কুঁচকির চোটে দাভিদ মালান খেলতে পারেননি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালে। সেরে উঠে দলে ফিরেই তিনি উপহার দিলেন চমৎকার এক সেঞ্চুরি। সতীর্থদের ব্যর্থতার দিনে তার ইনিংসে লড়ার মতো পুঁজি পেল ইংল্যান্ড। কিন্তু বোলাররা পারলেন না কোনো আশা জাগাতে। টপ অর্ডার তিন ব্যাটসম্যানের নৈপুণ্যে অনায়াস জয় তুলে নিল অস্ট্রেলিয়া।
অ্যাডিলেইডে বৃহস্পতিবার প্রথম ওয়ানডে ৬ উইকেটে জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। ইংল্যান্ডের ২৮৭ রান তারা পেরিয়ে যায় ১৯ বল বাকি থাকতে।
গত সেপ্টেম্বরে অ্যারন ফিঞ্চ ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেওয়ার পর প্যাট কামিন্স পান এই সংস্করণের অধিনায়কত্ব। নেতৃত্বের শুরুটা চমৎকার হলো এই পেসারের।
দল হারলেও দারুণ ব্যাটিংয়ের জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন মালান। ৪ ছক্কা ও ১২ চারে ১২৮ বলে ১৩৪ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার এই ব্যাটসম্যান।
অস্ট্রেলিয়ার জয়ের কারিগর ডেভিড ওয়ার্নার, ট্রাভিস হেড ও স্টিভেন স্মিথ। ১ ছক্কা ও ১০ চারে ৮৬ রান করেন ওয়ার্নার। সমান চার-ছয়ে হেডের ব্যাট থেকে আসে ৬৯। তিনে নেমে ১ ছক্কা ও ৯ চারে ৮০ রানের ইনিংসে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে ফেরেন স্মিথ।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার ৪ দিন পর ওয়ানডে খেলতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ড। চতুর্থ ওভারে কামিন্সকে দুই চার মারার পর দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়েন ফিল সল্ট। মিচেল স্টার্কের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড জেসন রয়।
জেমস ভিন্সকে দুই অঙ্কে যেতে দেননি কামিন্স। মার্কাস স্টয়নিস ভেঙে দেন স্যাম বিলিংসের স্টাম্প। দুইজনই ওয়ানডে খেলতে নামেন এক বছর পর।
৬৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া দলের এক প্রান্ত ধরে রাখেন মালান। অধিনায়ক জস বাটলারের সঙ্গে ৫২ রানের জুটিতে কিছুটা সামাল দেন বিপর্যয়। এরপর ৪ বছর পর ফেরা লিয়াম ডসন, ক্রিস জর্ডনকে নিয়ে গড়েন কার্যকর জুটি।
সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে নিজের মতো খেলে যান মালান। ৬৪ বলে স্পর্শ করেন ফিফটি। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরিতে পা রাখেন তিনি ১০৭ বলে।
লেগ স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পাকে ছক্কার চেষ্টায় লং-অনে ধরে পড়েন মালান। ভাঙে ডেভিড উইলির সঙ্গে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৬০ রানের জুটি। শেষ পর্যন্ত উইলি অপরাজিত থাকেন ৩ চারে ৩৪ রান করে।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি করে উইকেট নেন কামিন্স ও লেগ স্পিনার জ্যাম্পা।
রান তাড়ায় অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের ভিত গড়ে দেন ওয়ার্নার ও হেড। উদ্বোধনী জুটিতে দুইজন দলকে এনে দেন ১১৮ বলে ১৪৭ রান। জর্ডানের বলে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে হেডের বিদায়ে ভাঙে জুটি।
৪৪ বলে ফিফটি করে ওয়ার্নার জাগান সেঞ্চুরির সম্ভাবনা। কিন্তু উইলির বাউন্সারে তিনিও ধরা পড়েন বাউন্ডারিতে। পরের ওভারে বাঁহাতি এই পেসার ফিরিয়ে দেন মার্নাস লাবুশেনকে।
ডসনকে রিভার্স সুইপ করে ডিপ পয়েন্টে ধরা পড়েন অ্যালেক্স কেয়ারি (৩ চারে ২১)। এরপর দলকে আর বিপদে পড়তে দেননি স্মিথ ও ক্যামেরন গ্রিন। দুইজনে গড়েন অবিচ্ছিন্ন ৪৭ রানের জুটি।
মালানকে টানা চার ও ছক্কায় উড়িয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ৪৭ বলে ফিফটি করা স্মিথ।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ আগামী শনিবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ২৮৭/৯ (রয় ৬, সল্ট ১৪, মালান ১৩৪, ভিন্স ৫, বিলিংস ১৭, বাটলার ২৯, ডসন ১১, জর্ডান ১৪, উইলি ৩৪*, উড ১০, স্টোন ০*; স্টার্ক ১০-০-৪৫-১, কামিন্স ১০-০-৬২-৩, গ্রিন ৭-০-৩৮-০, অ্যাগার ১০-০-৬২-০, স্টয়নিস ৩-০-২৩-১, জ্যাম্পা ১০-০-৫৫-৩)
অস্ট্রেলিয়া: ৪৬.৫ ওভারে ২৯১/৪ (ওয়ার্নার ৮৬, হেড ৬৯, স্মিথ ৮০*, লাবুশেন ৪, কেয়ারি ২১, গ্রিন ২০*; উইলি ৮-০-৫১-২, স্টোন ১০-১-৫০-০, উড ১০-০-৫৯-০, জর্ডান ৭-০-৪৯-১, ডসন ১০-০-৬৫-১, মালান ১.৫-০-১২-০)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: দাভিদ মালান
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া