ভিভিয়ান কিংমাকে মিডউইকেট দিয়ে ছক্কায় উড়িয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিলেন আগা সালমান। শেষটা যেমন ছিল দাপুটে, ম্যাচ জুড়ে এমনই আধিপত্য ছিল পাকিস্তানের। হারিস রউফ, মোহাম্মদ নওয়াজদের দারুণ বোলিংয়ে নেদারল্যান্ডসকে দুইশর আগে থামিয়ে দেয় তারা। পরে ছোট লক্ষ্য তাড়ায় অনায়াস জয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ঘরে তোলে সিরিজ।
রটারডামে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সফরকারীদের জয় ৭ উইকেটে। টানা দুই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজটি জিতে নিল বাবর আজমের দল। সঙ্গে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে পেল আরও ১০ পয়েন্ট। আফগানিস্তানকে পেছনে ফেলে উঠে এলো তিনে।
আগের ম্যাচে পাকিস্তানের ৩১৪ রান তাড়ায় ২৯৮ রান করেছিল নেদারল্যান্ডস। কিন্তু এই ম্যাচে মুখ থুবড়ে পড়ল তাদের ব্যাটিং। গুটিয়ে গেল তারা স্রেফ ১৮৬ রানে।
প্রতিপক্ষকে অল্পতে থামিয়ে দেওয়ার পথে বড় অবদান রাখেন রউফ ও নওয়াজ। দুইজনেই নেন তিনটি করে উইকেট। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন বাঁহাতি স্পিন অলরাউন্ডার নওয়াজ। নাসিম শাহর প্রাপ্তি দুই উইকেট।
নেদারল্যান্ডদের এই রান বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সালমানের দারুণ ব্যাটিংয়ে ৯৮ বল বাকি থাকতেই পেরিয়ে যায় পাকিস্তান। টানা দ্বিতীয় ফিফটি করা বাবর আউট হন ৭ চারে ৫৭ রানে। রিজওয়ান অপরাজিত থাকেন ১ ছক্কা ও ৬ চারে ৬৯ করে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করা সালমান খেলেন ২ ছক্কা ও ৫ চারে ৩৫ বলে ৫০ রানের ঝড়ো ইনিংস।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা নেদারল্যান্ডসের শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো। ৮ রানেই টপ অর্ডার তিন ব্যাটসম্যানকে হারায় তারা। নাসিমের বলে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন বিক্রমজিত সিং। এই পেসার পরে বোল্ড করে দেন ওয়েসলি বারেসিকে। মাঝে ম্যাক্স ও’ডাউডকে ফেরান রউফ।
বিপদে পড়া দলের হাল ধরেন বাস ডে লেডে ও টম কুপার। দুইজনে গড়েন ১০৯ রানের জুটি। তাদের ব্যাটে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় স্বাগতিকরা।
দ্রুত রান তুলে ৫০ বলে ফিফটি করেন কুপার। আগের ম্যাচেও তিনি খেলেছিলেন পঞ্চাশ ছাড়ানো ইনিংস। ডে লেডের পঞ্চাশ আসে ৭৭ বলে। তাদের জুটি শতরান স্পর্শ করে ১১৯ বলে।
২ ছক্কা ও ৭ চারে ৬৬ রান করা কুপারের ফিরতি ক্যাচ নিয়ে জমে যাওয়া জুটি ভাঙেন নওয়াজ। এরপর বালির বাঁধের মতো ভেঙে পড়ে ডাচদের ব্যাটিং।
এক প্রান্ত দাঁড়িয়ে থেকে সতীর্থদের আসা-যাওয়া দেখেন ডে লেডে। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি আউট হন রউফের বলে। ৩ ছক্কা ও ২ চারে খেলেন ৮৯ রানের ইনিংস।
নেদারল্যান্ডসের ইনিংসে দুই অঙ্কে যেতে পারেন কেবল তিন জন। শেষ ৭ উইকেট হারায় তারা ৬৯ রানে।
রান তাড়ায় শুরুতে ধাক্কা খায় পাকিস্তান। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ফখর জামানকে ফিরতি ক্যাচ নিয়ে বিদায় করেন কিংমা। ইমাম উল হকও এই পেসারের শিকার।
১১ রানে দুই ওপেনারকে হারানো পাকিস্তানকে পথে ফেরান বাবর। মোহাম্মদ রিজওয়ানের সঙ্গে গড়েন ৮৮ রানের জুটি। যেখানে অগ্রণী ছিলেন বাবর। পাকিস্তান অধিনায়কের বিদায়ে ভাঙে তাদের প্রতিরোধ।
সালমানকে নিয়ে বাকি কাজ সারেন রিজওয়ান। দুজনেই দ্রুত রান বাড়িয়ে দলকে পৌঁছে দেন জয়ের ঠিকানায়। ৬৮ বলে তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটি ৯২ রানের।
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে আগামী রোববার মাঠের লড়াইয়ে নামবে দল দুটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নেদারল্যান্ডস: ৪৪.১ ওভারে ১৮৬ (বিক্রমজিত ১, ও’ডাউড ১, বারেসি ৩, ডে লেডে ৮৯, কুপার ৬৬, এডওয়ার্ডস ৫, নিদামানুরু ০, ফন বিক ১৩, প্রিঙ্গল ০, আরিয়ান ১, কিংমা ০*; রউফ ৭-০-১৬-৩, নাসিম ৬-০-২৭-২, ওয়াসিম ৯-০-৪২-১, শাদাব ১০-০-৪১-১, নওয়াজ ১০-০-৪২-৩, খুশদিল ২-০-১৮-০)
পাকিস্তান: ৩৩.৪ ওভারে ১৯১/৩ (ফখর ৩, ইমাম ৬, বাবর ৫৭, রিজওয়ান ৬৯*, সালমান ৫০*; আরিয়ান ৮-০-৩৭-১, কিংমা ৪৪.৪-১-৩২-২, ফন বিক ৬-০-৩৮-০, প্রিঙ্গল ৯-১-৫৫-০, ডে লেডে ৬-০-২৮-০)
ফল: পাকিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ নওয়াজ
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে পাকিস্তান