জাকির বুঝে গিয়েছিলেন, দিনটি তারই

মাত্রই দারুণ একটি চার মেরেছিলেন। পরের বলে আবারও একই প্রচেষ্টা। এবার মিড উইকেটে ক্যাচ। জাকির হাসান ফিরছিলেন মাথা নিচু করে। থামালেন আম্পায়ার। অপেক্ষা তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের। জানা গেল, বলটি ছিল ‘নো বল’। বেঁচে গেলেন জাকির। বুঝে গেলেন, দিনটি তার!

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2017, 02:22 PM
Updated : 17 Nov 2017, 02:22 PM

জাকির তখন ছিলেন ১৬ রানে। বেঁচে যাওয়ার পর আরও উত্তাল তার ব্যাট; একই সঙ্গে নিখুঁত। আর কোনো সুযোগই দিলেন না। ২৬ বলে অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংসে জিতিয়েছেন দলকে। সিলেট সিক্সার্সকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে রাজশাহী।

১৯ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান ম্যাচ শেষে বললেন, নতুন জীবন পেয়েই বুঝে গিয়েছিলেন, দিনটি তারই।

“তখনই মনে হয়েছে যে আজ আমার দিন। ভাগ্য আমার সাথে ছিল। সামনেও এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চেষ্টা করবো।”

এবারের বিপিএলে এটিই ছিল জাকিরের প্রথম ম্যাচ। গত বিপিএলে ছিলেন চিটাগং ভাইকিংসে। খুব বেশি সুযোগ পাননি, যতটুকু পেয়েছিলেন, কাজে লাগাতে পারেননি। সব মিলিয়ে এর আগে টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন ১০টি। ৫ বার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে তার সর্বোচ্চ রান ছিল ৯।

তবে এর পর জাকিরের ক্যারিয়ার এগিয়ে গেছে অনেকটুকু। ঘরোয়া ক্রিকেটে বড় দৈর্ঘ্যের পাশাপাশি রান করেছেন একদিনের সংস্করণে। ছিলেন হাই পারফরম্যান্স স্কোয়াডে, খেলেছেন বাংলাদেশ ‘এ’ দলে। সেই উন্নতির প্রমাণ মিলল এবার বিপিএলে প্রথম ম্যাচেই। জাকির জানালেন, কোচদের পরামর্শও তার কাজে দিয়েছে দারুণভাবে।

“গত বছর আমি খুব একটা ভালো খেলিনি। ওইটা নিয়ে আমি আমার স্যারদের সাথে কথা বলেছি। উনারা বলেছিলেন, আমার শক্তির জায়গা যেটা, সেটা নিয়ে কাজ করতে। আমি সেটাই করেছি। শক্তির জায়গাটা ধরেই আমি অনুশীলন করেছি। আজকে চেষ্টা করেছি নিজের শক্তির জায়গার বাইরে না গিয়ে খেলার।”

সিলেটের সন্তান তিনি, জাতীয় লিগে সিলেটের হয়েই খেলেন। বিপিএলে নিজ এলাকার দলে খেলতে পারছেন না। তাই খুব করে চাইছিলেন, সিলেটের বিপক্ষে ভালো খেলতে। চাওয়া পূরণ করতে পেরে তরুণ ব্যাটসম্যান ছিলেন উচ্ছ্বসিত।

“মজার ব্যাপার যে সিলেটের বিপক্ষেই এমন একটা ইনিংস খেললাম। আমার একটা স্বপ্ন ছিল, ইচ্ছে ছিল যে সিলেটের বিপক্ষে ভালো খেলব। সফল হয়েছি বলে খুব খুশি লাগছে।”

গত বছর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে তৃতীয় হওয়া দলের উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনি। গ্লাভস হাতে দারুণ। আবার আউটফিল্ডে ফিল্ডার হিসেবেও তিনি দেশের সেরাদের একজন। তবে মূল কাজ ব্যাটিং। বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকে এগিয়ে আসছেন বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে। যেতে চান পরে ধাপটিতেও।

“এখন যেহেতু হাই পারফরম্যান্স দলে আছি, সেভাবেই আমি প্রস্তুতি নেয়ার চেষ্টা করছি যাতে আমি পরবর্তী লেভেলে গেলে ভালো করতে পারি। সাথে মানসিকভাবেও প্রস্তুতি নিচ্ছি।’