ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙা জয়

অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে দলকে পথ দেখালেন তামিম ইকবাল। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিলেন সাকিব আল হাসান। উইকেটের সামনে-পিছনে ভালো একটি দিন কাটালেন মুশফিকুর রহিম। বোলিংয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। টেস্টের দুঃস্বপ্ন ভুলে দারুণ এক জয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করলো বাংলাদেশ।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2018, 01:09 PM
Updated : 22 July 2018, 10:03 PM

৪৮ রানের জয়

২০১৪ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সব ম্যাচ হেরেছিল বাংলাদেশ। এবারও দুই টেস্টে হারে বড় ব্যবধানে। সেই ব্যর্থতা পেছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়াল দল। ৯ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজে জিতল কোনো ম্যাচ।

প্রথম ওয়ানডেতে ৪৮ রানে জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। অতিথিদের ২৭৯ রান তাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯ উইকেটে করে ২৩১ রান।

৯.২ ওভারে স্বাগতিকদের দশম উইকেট জুটি ভাঙতে পারেনি বাংলাদেশ। ফিল্ডারদের ব্যর্থতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেবেন্দ্র বিশু ও আলজোরি জোসেফ গড়েন ৫৯ রানের জুটি। ম্যাচে স্বাগতিকদের এটাই একমাত্র পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৭৯/৪ (তামিম ১৩০*, এনামুল ০, সাকিব ৯৭, সাব্বির ৩, মুশফিক ৩০, মাহমুদউল্লাহ ৪*; রাসেল ১/৬২, হোল্ডার ১/৪৭, জোসেফ ০/৫৭ নার্স ০/৩৯, বিশু ২/৫২, মোহাম্মদ ০/১৫)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ২৩১/৯ (গেইল ৪০, লুইস ১৭, হোপ ৬, হেটমায়ার ৫২, মোহামেদ ১০, হোল্ডার ১৭, পাওয়েল ০, রাসেল ১৩, নার্স ৭, বিশু ২৯*, জোসেফ ২৯*; মাশরাফি ৪/৩৭, মিরাজ ১/৩৭, রুবেল ১/৫২, মোসাদ্দেক ০/২২, মুস্তাফিজ ২/৩৫, সাকিব ০/৪৩)

মাশরাফির চতুর্থ শিকার নার্স

আন্দ্রে রাসেলের পর মাশরাফি বিন মুর্তজার স্লোয়ারে ফিরে গেলেন অ্যাশলি নার্স। অধিনায়কের চতুর্থ উইকেটে জয়ের দোরগোড়ায় বাংলাদেশ।

অফ কাটার বুঝতেই পারেননি নার্স। নিজের জোনে বল পেয়ে উড়াতে চেয়েছিলেন লং অন দিয়ে। টাইমিং হয়নি, আরেকটি সহজ ক্যাচ মুঠোয় নেন মাহমুদউল্লাহ।

১১ বলে ৭ রান করে ফিরেন নার্স। ৪১ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১৭৭/৯। ক্রিজে দেবেন্দ্র বিশুর সঙ্গী আলজারি জোসেফ।

দুই স্পেলে ১০ ওভারের কোটা শেষ করেন মাশরাফি। ৩৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে দলকে নিয়ে যান বড় জয়ের পথে।

বিপজ্জনক রাসেলকে ফেরালেন মাশরাফি

মুস্তাফিজুর রহমানকে ছক্কা-চার হাঁকিয়ে ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন আন্দ্রে রাসেল। তবে বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানকে দ্রুত বিদায় করে দলকে জয়ের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। রাসেল বাংলাদেশ অধিনায়কের তৃতীয় শিকার।

মাশরাফির গতি পরিবর্তন একেবারেই বুঝতে পারেননি রাসেল। সেই ওভারেই একটি স্লোয়ার বলে চড়াও হতে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি। পরে একই চেষ্টা করতে গিয়ে বলে-ব্যাটে করতে পারেন কিন্তু বল উঠে যায় আকাশে। লং অনে ক্যাচ তালুবন্দি করেন মাহমুদউল্লাহ।

৩৯ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১৬৩/৮। ক্রিজে অ্যাশলি নার্সের সঙ্গী দেবেন্দ্র বিশু। 

অধিনায়ককে ফেরালেন অধিনায়ক

আগের বলে লং দিয়ে বিশাল ছক্কা হাঁকালেন জেসন হোল্ডার, পরের বলে মাশরাফি বিন মুর্তজা ফিরিয়ে দিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ককে।

মাশরাফির স্লোয়ার বুঝতে পারেননি হোল্ডার। শট খেলে ফেলেন আগেভাগেই। বেশ ওপরে উঠে যাওয়া ক্যাচ মুঠোয় নেন মোসাদ্দেক হোসেন।

১৮ বলে ১৭ রান করে ফিরেন হোল্ডার। ৩৬.৫ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১৫০/৭। ক্রিজে আন্দ্রে রাসেলের সঙ্গী অ্যাশলি নার্স।

মুস্তাফিজের জোড়া আঘাত

শিমরন হেটমায়ারকে বিদায় করার পরের বলে রোভম্যান পাওয়ালকে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ দিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান।

বাঁহাতি এতক্ষণ বল করছিলেন স্টাম্পের চেয়ে দূরে থেকে। পাওয়েলকে বল করে স্টাম্প ঘেঁষে। অ্যাঙ্গেলে বেরিয়ে যাওয়া বলে মুশফিকুর রহিমকে সহজ ক্যাচ দেন পাওয়েল।

মুস্তাফিজের হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেন ২০১৫ সালের পর প্রথমবারের মতো ওয়ানডে খেলতে নামা আন্দ্রে রাসেল।

৩৬ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১৪২/৬। জেসন হোল্ডার ১০ ও রাসেল ১ রানে খেলছেন।

হেটমায়ারকে বিদায় করলেন মুস্তাফিজ

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টানছিলেন শিমরন হেটমায়ার। আক্রমণে ফিরে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে বিদায় করেছেন মুস্তাফিজুর রহমান।

বাঁহাতি পেসারে অফ স্টাম্পের বাইরের কাটারে কাভারে সহজ ক্যাচ তুলে দেন হেটমায়ার। ৭৮ বলে ৫ চারে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান করেন ৫২ রান।

জেসন মোহামেদকে ফেরালেন মিরাজ

আক্রমণে ফিরে দ্বিতীয় ওভারে আঘাত হেনেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ফিরিয়ে দিয়েছেন জেসন মোহামেদকে।

বেরিয়ে এসে মিরাজের অফ স্পিন উড়াতে চেয়েছিলেন মোহামেদ। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে আসা ক্যাচ গ্লাভসে জমান উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম। ১৯ বলে ১০ রান করে ফিরে যান মোহামেদ।

২৮.২ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১১১/৪। ক্রিজে শিমরন হেটমায়ারের সঙ্গী জেসন হোল্ডার।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের একশ

বাংলাদেশের দেখানো পথ ধরেই যেন এগিয়ে চলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অতিথিদের মতো তারাও রান তিন অঙ্কে নিয়ে গেছে ২৬তম ওভারে।

২৬ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১০৩/৩। শিমরন হেটমায়ার ৩৩ ও জেসন মোহাম্মদ ৬ রানে ব্যাট করছেন। জয়ের জন্য আরও ১৭৭ রান চাই স্বাগতিকদের।

রান আউট গেইল

রান আউট হয়ে ফিরে গেলেন বিপজ্জনক ক্রিস গেইল। মন্থর শুরু করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারালো তৃতীয় উইকেট।

মোসাদ্দেক হোসেনের অফ স্পিন শর্ট থার্ড ম্যানে খেলেন শিমরন হেটমায়ার। দ্রুত একটি রান নিতে ছুটেন গেইল। কিন্তু সাড়া দেননি হেটমায়ার। ততক্ষণে ছুটে গিয়ে বোলারের কাছে বল থ্রো করেন মাহমুদউল্লাহ। তার থ্রো খুব একটা ভালো না হলেও বাকিটা সহজেই সারেন মোসাদ্দেক।

৬০ বলে এক চার ও দুই ছক্কায় ৪০ রান করে বিদায় নেন গেইল। তার ফেরার সময় ২১.৩ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ৮১/৩। ক্রিজে হেটমায়ারের সঙ্গী জেসন মোহাম্মদ।

বোলিংয়ে এসেই রুবেলের আঘাত

ত্রয়োদশ ওভারে বোলিংয়ে এসেই আঘাত হেনেছেন রুবেল হোসেন। ফিরিয়ে দিয়েছেন শেই হোপকে।

স্টাম্পের বল ফ্লিক করার চেষ্টায় ব্যাটে খেলতে পারেননি হোপ। ফিরে যান এলবিডব্লিউ হয়ে। ১১ বলে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান করেন ৬ রান। রিভিউ নিলে বেঁচে যেতেন তিনি। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা গেছে বল যেত লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে।

রিভিউ না নিয়ে ফিরে যান হোপ। অন্য দিকে, মেহেদী হাসান মিরাজের করা আগের ওভারের শেষ বলে রিভিউ নিলে ক্রিস গেইলের উইকেট পেত বাংলাদেশ। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা গেছে বল আঘাত হানতো লেগ স্টাম্পে।

মাশরাফি বিন মুর্তজা রিভিউ নেওয়ার পরামর্শ চাইলে ‘না’ করেন মুশফিকুর রহিম। বোলারের সঙ্গে অনেকটা সময় কথা বলেন অধিনায়ক। তবে মিরাজ আত্মবিশ্বাসী না থাকায় রিভিউ নেননি তিনি।

১৪ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ৪৮/২। গেইল ২১ ও শিমরন হেটমায়ার ৩ রানে ব্যাট করছেন।

পাওয়ার প্লেতে মাশরাফি-মিরাজের আঁটসাঁট বোলিং

পাওয়ার প্লে শেষে দুই দলই সমান। বাংলাদেশের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজও প্রথম ১০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে তুলে ৩১ রান।

ক্রিস গেইল ১২ ও শেই হোপ ২ রানে ব্যাট করছেন।

এক প্রান্তে একের পর এক কাটার দিয়ে গেইল ও এভিন লুইসকে ডানা মেলতে দেননি মাশরাফি বিন মুর্তজা। আরেক প্রান্তে দুই বাঁহাতি ওপেনারকে চাপে রাখেন অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ।

গেইল অনেকবার মাশরাফিকে ড্রাইভ করতে গিয়ে বলের নাগাল পাননি। ফাঁস কিছুটা আলগা করতে বাংলাদেশ অধিনায়ককে উড়ানোর চেষ্টায় ফিরে যান আরেক ওপেনার লুইস।

প্রথম আঘাত মাশরাফির

দুই প্রান্তে আঁটসাঁট বোলিংয়ের পুরস্কার মিললো নবম ওভারে। মাশরাফি বিন মুর্তজা ফিরিয়ে দিলেন এভিন লুইসকে।

মাশরাফিকে লং অফ দিয়ে উড়াতে চেয়েছিলেন লুইস। বাঁহাতি ওপেনার টাইমিং করতে পারেননি, পার করতে পারেননি মিড অফের ফিল্ডারকে। একটু পিছিয়ে চমৎকার ক্যাচ নেন মাহমুদউল্লাহ।

২৯ বলে ১৭ রান করে ফিরে যান লুইস। ৮.৪ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ২৭/১। ক্রিজে ক্রিস গেইলের সঙ্গী শেই হোপ। জয়ের জন্য স্বাগতিকদের চাই আরও ২৫৩ রান।

ওয়েস্ট ইন্ডিজে স্বাগতিকদের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ

হাতে অনেক উইকেট থাকলেও শট খেলছিলেন না তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান। সেঞ্চুরির আশা জাগানো দুই ব্যাটসম্যান খেলছিলেন সিঙ্গেলস নিয়ে। তিন অঙ্কে যেতে পারেননি সাকিব। তামিমের ব্যাট থেকে আসে বাংলাদেশের মন্থরতম সেঞ্চুরি। তবুও ওয়েস্ট ইন্ডিজে স্বাগতিকদের বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ পেয়ে গেছে বাংলাদেশ।

৪ উইকেটে ২৭৯ রান করে বাংলাদেশ। ১৬০ বলে ১০ চার ও তিন ছক্কায় ১৩০ রানে অপরাজিত থাকেন তামিম।

শেষ ১৪ বলে ৫১ রান তুলে নিয়ে এত দূর যায় বাংলাদেশ। দুই থিতু ব্যাটসম্যান থাকার পরও মন্থর ব্যাটিংয়ে এক সময়ে আড়াইশ রানই ছিল দূরের পথ।

মাত্র ১১ বলে ৩০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন মুশফিক। চার হাঁকিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ করেন মাহমুদউল্লাহ।

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৭৯/৪ (তামিম ১৩০*, এনামুল ০, সাকিব ৯৭, সাব্বির ৩, মুশফিক ৩০, মাহমুদউল্লাহ ৪*; রাসেল ১/৬২, হোল্ডার ১/৪৭, জোসেফ ০/৫৭ নার্স ০/৩৯, বিশু ২/৫২, মোহাম্মদ ০/১৫)

ঝড় তুলে ফিরলেন মুশফিক
 
শেষের দিকে কেমন ব্যাটিং দরকার ছিল সতীর্থদের তাই যেন দেখালেন মুশফিকুর রহিম। টর্নেডো ইনিংস খেলে দলকে এনে দিলেন লড়াইয়ের পুঁজি। 
 
১১ বলে তিন চার ও দু্ই ছক্কায় ৩০ রান করে ফিরে যান মুশফিক। আন্দ্রে রাসেলের বলে ফাইন লেগে দিয়ে বাউন্ডারি তুলে নিতে চেয়েছিলেন তিনি। ঠিক মতো খেলতে পারেননি, ক্যাচ যায় দেবেন্দ্র বিশুর কাছে।

হোল্ডারের ওভারে মুশফিক ঝড়
 
পাঁচে নেমে ঝড় তুলেছেন মুশফিকুর রহিম। তার ব্যাটে আড়াইশ পার হয়েছে বাংলাদেশের সংগ্রহ। 
 
জেসন হোল্ডারের করা ৪৯তম ওভারে দুটি করে ছক্কা-চার আর একটি দুই রান নেন মুশফিক। ওভার থেকে সব মিলিয়ে আসে ২২ রান।  
 
এতক্ষণ মন্থর ব্যাটিং করা তামিমও পরের ওভারে আন্দ্রে রাসেলকে হাঁকান দুটি ছক্কা। মাত্র ১৯ বলে পঞ্চাশ রানে যায় জুটির রান।

বিতর্কিত সিদ্ধান্তে আউট সাব্বির
 
আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ফিরে গেছেন সাব্বির রহমান। পয়েন্টে দাঁড়ানো লেগ আম্পায়ার জোয়েল উইলসন স্টাম্পিংয়ে আবেদনের সাড়া দিয়ে সরাসরি আঙুল তুলে দেন।
 
রিপ্লেতে দেখা যায় উইকেটকিপার শেই হোপ যখন বেলস ফেলে দেন তখন সাব্বিরের পা ভেতরেই ছিল। বেলস পরে যাওয়ার পর ভারসাম্য হারান ডানহাতি ব্যাটসম্যান। পা তখন বাইরে যায়। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে না পাঠিয়ে আউট দিয়ে দেন উইলসন।

বাংলাদেশের মন্থরতম সেঞ্চুরি তামিমের
 
ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরি পেয়েছেন তামিম ইকবাল। তিন অঙ্কের দেখা পেতে বাঁহাতি এই ওপেনারের লেগেছে ১৪৬ বল। ওয়ানডেতে এটাই বাংলাদেশের মন্থরতম সেঞ্চুরি। 
 
তিন অঙ্কে যেতে তামিম হাঁকান ৭টি চার ও একটি ছক্কা।

সাকিবের বিদায়ে ভাঙল জুটি
 
সেঞ্চুরি পাওয়া হল না সাকিব আল হাসানের। দেবেন্দ্র বিশুকে ঠিক মতো সুইপ করতে না পেরে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। 
 
সাকিবের ব্যাটের কানায় লেগে সহজ ক্যাচ যায় শিমরন হেটমায়ারের হাতে। ১২১ বলে ৬টি চারে ৯৭ রান করে ফিরে যান সাকিব। 
 
৪৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২১১/২। ক্রিজে তামিমের সঙ্গী সাব্বির রহমান।

তামিম-সাকিবের দুইশ রানের জুটি
 
তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের ব্যাটে নিজেদের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয় দুইশ ছোঁয়া জুটি পেয়েছে বাংলাদেশ। 
 
৪৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২০৩/১। জুটির রান ২০২। তামিম ৯৩ ও সাকিব ৯৬ রানে খেলছেন। 
 
বাংলাদেশের আগের দুইশ রানের জুটিতেও ছিলেন সাকিব। সেবার তার সঙ্গী ছিলেন মাহমুদউল্লাহ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেরা জুটি
 
তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের দারুণ ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজেদের সেরা জুটি পেয়েছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আগের সেরা জুটি ছিল ১৭৪ রানের। ২০১২ সালে খুলনায় তৃতীয় উইকেটে সেই জুটি গড়েছিলেন এনামুল হক ও মুশফিকুর রহিম। 
 
৩৯তম ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১৮১/১। জুটির রান ১৮০। 
 
ওয়ানডেতে এরচেয়ে বড় কেবল একটি জুটি আছে বাংলাদেশের। গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে সাকিব গড়েছিলেন ২২৪ রানের জুটি।

তামিম-সাকিবের জুটিতে রেকর্ড
 
চলতি বছরের শুরু থেকে তিনে ব্যাট করছেন সাকিব আল হাসান। তাই দ্বিতীয় উইকেটে জুটি বাঁধছেন তামিম ইকবালের সঙ্গে। মাত্র ৫ ইনিংসেই তাদের জুটিতে মিলেছে সাফল্যের ইঙ্গিত।
 
দ্বিতীয় উইকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জুটির রেকর্ড এখন তামিম-সাকিবের অধিকারে। ২০১০ সালে ডাম্বুলায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ইমরুল কায়েস ও জুনায়েদ সিদ্দিকের ১৬০ রান ছাড়িয়ে গেছেন তারা।
 
৩৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১৬৩/১। দুই জনের জুটির রান ১৬২। তামিম ৭৬ ও সাকিব ৭৮ রানে খেলছেন।
 
দ্বিতীয় উইকেটে এটি তামিম-সাকিবের দ্বিতীয় শতরানের জুটি। এছাড়া একটি ৯৯ ও একটি ৭৮ রানের জুটি আছে তাদের।
 
আগে তৃতীয় কিংবা চতুর্থ উইকেটেই বেশি জুটি বাঁধতেন তামিম-সাকিব। সেখানে তাদের শতরানের জুটি ছিল একটিই। গত বছর ডাম্বুলায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চতুর্থ উইকেটে গড়েছিলেন ১৪৪ রানের জুটি।

তামিম-সাকিবের ফিফটি

দুই জনের শুরুটা ছিল দুই রকম। নিজেকে পুরোপুরি গুটিয়ে রেখেছিলেন তামিম ইকবাল। প্রথম ২৪ বলে করেছিলেন মোটে ৪ রান। অন্য দিকে দ্বিতীয় ওভারে ক্রিজে আসার পর থেকে ঝুঁকি নিয়ে শট খেলতে শুরু করেন সাকিব আল হাসান।

দুই ব্যাটসম্যানই পেয়েছেন জীবন। কঠিন সময় পার করে দেওয়ার পর দুই জনই খেলছেন সহজাত ক্রিকেট। কাছাকাছি সময়ে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন দুই জনেই।

জেসন মোহাম্মেদের বলে ১ রান নিয়ে ক্যারিয়ারের ৪২তম ফিফটিতে পৌঁছান তামিম। এই সময়ে তার ব্যাট থেকে আসে চারটি চার ও একটি ছক্কা।

৮৭ বলে আসে তামিমের পঞ্চাশ, সাকিবের লাগে ৬৮ বল। দেবেন্দ্র বিশুকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিজের ৩৮তম ফিফটিতে পৌঁছান বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার।

২৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১২০/১। তামিম ৫৬ ও সাকিব ৫৫ রানে খেলছেন।

তামিম-সাকিব জুটির একশ

নড়বড়ে শুরুর পর নিজেদের সহজাত ক্রিকেট খেলতে শুরু করেছেন তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। ভাগ্যকে পাশে পাওয়া দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান গড়েছেন শতরানের জুটি। তাদের দৃঢ়তায় এগোচ্ছে বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় ওভারে এনামুল হক ফিরে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১ রান। সেখান থেকে ২৬তম ওভারে দলের সংগ্রহ তিন অঙ্কে নিয়ে গেছেন তামিম-সাকিব। ১৪৭ বলে গড়েছেন শতরানের জুটি।

তামিমের পর জীবন পেলেন সাকিব

সুযোগ হাতছাড়া করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিল্ডাররা। জীবন দিয়েছেন তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানকে।

একাদশ ওভারে আলজারি জোসেফের বলে কাভারে তামিমের কঠিন ক্যাচ মুঠোয় নিতে পারেননি ফিল্ডার। সে সময় বাঁহাতি ওপেনার খেলছিলেন ১৭ রানে।

চতুর্দশ ওভারে একটুর জন্য বেঁচে যান তামিম। অ্যাশলি নার্সের বল তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে উইকেটরক্ষকের ঊরুতে লেগে দিক পাল্টানোয় বেঁচে যান তিনি। একটুর জন্য ক্যাচ নাগালে পাননি প্রথম স্লিপে থাকা ক্রিস গেইল।

পরের ওভারেই জীবন পান সাকিব। জোসেফের বলে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। কিন্তু হাতে জমাতে পারেননি গেইল। সে সময় ১৫ রানে ব্যাট করছিলেন সাকিব।

বাংলাদেশের মন্থর শুরু

পাওয়ার প্লের সুবিধা কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। শুরুতেই এনামুল হককে হারানো অতিথিদের চাপে রাখেন জেসন হোল্ডার ও আন্দ্রে রাসেল।

পাওয়ার প্লের ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৩১/১। তামিম ইকবাল ১৭ ও সাকিব আল হাসান ১১ রানে ব্যাট করছেন।

রানের জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে তামিম-সাকিবকে। প্রথম বাউন্ডারি আসে নবম ওভারে। প্রথম ২৪ বলে মোটে চার রান নিতে পেরেছিলেন তামিম। নবম ওভারে রাসেলকে তিনটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রানের গতি একটু বাড়ান তিনি।

সাকিব মাঝ ব্যাটে খেলতে পেরেছেন কমই। দুইবার ব্যাটের কানায় লাগার পর একটুর জন্য বোল্ড হননি।

বাজে শুরুর পর বৃষ্টির বাধা

ছবি: ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ

আগে থেকেই মেঘে ঢাকা ছিল আকাশ। বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নামার খানিক পর শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। বৃষ্টির দাপট বাড়ায় পঞ্চম ওভারে বন্ধ হয়ে যায় খেলা। তখন ৪.৪ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ১০/১। মিনিট বিশেক বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয়েছে খেলা।

শুরুতেই ফিরলেন এনামুল

ছবি: ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ

প্রথম সুযোগে ব্যর্থ এনামুল হক। রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নিয়েছেন দলে ফেরা তরুণ এই ওপেনার।

বল হাতে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশকে ভোগানো জেসন হোল্ডার আঘাত হানেন ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে। অফ স্টাম্পের বাইরে পরে আরও বেরিয়ে যাওয়া বলে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দেন এনামুল।

প্রথম উইকেট হারানোর সময় ১.৩ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ১/১। ক্রিজে তামিম ইকবালের সঙ্গী সাকিব আল হাসান।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে রাসেল

২০১৫ সালের নভেম্বরের পর প্রথমবারের মতো দেশের হয়ে ওয়ানডে খেলতে নামছেন অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশে আছেন বিস্ফোরক ওপেনার ক্রিস গেইল। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ: জেসন হোল্ডার, দেবেন্দ্র বিশু, ক্রিস গেইল, শিমরন হেটমায়ার, শেই হোপ, আলজারি জোসেফ, এভিন লুইস, জেসন মোহাম্মদ, অ্যাশলি নার্স, রোভম্যান পাওয়েল, আন্দ্রে রাসেল।

ফিরলেন মুস্তাফিজ, এনামুল

চোট কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে জায়গা হারানো ওপেনার এনামুল হক ফিরেছেন একাদশে।

তিন পেসার নিয়ে খেলছে বাংলাদেশ। মাশরাফি বিন মুর্তজা ও মুস্তাফিজের সঙ্গী রুবেল হোসেন। স্পিন বোলিংয়ে সাকিব আল হাসানের সঙ্গী মেহেদী হাসান মিরাজ।

বাংলাদেশ একাদশ: মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, এনামুল হক, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

ছবি: ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ

টস ভাগ্যকে পাশে পেলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। গায়নার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে রোববার প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ অধিনায়ক টস জিতে নিয়েছেন ব্যাটিং।

তামিম ইকবাল-মুশফিকুর রহিমদের কাছ থেকে দায়িত্বশীল ব্যাটিং চান মাশরাফি। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের সঙ্গে ব্যাট হাতে অবদান দেখতে চান এনামুল হক, সাব্বির রহমান ও মোসাদ্দেক হোসেনের কাছ থেকে। অধিনায়কের বিশ্বাস, লড়াইয়ের পুঁজি পেলে বাকিটা ঠিকঠাক মতো সারার সামর্থ্য বোলারদের আছে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন হোল্ডার মনে করেন, শুরুতে উইকেট থেকে খানিকটা সহায়তা পাবেন বোলাররা। তাই টস জিতলে বোলিং নিতে চেয়েছিলেন তিনি। টস হারলেও পূরণ হয়ে হয়েছে তার চাওয়া।