আলোকে স্বল্পতায় আগেই সমাপ্তি
প্রথম ইনিংসের তুলনায় দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে বাংলাদেশের বোলিং ভালো হয়েছে ঢের। দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানদের খুব স্বস্তিতে ব্যাট করতে দেননি মুস্তাফিজুর রহমান ও শফিউল ইসলাম।
স্থানীয় সময় বিকেল পৌনে পাঁচটায় বন্ধ খেলা। দিনের খেলার তখনও বাকি ছিল ১৬.১ ওভার। প্রকৃতিকে একটু হলেও পাশে পেল বাংলাদেশ।
তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ২ উইকেটে ৫৪। লিড ২৩০ রানের। ১৭ রানে অপরাজিত হাশিম আমলা, ৩ রানে টেম্বা বাভুমা।
মুস্তাফিজের কাটারে আউট মারক্রাম
ওভার দা উইকেটে বল করা মুস্তাফিজকে শাফল কলে অনায়াসে খেলছিলেন এইডেন মারক্রাম। বাঁহাতি পেসার বদলে লেন অ্যাঙ্গেল। এলেন রাউন্ড দা উইকেট। সাফল্য হাতে নাতে।
বলটি ছিল অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে। শট খেলার আমন্ত্রণ। তাতে সাড়াও দিলেন মারক্রাম। কিন্তু সেটি যে সাধারণ গতির ডেলিভারি নয়, ১২৪ কিলোমিটারের কাটার!
একটু বেরিয়ে যাওয়া কাটারে কট বিহাইন্ড মারক্রাম। প্রথম ইনিংসে ৯৭ রানে রান আউট হওয়া অভিষিক্ত ওপেনার এবার আউট হলেন ১৫ রানে।
তবে মারক্রাম নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতে পারেন আবারও। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় ব্যাট লাগেনি বলে, শব্দ হয়েছে ব্যাট পিচে আঘাত করায়। তবে রিভিউ নেওয়ার সুযোগ তার ছিল। নিজেও বোঝেননি যে ব্যাটে লাগেনি বল!
দক্ষিণ আফ্রিকা ২ উইকেটে ৩৮। লিড ২১৪ রানের।
প্রথম ব্রেক থ্রু শফিউলের
রাউন্ড দা উইকেটে করা লেংথ বল লেগ সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন ডিন এলগার। মিস করেছেন লাইন। আঙুল তুলতে খুব বেশি সময় নেননি আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি এলগারের।
প্রথম ইনিংসে ১৯৯ রানে আউট হওয়া এলগার এবার করলেন ১৮। দলের রান ১ উইকেটে ৩০। লিড ২০৬ রানের।
দুইশ ছাড়িয়ে লিড
ব্যাটিংয়ে শেষটার মত বোলিংয়ের শুরুটায়ও বাংলাদেশের সঙ্গী হতাশা। প্রথম ইনিংসে পাওয়া ১৭৬ রানের লিডকে দক্ষিণ আফ্রিকা দুইশর ওপারে নিয়ে গেছে কোনো উইকেট না হারিয়েই।
বাংলাদেশ বোলিংয়ের শুরু করেছে মেহেদী হাসান মিরাজের স্পিন দিয়ে। আরেকপাশে শফিউল চেষ্টা করেছেন আগ্রাসী বোলিংয়ের। তবে লাভ বেশি হয়নি।
৭ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার রান বিনা উইকেটে ৩০। লিড ২০৬ রানের।
১৭৬ রানের লিড দক্ষিণ আফ্রিকার
শেষ দুটি উইকেট নিতে চা বিরতির পর খুব বেশি সময় নিল না দক্ষিণ আফ্রিকা। রাবাদার বাউন্সারে মিরাজের বিদায়ের পর শফিউলকে ফিরিয়ে ইনিংসের ইতি টানলেন মহারাজ। স্লিপে দারুণ ক্যাচ নিলেন হাশিম আমলা।
বাংলাদেশ অলআউট ৩২০ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার লিড ১৭৬ রানের। এক পর্যায়ে দলের রান ছিল ৬ উইকেটে ২৯২। শেষ ৫ উইকেট পড়েছে ২৮ রানে।
দক্ষিণ আফ্রিকার মটিতে পঞ্চম টেস্টে প্রথমবার স্বাগতিকদের দুইবার ব্যাট করাতে পারছে বাংলাদেশ। যদিও ম্যাচের বাস্তবতায় এটিকে প্রাপ্তি ভাবার কারণ নেই।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজেদের আগের সর্বোচ্চকে ছাড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে চট্টগ্রামে করা ৩২৬ এখনও শীর্ষে।
বাংলাদেশের ইনিংসে দুটি অর্ধশতক, সেঞ্চুরি নেই। আরও চার জন ২৫ ছুঁয়েও করতে পারেননি বড় কিছু। তাই গড়ে ওঠেনি বড় কোনো জুটি। পঞ্চাশের জুটি হয়েছে চারটি, একটিও নেই তিন অঙ্কের জুটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৮৯.১ ওভারে ৩২০ (আগের দিন ১২৭/৩) (মুমিনুল ৭৭, তামিম ৩৯, মাহমুদউল্লাহ ৬৬, সাব্বির ৩০, মিরাজ ৮, তাসকিন ১, শফিউল ২, মুস্তাফিজ ১০*; মর্কেল ২/৫১, রাবাদা ২/৮৪, মহারাজ ৩/৯২, অলিভিয়ের ১/৫২, ফেলুকওয়ায়ো ১/১৮, মারক্রাম ০/১৩)।
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৪৯৬/৩ (ডি.)
পারলেন না মিরাজও
চা-বিরতির পর লাগল মাত্র দুটি বল। কাগিসো রাবাদার শর্ট বলের জবাব জানা ছিল না মিরাজের। সহজ ক্যাচ দিলেন গালিতে।
৮ রানে আউট মিরাজ। বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ৩০৮।
হতাশার সেশন
সেশনটি শুরু হয়েছিল অনেক আশা নিয়ে। উইকেটে ছিলেন মুমিনুল ও মাহমুদউল্লাহ। জমে গিয়েছিল জুটি। সেশন শেষ হতে হতে শেষ বাংলাদেশের বড় রানের আশাও।
তৃতীয় দিনের চা বিরতিতে বাংলাদেশের রান ৮ উইকেটে ৩০৮।
সেশনে রান এসেছে ৯০, কিন্তু উইকেট পড়েছে চারটি। মাহমুদউল্লাহ ও মুমিনুলের পাশাপাশি হারাতে হয়েছে সাব্বির ও তাসকিনকেও। ব্যবধান কিছু কমাতে ভরসা এখন মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাট।
নতুন বলে সাফল্য
ওভারের মাঝপথে দ্বিতীয় নতুন বল নিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কাজ করল জাদুমন্ত্রের মত। প্রথম বলেই বোল্ড মাহমুদউল্লাহ!
পুরোনো বলে যেভাবে স্টাম্পে টেনে এসেছিলেন সাব্বির, নতুন বলে একইভাবে আউট মাহমুদউল্লাহ। অফ স্টাম্পের বাইরের বলটিতে জায়গায় দাঁড়িয়ে আলসে শট খেলেছিলেন। ব্যাটে লেগে বল ছোবল দিল লেগ স্টাম্পে। ৬৬ রানে আউট মাহমুদউল্লাহ।
বাড়ল বাংলাদেশের বিপদ। বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান নেই আর একজনও। রান ৭ উইকেটে ৩০৫।
তিনশ স্পর্শ
কেশভ মহারাজকে স্লগ সুইপে মাহমুদউল্লাহর ছক্কা। ওই শটেই একই সঙ্গে দুটি মাইলফলক। ফলো-অন এড়িয়ে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। পাশাপাশি স্পর্শ করল ৩০০। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৯ ইনিংসে মাত্র দ্বিতীয়বার!
৮২ ওভারে শেষে বাংলাদেশ ৬ উইকেটে ৩০০।
সাব্বিরের বাজে শট
৮০ ওভার শেষ শেষ হলেও নতুন বল নিলেন না ফাফ দু প্লেসি। পুরোনো বলেই শরীর সোজা শর্ট বল করলেন ডুয়ানে অলিভিয়ের। একটু ভেতরে ঢোকা বলে চোখ সরিয়ে আড়াআড়ি ব্যাটে সাব্বির খেললেন দৃষ্টিকটুভাবে। ব্যাটে লেগে বল স্টাম্পে।
ফলো অন এড়ানোর ঠিক আগে একটি উইকেট। ভাঙল ৬৫ রানের জুটি। সাব্বির আউট হলেন ৩০ রানে। বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ২৯২।
ষষ্ঠ জুটির পঞ্চাশ
দ্বিতীয় নতুন বলের আগে হাত ঘুরানোর সুযোগ পেলেন এইডেন মারক্রাম। তাকে রিভার্স সুইপে চার মেরে সাব্বির পূর্ণ করলেন জুটির পঞ্চাশ।
মুমিনুলকে হারানোর বড় ধাক্কা অনেকটাই সামাল এই জুটিতে। যদিও শুরুতে করতে হয়েছে লড়াই। জুটির প্রথম রানের দেখা পেতে লেগেছিল ২২ বল। পরে অনেকটাই সাবলীল সাব্বির ও মাহমুদউল্লাহ। বেরিয়ে এসে মহারাজকে ছক্কাও মেরেছেন সাব্বির।
৭৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ২৮১। সাব্বির খেলছেন রানে ২৩, মাহমুদউল্লাহ ৫৭।
ফিফটিতে মাহমুদউল্লাহর ফেরা
সাকিব আল হাসানের বিশ্রামে সুযোগ পেয়েছিলেন দলে ফেরার। তার অভিজ্ঞতায় ভরসা করেছিল দল। বাউন্সি উইকেটে তার সামর্থ্যে আস্থা রেখেছিলেন নির্বাচকেরা। মাহমুদউল্লাহ প্রতিদান দিলেন ফেরার ইনিংসেই পঞ্চাশ ছুঁয়ে।
লাঞ্চের আগে একটু ছটফটে ছিলেন। খেলেছেন বেশি কিছু শট। নিয়েছেন ঝুঁকি। লাঞ্চের পর ছিলেন অনেক সতর্ক। খেলেছেন সাবধানে। রাবাদাকে বাউন্ডারিতে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন ১০৭ বলে। ক্যারিয়ারের ১৪তম অর্ধশতক। পরের বলে বাউন্ডারি আরেকটি।
৭৭ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ২৭৫।
আবার রক্ষা মাহমুদউল্লাহর
কেশভ মহারাজের বলে একবার ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গেছেন মাহমুদউল্লাহ। বাঁহাতি এই স্পিনারের বলেই আউট হতে হতে বাঁচলেন আরেকবার। পা বাড়িয়ে ফরোয়ার্ড খেলেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। বল ছিল বাতাসে। নাকের ডগায় থাকা ফিল্ডার মারক্রাম ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তবে হাতে জমাতে পারেননি অল্পের জন্য।
হলো না বিপদ। মাহমুদউল্লাহ রক্ষা পেলেন ৩৫ রানে। দলের রান ৫ উইকেটে ২৩৮।
পারলেন না মুমিনুল
সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন বড় কিছুর। কিন্তু সেটি রয়ে গেল অপূর্ণ। লাঞ্চের পর দ্বিতীয় ওভারেই আউট মুমিনুল হক।
সকাল থেকে সামলেছেন প্রোটিয়াদের অনেক বিষাক্ত বল। কিন্তু আউট হলেন আপাত নিরীহ এক ডেলিভারিতে। লেংথ বলে পেছনের পায়ে খেললেন মুমিনুল। তবে একটু শক্ত হাতে। সেটিই কাল হলো। ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে এইডেন মারক্রামের হাতে ক্যাচ। ইনিংসে মারক্রামের তৃতীয় ক্যাচ। মহারাজের দ্বিতীয় উইকেট।
১৫০ বলে ১২ চারে ৭৭ রানে ফিরলেন মুমিনুল। দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের এটাই সর্বোচ্চ ইনিংস। ২০০২ সালে ইস্ট লন্ডনে আল শাহরিয়ারের ৭১ ছিল আগের সর্বোচ্চ।
মুমিনুল ফেরার সময় বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ২২৭।
স্বস্তির লাঞ্চ
তামিম ইকবালকে হারানোর হতাশা পেছনে ফেলে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। লাঞ্চ পর্যন্ত আর উইকেট হারায়নি দল। মাহমুদউল্লাহ ও মুমিনুলের সৌজন্যে রান উঠেছে প্রায় ওয়ানডের গতিতে।
দলে ফেরা মাহমুদউল্লাহ শট খেলেছেন অনেক। কয়েকটি ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। ২৬ রানে জীবনও পেয়েছেন। লাঞ্চের আগের ওভারেও ক্যাচ মতো দিয়েছিলেন। তবে দলের স্বস্তি হয়ে শেষ পর্যন্ত টিকে গেছেন।
সকালে কঠিন সময়টা চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় কাটিয়ে দেওয়ার পর সহজাত সব শট খেলেছেন মুমিনুলও। তার ব্যাটে বড় কিছুর ইঙ্গিত।
তৃতীয় দিন লাঞ্চের সময় বাংলাদেশে রান ৪ উইকেটে ২১৮। মুমিনুল অপরাজিত ৭২ রানে, মাহমুদউল্লাহ ২৬।
ওভারপ্রতি চারের বেশি রান তুলে অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেট জুটির রান ৬০।
বাঁচলেন মাহমুদউল্লাহ
আবারও হতাশ কেশভ মহারাজ। আবারও তার বলে পড়ল ক্যাচ! এবার বেঁচে গেলেন মাহমুদউল্লাহ।
অফ স্টাম্পের বাইরের বলে গ্লাইড মতো করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। বল তার ব্যাট ছুঁয়ে গেলেও গ্লাভসে জমাতে পারেননি কুইন্টন ডি কক। কিপারের গ্লাভসে লেগে বল কিছুক্ষণ ছিল বাতাসে। তবে স্লিপে হাশিম আমলার হাত পর্যন্ত যায়নি বল।
মাহমুদউল্লাহ জীবন পেলেন ২৬ রানে।
আরেক জুটির পঞ্চাশ
উইকেটে যাওয়ার পর থেকেই দারুণ ইতিবাচক খেলছেন মাহমুদউল্লাহ। খেলছেন ওয়ানডে ঘরানার শট। একটু ঝুঁকিপূর্ণ, তবে এখনও পর্যন্ত বেশ কার্যকর। রানও উঠছে ওয়ানডে গতিতে। জুটি ছাড়িয়ে গেছে পঞ্চাশ।
পঞ্চম উইকেট জুটির পঞ্চাশ রান হয়েছে ৬৩ বলে। ৫৭ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ২১৪।
৬৮ রান নিয়ে খেলছেন মুমিনুল, ৩৮ বলে ২৬ রান নিয়ে মাহমুদউল্লাহ। দুজনের জুটির রান ৫৬।
মুমিনুলের লড়িয়ে ফিফটি
দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ছিলেন না একাদশে। পরের টেস্টে ফিরে করেছিলেন ৩১ ও ২৯। এবার এগোলেন আরেকটু। করলেন অর্ধশতক।
দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচেও করেছিলেন ৬৮ ও ৩৩। সেই ফর্ম টেস্টেও বয়ে নিয়ে এলেন। ক্যারিয়ারের দ্বাদশ অর্ধশতক স্পর্শ করেছেন ১১২ বলে। বেরিয়ে এসে কেশভ মহারাজকে উড়িয়ে চার মেরে ছুঁয়েছেন মাইলফলক।
আগের দিন নেমেছিলেন শুরুতেই ইমরুল আউট হওয়ার পর। এরপর যেভাবে দিনটি শেষ করেছেন এবং তৃতীয় দিন সকালে প্রোটিয়া পেসারদের চ্যালেঞ্জ যেভাবে সামলেছেন, তার ক্যরিয়ারের অন্যতম সেরা ফিফটি হয়ে থাকবে এটি।
চার পেয়ে পঞ্চাশের পর সেটি উদযাপন করেছেন আরেকটি বাউন্ডারিতে।
বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ১৮৫। মুমিনুল খেলছেন ৫৬ রানে, ৯ রানে মাহমুদউল্লাহ।
তামিম-হতাশা
সকালে রাবাদার রিভার্স সুইং, মর্নে মর্কেলের বাউন্স দারুণভাবে সামলালেন তামিম। কিন্তু আউট হলেন কিনা আন্দিলে ফেলুকওয়ায়োর বাজে এক বলে!
লেগ স্টাম্প থেকে বেরিয়ে যাওয়া বলে গ্লান্স করেছিলেন তামিম। বল তার ব্যাট ছুঁয়ে দেয় আলতো করে। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্ষিপ্রতায় গ্লাভসে জমান কুইন্টন ডি কক।
৩৯ রানে বিদায় তামিমের। ভাঙল ৫৫ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি। বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ১৫৮।
তামিম-মুমিনুল জুটির পঞ্চাশ
তামিম-মুমিনুলের বিপক্ষে রাবাদা ও মর্কেল, দুই পাশ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই পেসার শুরু করলেন রাউন্ড দা উইকেটে। দুজনই আদায় করে নিচ্ছিলেন রিভার্স সুইং। সঙ্গে গতি আর বাউন্স তো ছিলই। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটেও বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যানের কঠিন পরীক্ষা নিল দুই প্রোটিয়া পেসার।
তবে চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় সময়টা কাটিয়ে দেন মুমিনুল ও তামিম। প্রথম ৯ ওভারে রান আসে ৭। তবু লড়াই ছাড়েননি দুজন। দিনের দশম ওভার থেকে আসে ১৭ রান।
দিনের প্রথম রান পেতে মুমিনুলের লেগে যায় ৩২ বল। আগের দিন থেকে হিসাব করলে ৪০ বলে সেটি মুমিনুলের প্রথম রান! তবে দুই রান নিয়ে খরা কাটানোর পর রাবাদাকে টানা দুই বলে মারেন বাউন্ডারি।
দুজনের জুটিতে স্পর্শ করে পঞ্চাশ রান। বাংলাদেশের রান ৪৫ ওভারে ৩ উইকেটে ১৫৭।
কাগিসো রাবাদার বলে আবারও দক্ষিণ আফ্রিকার রিভিউ। এবারও ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। রিভার্স সুইঙ্গিং ইয়র্কার ছোবল দেয় তামিমের বুটে। খোলা চোখে মনে হচ্ছিলো, বিপদে তামিম। তবে রিপ্লে সায় দিল তামিমের পক্ষে।
হক আইতে দেখা গেল, বল চলে যাচ্ছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে। রাউন্ড দা উইকেটে বল করছিলেন রাবাদা, সেই অ্যাঙ্গেল থেকে যথেষ্ট ভেতরে ঢোকাতে পারেননি বল।
তামিমের রান তখনও সেই ২৬। দলের রানও একই, ৩ উইকেটে ১৩১।
নতুন নিয়মের প্রথম সুবিধা
আম্পায়ার্স কলে এখন থেকে আর রিভিউ হারাবে না দলগুলি-আইসিসির নতুন এই নিয়মের প্রথম সুবিধা পেল দক্ষিণ আফ্রিকা।
রাবাদার বলে তামিমের বিপক্ষে এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিউ নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। রিপ্লেতে দেখা যায়, রাউন্ড দা উইকেটে করা রাবাদার বল লেগ স্টাম্প ছুঁয়ে যাচ্ছিল। আম্পায়ার্স কলে বেঁচে যান তামিম। তবে নতুন আইন অনুযায়ী অক্ষত থেকে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার দুটি রিভিউ।
তামিমের রান তখন ২৬। বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ১৩১।
ভরসার নাম তামিম-মুমিনুল
শুরু থেকেই দারুণ আস্থার সঙ্গে খেলেছেন মুমিনুল হক। রাবাদা-মর্কেলের গতি ও বাউন্সের সামনে ছিলেন অবিচল, কেশভ মহারাজের স্পিনে প্রায় নিখুঁত। ক্যারিয়ারে প্রথমবার ওপেনিং ছাড়া খেলতে নেমেও তামিম ইকবাল ছিলেন স্বচ্ছন্দ। তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ তাকিয়ে এই দুজনের ব্যাটে।
আগের দিন দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে ৩ উইকেটে ৪৯৬ রানে। সেই ইনিংসের শেষ ৪৯ মিনিট মাঠের বাইরে থাকায় ওপেন করতে পারেননি তামিম। পাঁচে নেমে জুটি বেধেছেন তিনি মুমিনুলের সঙ্গে। আগের দিন শেষ বিকেলের জুটিকেই তৃতীয় দিনে আরও অনেকক্ষণ মাঠে দেখতে চাইবে বাংলাদেশ।
৩ উইকেটে ১২৭ রান নিয়ে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের লড়াই। প্রথম লক্ষ্য ফলো অন এড়ানো।
দ্বিতীয় দিন শেষে সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩৪ ওভারে ১২৭/৩ (ইমরুল ৭, লিটন ২৫, মুমিনুল ২৮*, মুশফিক ৪৪, তামিম ২২*; মর্কেল ১/৩৪, রাবাদা ১/৩৮, মহারাজ ১/২৩, অলিভিয়ের ০/২৭, ফেলুকওয়ায়ো ০/৪)।
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৪৯৬ (ডি.)