এখনও অধিনায়ক মাশরাফি, আমি দায়িত্ব পালন করছি: মিঠুন

রাজনৈতিক ব্যস্ততায় বিপিএল থেকে বিরতি নিলেও সিলেট স্ট্রাইকার্সের সঙ্গে এখনও সম্পৃক্ত মাশরাফি বিন মুর্তজা, বললেন নতুন অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন।

শাহাদাৎ আহমেদ সাহাদশাহাদাৎ আহমেদ সাহাদ সিলেট থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Feb 2024, 02:05 PM
Updated : 2 Feb 2024, 02:05 PM

‘মাশরাফিকে নিয়ে যথেষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। আর কোনো প্রশ্ন নয়’- সংবাদ সম্মেলনের মাঝে বাধ্য হয়েই বললেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের মিডিয়া ম্যানেজার। সিলেট স্ট্রাইকার্সের প্রথম জয়ের পর বর্তমান অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনের দিকে একের পর এক প্রশ্ন ছুটে যাচ্ছিল বিরতি নেওয়া অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে ঘিরে। মিঠুন অবশ্য জানিয়ে দিলেন, না থেকেও তাদের সঙ্গে আছেন মাশরাফি। রাজনৈতিক ব্যস্ততায় বিপিএল ছেড়ে যাওয়া অধিনায়ক এখনও দলে সম্পৃক্ত।  

মাশরাফি বিরতির নেওয়ার পর মিঠুনের নেতৃত্বেই এবারের আসরের প্রথম জয়ের স্বাদ পেয়েছে সিলেট। মিরপুরে দুই ম্যাচ হারের পর সিলেটেও প্রথম তিন ম্যাচে জয়ের দেখা পায়নি গতবারের রানার্স-আপরা। এরপর জাতীয় সংসদে হুইপের দায়িত্ব পালন করতে বিপিএল ছেড়ে যান মাশরাফি। সহ-অধিনায়ক থেকে অধিনায়কের ভার নেন মিঠুন। সামনে থেকেই তিনি নেতৃত্ব দেন দলের জয়ে। 

দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে শুক্রবার ১৪২ রানের পুঁজি নিয়ে তাদের জয় ১৫ রানে। শুরুতে ধুঁকতে থাকা দল পরে লড়িয়ে পুঁজি গড়তে পারায় বড় অবদান ৪৬ বলে ৫৯ রানের ইনিংস খেলা অধিনায়ক মিঠুনের। আগের পাঁচ ম্যাচে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার ব্যাপারটিতেই ব্যর্থ ছিলেন মাশরাফি। পায়ের চোটের কারণে তিনি বোলিং করেন স্রেফ ৭.৩ ওভার। ব্যাটিংয়েও পারেননি কিছু করতে। 

সংবাদ সম্মেলনের শুরুর দিকেই তাই প্রশ্ন এলো, অধিনায়কের পারফরম্যান্সের অভাবেই কি প্রথম পাঁচ ম্যাচ জিততে পারেনি সিলেট? মিঠুন বললেন উল্টো কথা। তুলে ধরলেন তিনি সমর্থকদের দায়িত্বের কথাও। 

“মাশরাফি ভাই এখনও আমাদের অধিনায়ক। তার অনুপস্থিতিতে আমি এই দায়িত্বটা পালন করছি। তবে এখনও সবকিছুই কিন্তু... আমাদের দল থেকে শুরু করে আমরা কীভাবে চলব, সবসময় দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন উনি। সকালেও তার সঙ্গে কথা হয়েছে। আপনারা সবাই জানেন ব্যস্ততার কারণে বিপিএলে অংশ নিতে পারছেন না।”  

“আমাদের দেশে কিন্তু এমন অনেক ক্রিকেটার আছেন, যাদের বাংলাদেশ ক্রিকেটে যা অবদান, এটা শুধু একটা ম্যাচ বা একটা টুর্নামেন্ট দিয়ে বিচার করতে পারবেন না। তাদের অবদান অনেক। আমাদের সবারই উচিত, যারা বাংলাদেশ ক্রিকেটে অবদান রেখেছেন, তাদের সম্মান করা।”  

শেষ পর্যন্ত ফল না এলেও, প্রথম পাঁচ ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল সিলেট। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ১৭৭ রানের পুঁজি নিয়েও জয় আসেনি বোলারদের ব্যর্থতায়। রংপুর রাইডার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে পরের দুই ম্যাচে ব্যর্থ হন ব্যাটসম্যানরা। 

হারের বৃত্ত ভাঙার পর এবার সেই কথাও মনে করিয়ে দিলেন মিঠুন। 

“আমার যেমন জেতার চাওয়া ছিল, মাশরাফি ভাইয়েরও একই চাওয়া ছিল। তিনিও নিজের দিক থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টাই করে গেছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ফলাফল পক্ষে আসেনি। আমরা যদি প্রথম ম্যাচ থেকে জেতা শুরু করতাম, তাহলে কিন্তু এই প্রশ্নগুলো আসত না।”  

“আমরা গ্যারান্টি দিয়ে কখনও জিততে পারব না। প্রক্রিয়াটা ঠিক রাখতে পারব এবং দলের বোঝাপড়া ও পরিবেশ ঠিক রাখতে পারব। আমরা সেটাই চেষ্টা করছি। ফলাফলের ক্ষেত্রে ভাগ্যেরও অনেক বিষয় আছে। সবকিছু মিলিয়ে গ্যারান্টি দিয়ে ফল আনাটা কঠিন। তবে আমরা চেষ্টা করব প্রক্রিয়াটা ঠিক রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে।” 

মাশরাফি চলে যাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক অধিনায়ক মিঠুন হলেও, মাঠে বেশ সক্রিয় দেখা গেছে নাজমুল হোসেন শান্তকে। ঢাকার ব্যাটিংয়ের সময় প্রায় পুরো ইনিংসই ফিল্ডিং সাজানো থেকে শুরু করে বোলারদের পরামর্শ দেওয়ার কাজটি কর্তৃত্বের সঙ্গেই করেন তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।  

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে শান্তকে সিলেটের অধিনায়কত্ব না দেওয়া নিয়ে সমালোচনা হয়েছে অনেক। এতে নতুন মাত্রা যোগ করেন ঢাকার প্রধান কোচ খালেদ মাহমুদ। ম্যাচের আগের দিন তিনি বলেছেন, শান্তকে অধিনায়ক না দেখে অবাকই হয়েছেন তিনি।  

এবার ঢাকাকে হারিয়ে মিঠুন বললেন, আনুষ্ঠানিক কোনো পদবি না থাকলেও দলের নেতাদের একজন হিসেবেই দায়িত্ব পালন করছেন শান্ত। 

 “শান্তর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতা আছে। ওর মতো একজনকে অবশ্যই মাঠের মধ্যে ব্যবহার করতে হবে। ওর যে অভিজ্ঞতা আছে... আমি উইকেটরক্ষক হয়ে সবসময় বোলারের সঙ্গে কথা বলা কঠিন। আমি শান্তকে বলেছিলাম, ও যেন মাঠে দায়িত্বটা নেয়। বোলারদের সাথে কথা বলা, ফিল্ড সাজানোর ক্ষেত্রে। এটা সবসময় আমার একার পক্ষে সম্ভব না।”  

“আমি ওকে বলেছিলাম, ফিল্ডিংয়ের সময় যেন অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করে। অবশ্যই আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। তবে ওর যদি কোনো কিছু মনে হয়, সেটা যেন আমার কাছে এসে বলে। ওর উপর পুরোপুরি ভরসা করি। ওর খুব ভালো ক্রিকেট জ্ঞান আছে। চেষ্টা করেছি সেটা যতটা কাজে লাগানো যায়।”