ক্যারিয়ারের নানা সময়ে তিন ফরম্যাটে নানা পজিশনে ব্যাট করতে হয়েছে মাহমুদউল্লাহকে। আপাদমস্তক দল অন্তঃপ্রাণ এই ক্রিকেটার সব মেনে নিয়েছেন হাসিমুখে। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে চার নম্বর ব্যাট করে বিশ্ব আসর মাতানোর সামর্থ্য তিনি দেখিয়েছেন। তবে রঙিন পোশাকে এখন তার ভূমিকা ফিনিশারের।
আগে ব্যাট করলে তাড়া থাকে শেষ দিকে দ্রুত রান করার। পরে ব্যাট করলে দায়িত্ব থাকে দলকে জিতিয়ে মাথা উঁচু করে ফেরার। তবে বাংলাদেশ দলে এর বাইরেও আরেকটি বাস্তবতার মুখোমুখি তাকে হতে হয়েছে অনেকবারই। টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় উইকেটে যেতে হয়েছে তাকে প্রত্যাশার আগেই। হয়ত শুরুতেই হারিয়ে গেছে ৪-৫ উইকেট। কিংবা শুরু ভালো হলেও মাঝপথে হারিয়ে পথ। মাহমুদউল্লাহর কাজ তখন ইনিংস টেনে নেওয়া, উইকেট ধরে রেখেই রানের গতি ধরে রাখা বা বাড়ানো এবং শেষটা দারুণভাবে করে আসা।
যেমন করতে হলো রোববার আবু ধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে। উইকেটে যখন গেলেন, ৮৭ রানে ৫ উইকেটে হারিয়ে বিপর্যন্ত তখন দল। উইকেটে সঙ্গী ইমরুল কায়েস, যিনি ছয় নম্বরে ব্যাট করছিলেন প্রথমবার। সেই ইমরুলকে নিয়েই গড়লেন দুর্দান্ত জুটি। সেই জুটিতে অগ্রণী ছিলেন মাহমুদউল্লাহই। ইমরুল আগলে ছিলেন একটা পাশ।
খাদের কিনারা থেকে দলকে টেনে তোলার তার চলমান অভিযানে এটি নতুন আরেকটি জয় মাত্র। বিপর্যয়ে দলের ত্রাতা হয়েছেন তিনি আগেও অনেকবার। এজন্যই দলে তার পরিচয় ‘ক্রাইসিস ম্যান’ হিসেবে। কিভাবে সম্ভব হয় প্রতিনিয়ত চাপকে জয় করা? মাহমুদউল্লাহ শোনালেন উপভোগের গল্প।
“মনে হয়, আমি চাপ উপভোগ করি। চাপ হয়তো আমাকে ছন্দ পাওয়ার, নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ করে দেয়। দলকে ফিরিয়ে দেওয়ার তাড়নাও থাকে। চাপ সবসময়ই থাকে, সেটাকে সামলে নেওয়ার পথ বের করে নিতে হয়।”
পথ তিনি বের করে নিয়েছেন বটে। চাপে চুপসে যাননি, বরং শিখেছেন পাল্টা জবাব দিতে। উপভোগ করছেন সেই জবাব দেওয়া। তিনি সফল সেখানেই। তার বিশেষত্বই এখানেই।
দল তার কাছে চায় এটুকুই। হয়ত তার বড় বড় ইনিংস নিয়মিত খেলার সুযোগ কম। হয়ত নায়ক হওয়ার হাতছানি কম। তবে দল জানে তার ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। দলে তাই তিনি মহামূল্য।