মিরপুরে রাজ্জাকের রাজত্ব

উইকেটে ঘাস আছে যথেষ্ট। প্রথম দেড় ঘণ্টা তাই পেসারদের দিয়েই চালিয়ে নিলেন খুলনা অধিনায়ক। সাফল্য মিলল সামান্য। বাধ্য হয়ে স্পিনার হয়েও নিজে এলেন বোলিংয়ে। কাজ হলো জাদুমন্ত্রের মতো। সেই জাদুর রেশ থাকল প্রায় দিনজুড়ে। ৬০০ উইকেটের উচ্চতায় ওঠার দিনটি ৭ উইকেট নিয়ে স্মরণীয় করে রাখলেন আব্দুর রাজ্জাক।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Nov 2019, 12:23 PM
Updated : 2 Nov 2019, 04:20 PM

বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৬০০ উইকেটের মাইলফলক পেরিয়েছেন রাজ্জাক। খুলনার অভিজ্ঞ স্পিনারের বিধ্বংসী বোলিংয়ে জাতীয় লিগের প্রথম স্তরের ম্যাচে মিরপুরে শনিবার ২২৪ রানে গুটিয়ে গেছে রংপুর।

৬৯ রানে ৭ উইকেট নিয়েছেন রাজ্জাক। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫ উইকেটের স্বাদ পেলেন ৩৯তম বারের মতো। উইকেট সংখ্যার মতো এখানেও তার ধারেকাছে নেই কেউ।

রংপুরের শুরুটা খুব খারাপ ছিল না। দুই ওপেনার মেহেদি মারুফ ও মাহমুদুল হাসান রান তুলছিলেন ওভারপ্রতি চার করে। ৫ চারে ২৪ রান করা মাহমুদুলকে ফিরিয়ে ৩৮ রানের জুটি ভাঙেন আব্দুল হালিম।

প্রথম উইকেট পেস বোলিংয়ে এলেও এরপর পেসাররা আর কার্যকর হতে পারছিলেন না। ২০তম ওভারে বল হাতে নিয়েই রাজ্জাক ফেরান ২৬ রান করা মারুফকে।

দুই ওপেনারের পথেই হেঁটেছেন রংপুরের পরের ব্যাটসম্যানরা। সম্ভাবনা জাগিয়েও বড় স্কোর গড়তে পারেননি সোহরাওয়ার্দী শুভ, নাসির হোসেন, আরিফুল হকরা।

ইনিংসে সর্বোচ্চ ৫৯ রানের জুটি গড়েন চতুর্থ উইকেটে নাসির ও সোহরাওয়ার্দী। ৪০ রান করা নাসিরকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন সেই রাজ্জাকই।

৩৪ রান করে সোহরাওয়ার্দী ফেরেন মেহেদি হাসানের অফ স্পিনে, লেগ স্টাম্পের দিকে সরে দারুণ ক্যাচ নেন নুরুল হাসান সোহান। রাজ্জাকের বলেই পরে সোহানের দারুণ স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়ে ফেরেন ২৭ রান করা আরিফুল।

৬০০ ছুঁতে রাজ্জাকের প্রয়োজন ছিল ৬ উইকেট। রবিউল হককে বোল্ড করে এই বাঁহাতি স্পিনার স্পর্শ করেন কাঙ্ক্ষিত মাইলফলক। তার উদযাপনে সামিল হয় সব সতীর্থ।

রংপুরের রান তখন ৯ উইকেটে ১৭৪। সেখান থেকেই প্রতি আক্রমণে দারুণ এক ক্যামিও খেলেন রিশাদ হোসেন। দশ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা লেগ স্পিনার মেহেদিকে মারেন দুটি ছক্কা, রাজ্জাককেও দুটি। আরেকটি ছক্কায় ওড়ান পেসার রুবেল হোসেনকে।

শেষ জুটিতে রংপুর তোলে ৫০ রান। ৫ ছক্কায় ৩২ বলে ৪২ করে রিশাদ বোল্ড হন রাজ্জাককে স্লগ করতে গিয়ে।  প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার মাঠ ছাড়েন রাজার মতোই।

শেষ বিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমে খুলনার শুরুটাও অবশ্য ভালো হয়নি। তাদেরকে নাড়িয়ে দিয়েছেন রংপুরর তরুণ পেসার রবিউল। ভারত সফরের টেস্ট দলে ফেরা ইমরুল কায়েস ক্যাচ দিয়েছেন স্লিপে। মইনুল ইসলাম হয়েছেন বোল্ড।

তবু সব মিলিয়ে, দিনের নায়ক কেবলই রাজ্জাক।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রংপুর: ৮১.১ ওভারে ২২৪ (মারুফ ২৬, মাহমুদুল ২৪, সোহরাওয়ার্দী ৩৪, নাঈম ১৪, নাসির ৪০, আরিফুল ২৭, ধীমান ০, সাজেদুল ০, রবিউল ৭, রিশাদ ৪২, মুকিদুল ৭*; রুবেল ১৪-৩-৪৬-০, হালিম ১০-৩-২৭-১, জিয়াউর ৬-৩-১০-০, রাজ্জাক ২৪.১-৭-৬৯-৭, মেহেদি ২৪-৯-৫৪-২, মইনুল ৩-০-১৮-০)।

খুলনা: ৯ ওভারে ২৪/২ (এনামুল ১৪, ইমরুল ৬, মইনুল ২, তুষার ১*; রবিউল ৫-১-৯-২, মুকিদুল ৪-১-১৫-০)।