মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিনে জিম্বাবুয়েকে ম্যাচ থেকে অনেকটাই ছিটকে দিয়েছে বাংলাদেশ। শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সোমবার ৬ উইকেটে ৫৬০ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে তারা।
দেশের মাটিতে বাংলাদেশের এটি সর্বোচ্চ সংগ্রহ। আগের সর্বোচ্চ ৫৫৬ ছিল ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
মুমিনুল হকের ব্যাট থেকে এসেছে ১৩২ রান।
শেষ বিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমে জিম্বাবুয়ে প্রথম ওভারেই নাঈম হাসানের স্পিনে হারিয়েছে ২ উইকেট। দিন শেষ করেছে তারা ২ উইকেটে ৯ রান। ইনিংস পরাজয় এড়াতেই তাদের প্রয়োজন এখনও ২৮৬ রান।
মুমিনুল ও মুশফিকের জুটি আগের দিনই যথেষ্ট ভোগায় জিম্বাবুয়েকে। নতুন দিনেও এই দুজনকে থামানোর পথ পায়নি তারা। দুজনের ব্যাটে রান আসতে থাকে বানের জলের মতো। প্রথম সেশনেই ২৮ ওভারে আসে ১১১ রান!
মুমিনুল তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ১৫৬ বলে। ৯টি টেস্ট সেঞ্চুরিতে ছুঁয়েছেন বাংলাদেশের হয়ে তামিমের সেঞ্চুরির রেকর্ড।
মুশফিক লাঞ্চে গিয়েছিলেন ৯৯ রানে। লাঞ্চের পর দ্বিতীয় ওভারেই পা রাখেন শতরানে। ১৮০ বলে ১৮ চারে আসে তার সেঞ্চুরি।
ব্যক্তিগত মাইলফলকের পাশাপাশি ধরা দেয় জুটির কীর্তিও। তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি জুটিতে দুজনে গড়েন বাংলাদেশের নতুন রেকর্ড।
মোহাম্মদ মিঠুন এরপর পারেননি নিজের ছাপ রাখার সুযোগ কাজে লাগাতে। তবে লিটন দাস ভুল করেননি। ঠাণ্ডা মাথার ব্যাটিংয়ে তিনি সঙ্গ দেন মুশফিককে। গড়ে ওঠে আরেকটি শতরানের জুটি।
ফিফটির পরপর লিটন আউট হন রেজিস চাকাভার দারুণ ক্যাচে। জিম্বাবুয়ের কিপারের সেটি ছিল ইনিংসে পঞ্চম ডিসমিসাল।
তাইজুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে এরপর ডাবল সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যান মুশফিক। ৩১৫ বল খেলে স্পর্শ করেন কাঙ্ক্ষিত মাইলফলক।
তার ব্যাট তো কথা বলেছেই, ডাবল সেঞ্চুরির পর উদযাপনেও যেন বলতে চাইলেন অনেক কথা!
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আগের টেস্টেই বাংলাদেশের রেকর্ড ২১৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন মুশফিক। এবার নিজেকে ছাড়ানোর সুযোগ পাননি তিনি। ইনিংস ঘোষণা করে দেয় দল।
নাইটওয়াচম্যান ডোনাল্ড টিরিপানো বিদায় নেন নাঈমের পরের বলেই। অভিজ্ঞ ব্রেন্ডন টেইলর সামলান হ্যাটট্রিক বল। কেভিন কাসুজার সঙ্গে মিলে পার করে দেন দিন।
মেঘলা আকাশের নিচে আলোকস্বল্পতায় শের-ই-বাংলার ফ্লাড লাইট জ্বলে উঠেছিল বেশ আগেই। এই আলোতে খেলা চালানোয় ড্রেসিং রুমের সামনে জিম্বাবুয়ে কোচ লালচাঁদ রাজপুত কথা বললেন চতুর্থ আম্পায়ারের সঙ্গে। লাভ তাতে কিছু হয়নি।
জিম্বাবুয়ের সামনে এখন ম্যাচ বাঁচানোর চ্যালেঞ্জ। বৃষ্টি না হলে কাজটি তাদের জন্য হবে ভীষণ দুঃসাধ্য। দুঃসময়ের বলয়ে থাকা বাংলাদেশের সামনে খানিকটা স্বস্তির জয়ের হাতছানি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস : ২৬৫
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ১৫৪ ওভারে ৫৬০/৬ (ইনিংস ঘোষণা) (আগের দিন ২৪০/৩) (তামিম ৪১, সাইফ ৮, শান্ত ৭১, মুমিনুল ১৩২, মুশফিক ২০৩*, মিঠুন ১৭, লিটন ৫৩, তাইজুল ১৪*; টিরিপানো ৩০-৬-৯৬-১, নিয়াউচি ২৭-৩-৮৬-১, রাজা ৩০-২-১১১-১, টিশুমা ২৫-২-৮৫-১, এনডিলোভু ৪২-৪-১৭০-২)।
জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস: ৫ ওভারে ৯/২ (মাসভাউরে ০, কাসুজা ৮*, টিরিপানো ০, টেইলর ১*; নাঈম ৩-১-৪-২, তাইজুল ২-০-৫-০)