২৬৮ স্ট্রাইক রেটের রেকর্ড গড়া ইনিংসের পথে হেলিকপ্টার শটে ছক্কা মেরেছেন মাহিদুল ইসলাম, যে শট বিখ্যাত হয়ে আছে মাহেন্দ্র সিং ধোনির সৌজন্যে।
Published : 02 Jan 2025, 07:58 PM
শাফল করে আগেই অফ স্টাম্পের বাইরে চলে গিয়েছিলেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। বোলার শরিফুল ইসলাম ডেলিভারি করলেন পা বরাবরই। লো ফুল টস ডেলিভারি, হাত খুলে মারার সুযোগ নেই। মাহিদুল চোখের পলকে দেখিয়ে দিলেন তার কবজির জোর। বলের নিচে গিয়ে হাত ঘুরিয়ে চালিয়ে দিলেন ব্যাট। দুর্দান্ত টাইমিংয়ে লং অন দিয়ে বল উড়ে গেল বাইরে। হেলিকপ্টার শটে ছক্কা!
২২ বলে ৫৯ রানের বিধ্বংসী অপরাজিত ইনিংসটিতে সেদিন ছক্কা মেরেছেন তিনি ছয়টি। সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে ওই শটই।
হেলিকপটার শটকে মাহেন্দ্র সিং ধোনি এতই বিখ্যাত করে দিয়েছেন যে, দুনিয়ার যে কোনো প্রান্তে যে কেউ এই শট খেললে আলাদা করে নজর কাড়েই। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের এমনিতেও খুব বেশি দেখা যায় না এই শট খেলতে। ছক্কা মারার নজির তো আরও কম। মাহিদুলের শটটি তাই চর্চা হওয়ার মতোই।
খুলনা টাইগার্সের জয়ে মঙ্গলবার ম্যান অব দা ম্যাচ হওয়া মাহিদুল দুদিন পর অনুশীলন শেষে মুখোমুখি হলেন সংবাদমাধ্যমের। ২৫ বছর বয়সী কিপার-ব্যাটসম্যান জানালেন, বিশেষ ডেলিভারির জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত হতেই এই শট রপ্ত করেছেন তিনি।
“ (ওই শটে)আমি শুধু চেয়েছি, বলটা কীভাবে টাইমিং করা যায়। আমার মনে হচ্ছিল, ওরকম ডেলিভারি আসতে পারে। তার জন্য ওই শটটা খেলতে পেরেছি।”
“আমি ব্যক্তিগতভাবে অনুশীলন করেছি যে, ইয়র্কার বলে কীভাবে স্কোর করা যায়। ইয়র্কার বা লো ফুলটস সব…. ওখান থেকে আসা সবকিছু।”
তার এই শট খেলার অনুশীলন মূলত খুলনা দলে তার ভূমিকার জন্য। ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশির ভাগ সময় টপ বা মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবেই খেলতে দেখা যায় তাকে। গত বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে তার ভূমিকাও ছিল তেমনই। কিন্তু এবার তিনি খুলনার ‘ফিনিশার।’
নতুন এই ভূমিকায় তাকে দেখা গেল নতুন রূপে। এমনিতে তার পরিচিতি ধীরস্থির ব্যাটসম্যান হিসেবে, যিনি সময় নিয়ে ব্যাট করতে পছন্দ করেন। কিন্তু এই ম্যাচে তিনি ফিফটি করেন ১৮ বলে, বিপিএলে যা বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের দ্রুততম ফিফটি। তার ৫৯ রানের ইনিংসের স্ট্রাইক রেট ২৬৮.১৮। বিপিএলে ফিফটি ছোঁয়া ইনিংসে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের প্রথম আড়াইশ স্ট্রাইক রেট এটি।
মাহিদুল জানালেন, এই ভূমিকা পালনের জন্য নিজকে আলাদা করে তৈরি করছেন তিনি।
“অবশ্যই কাজ করেছি। চেষ্টা করেছি আরও কীভাবে উন্নতি করা যায়। এখনও পর্যন্ত যতগুলো বিপিএল খেলেছি, একেক সময় আমার ভূমিকা একেক রকম ছিল। শেষবার যখন বিপিএল খেলেছি তখন আমার ভূমিকা ছিল অন্যটা। এখানে আমার ভূমিকা অন্যরকম। খুলনা টাইগার্সের ম্যানেজমেন্ট, অধিনায়ক তারা আমাকে ওইভাবে অনুপ্রাণিত করেছে, আমি যেন ভয়ডরহীস ক্রিকেট খেলতে পারি।”
“আগে থেকে জানতাম ছয়-সাত নম্বরে আমার ভূমিকা এরকম হবে। আমি চেষ্টা করেছি ওইটাই ট্রেনিংয়ে কাজ করার। সব কিছুই আসলে সম্পৃক্ত এখানে। আমাদের ট্রেনিং থেকে শুরু করে সব কিছুই যুক্ত। আমরা স্কিল এবং স্ট্রেংথ ট্রেনিং কেমন করছি, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।”
প্রথম ম্যচে দুইশর বেশি রান করে ম্যাচ জেতা খুলনা পরের ম্যাচে শুক্রবার লড়বে ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে।