শ্রীলঙ্কা-নিউ জিল্যান্ড সিরিজ
দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ১০৮ রানের পুঁজি নিয়েও জিতে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে কিউইরা।
Published : 10 Nov 2024, 11:43 PM
শেষ ওভারে তিন উইকেট হাতে নিয়ে শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ছিল ৮ রান। ফিফটি করে ক্রিজে ছিলেন ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা। দ্বিতীয় বলে তাকে ফিরিয়েই আশা জাগালেন গ্লেন ফিলিপস। পরের তিন বলে বাকি দুই উইকেটও তিনি তুলে নিলে অবিশ্বাস্য জয়ের আনন্দে ভাসে নিউ জিল্যান্ড।
দুর্দান্ত বোলিংয়ে হ্যাটট্রিক করে কিউইদের ৫ রানের রোমাঞ্চকর জয়ের ভিতটা অবশ্য গড়ে দেন লকি ফার্গুসন। গতিময় এই পেসার পেশির চোটে মাঠ ছাড়ায় শেষ ওভারের দায়িত্ব পান ফিলিপস এবং কী দারুভাবেই না সেই শূন্যতা পূরণ করেন তিনি। ১০৮ রানের পুঁজি নিয়েও লঙ্কানদের ১০৩ রানে গুটিয়ে দেয় নিউ জিল্যান্ড।
প্রথম ম্যাচ হারের পর এই জয়ে, দুই টি-টোয়েন্টির সিরিজ সমতায় শেষ করল মিচেল স্যান্টনারের দল।
ডম্বুলায় রোববার কিউইদের জয়ের নায়ক ফার্গুসন দুই ওভার মিলিয়ে পূরণ করেন হ্যাটট্রিক। ২ ওভারে ৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে জিতে নেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম হ্যাটট্রিকের স্বাদ পেলেন ফার্গুসন। এই সংস্করণে টানা তিন বলে তিন উইকেট নেওয়া নিউ জিল্যান্ডের পঞ্চম বোলার তিনি। একাই দুবার হ্যাটট্রিকের কীর্তি আছে টিম সাউদির।
শেষ ওভারে ৩ উইকেট নেওয়া ফিলিপসের বোলিং বিশ্লেষণ ১.৫-০-৬-৩। দুটি শিকার ধরেন মাইকেল ব্রেসওয়েল। একটি করে স্যান্টনার ও জ্যাক ফউকসের।
মন্থর উইকেটে ম্যাচের প্রথমভাগে বল হাতে আলো ছড়ান ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। চার ওভারে ১৭ রান দিয়ে একাই ৪টি শিকার ধরেন এই লেগ স্পিনার। ১১ রান খরচায় তিন উইকেট নেন মাথিশা পাথিরানা।
বোলারদের গড়ে দেওয়া মঞ্চে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। একার লড়াইয়ে ম্যাচের একমাত্র ফিফটিতে ৫১ বলে ৫২ রান করেন নিসাঙ্কা।
ছোট্ট লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা। তৃতীয় ওভারে স্যান্টনারের চমৎকার ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান কুসাল মেন্ডিস। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আক্রমণে এসে লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের কাঁপিয়ে দেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর জাতীয় দলের হয়ে প্রথম খেলতে নামা ফার্গুসন।
ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে কুসাল পেরেরাকে কট বিহাইন্ড করেন ফার্গুসন। আর অষ্টম ওভারের প্রথম দুই বলে কামিন্দু মেন্ডিস ও চারিথ আসালাঙ্কাকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি। এরপর চোট পাওয়ায় আর মাঠেই নামতে পারেননি ফার্গুসন।
৩৪ রানে ৪ উইকেট হারানো দলের একপ্রান্ত আগলে রাখেন নিসাঙ্কা। কিন্তু তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি বাকিরা। কিউই বোলারদের ছোবল সামলে শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ টেনে নেন তিনি। কিন্তু শেষ ওভারে ফিলিপসের ওই বিধ্বংসী বোলিংয়ে ভাঙে লঙ্কানদের জয়ের আশা।
ম্যাচের শুরুটা যদিও আশা জাগানিয়া ছিল না নিউ জিল্যান্ডের। বৃষ্টির বাধায় প্রায় আধঘন্টা দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা। তাদের ৮ ব্যাটসম্যানই ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্ক।
ম্যাচের প্রথম বলে থুশারার দুর্দান্ত ইয়র্কারে বোল্ড হন টিম রবিনসন। লঙ্কান পেসার পরের ওভারে ফিরিয়ে দেন মার্ক চ্যাপম্যানকে। ৬ রানে ২ উইকেট হারানো কিউইরা সপ্তম ওভারে খায় জোড়া ধাক্কা। আক্রমণে এসে প্রথম বলে ফিলিপস ও শেষ বলে ব্রেসওয়েলকে বোল্ড করেন হাসারাঙ্গা।
নিজের পরের দুই ওভারে মিচেল হে এবং ৩ চারে ৩০ রান করা ওপেনার উইল ইয়াংকে ফিরিয়ে দেন তিনি। মিচেল স্যান্টনার ও জশ ক্লার্কসনের ব্যাটে কোনোমতে একশ পার করে কিউইরা। বোলারদের নৈপুন্যে দিনশেষে সেটাই অবশ্য যথেষ্ট প্রমাণ হলো।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড: ১৯.৩ ওভারে ১০৮ (রবিনসন ০, ইয়াং ৩০, চ্যাপম্যান ২, ফিলিপস ৪, ব্রেসওয়েল ০, হে ৩, স্যান্টনার ১৯, ক্লার্কসন ২৪, ফউকস ৬, সোধি ১, ফার্গুসন ০*; থুশারা ৪-০-২২-২, থিকশানা ৩.৩-০-১৬-১, ওয়েলালাগে ৪-০-২৬-০, হাসারাঙ্গা ৪-১-১৭-৪, পাথিরানা ৪-১-১১-৩)
শ্রীলঙ্কা: ১৯.৫ ওভারে ১০৩ (নিসাঙ্কা ৫২, মেন্ডিস ২, পেরেরা ৩, কামিন্দু ১, আসালাঙ্কা ০, রাজাপাকসা ১৫, হাসারাঙ্গা ৩, ওয়েলালাগে ১, থিকশানা ১৪, পাথিরানা ০, থুশারা ১*; স্যান্টনার ৪-০-১৪-১, ফউকস ৪-০-২৩-১, ফার্গুসন ২-০-৭-৩, সোধি ৪-০-২৬-০, ব্রেসওয়েল ৪-০-২৩-২, ফিলিপস ১.৫-০-৬-৩)
ফল: নিউ জিল্যান্ড ৫ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: লকি ফার্গুসন
সিরিজ: দুই ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতা
ম্যান অব দা সিরিজ: ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা