঠার কারণও ছিল না কোনো। তবে গতকিছুদিনের ঘটনাপ্রবাহে সেই অবিশ্বাস্য অবস্থারই সৃষ্টি হয়েছিল কিছুটা। নিরাপত্তাজনিত শঙ্কায় পাকিস্তান সফরে যাননি। কোচ ও প্রধান নির্বাচকের প্রতিক্রিয়ায় ছিল অসন্তুষ্টির ছোঁয়া। ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রমাণ করে মুশফিককে জায়গা আদায় করতে হবে, এমন সুরও ছিল তাদের কণ্ঠে।
এই টেস্টের আগে বিসিএলে ১৪০ রানের ইনিংস খেলেছেন। এরপর টেস্টেও সেঞ্চুরি। ১৮ বাউন্ডারিতে ১৬০ বলে সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পর উদযাপন করলেন ব্যাট দিয়ে বাতাসে শট খেলার ভঙ্গি করে। যেন সব আলোচনা-সমালোচনাগুলিকেও পাঠিয়ে দিতে চাইলেন বাউন্ডারির বাইরে!