রেকর্ড বইয়ে ঝড় তুলে বিধ্বংসী ইনিংস উপহার দিয়েছেন হোবার্ট হারিকেন্সের দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটার লিজেল লি।
Published : 10 Nov 2024, 01:49 PM
পাঁচ ইনিংস মিলিয়ে ৭১ রান। উইমেন’স বিগ ব্যাশে এবার একদমই ছন্দে ছিলেন না লিজেল লি। তবে সেই হতাশা এক ম্যাচেই এমনভাবে ঘুচিয়ে দিলেন যে, তার বিধ্বংসী ইনিংসে বিধ্বস্ত হলো প্রতিপক্ষ আর তোলপাড় পড়ে গেল রেকর্ড বইয়ে।
সিডনিতে রোববার হোবার্ট হারিকেন্সের হয়ে এমন ঝড় বইয়ে দেন লি। পার্থ স্কচার্সের বিপক্ষে ৭৫ বলে ১৫০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন দক্ষিণ আফ্রিকান এই ব্যাটার। ৩২ বছর বয়সী ওপেনারের ইনিংসে ছক্কা ও চার ছিল এক ডজন করে।
এই ইনিংসে একগাদা রেকর্ডেও নাম লেখান লি। তার ১২ ছক্কা মেয়েদের ২০ ওভারের ক্রিকেটে এক ইনিংসে বিশ্বরেকর্ড।
১১ ছক্কার আগের রেকর্ড ছিল যৌথভাবে অস্ট্রেলিয়ার গ্রেস হ্যারিস ও ব্রাজিলের লরা আগাথার।
হ্যারিসের আরেকটি রেকর্ডও নিজের করে নিয়েছেন লি। উইমেন’স বিগ ব্যাশে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ এতদিন ছিল ব্রিজবেন হিটের হয়ে হ্যারিসের ১৩৬। লি উপহার দিলেন এই টুর্নামেন্টের প্রথম দেড়শ রানের ইনিংস।
মেয়েদের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পঞ্চম সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর এটি। ১৬৯ রানের রেকর্ড ইনিংসটি গত বছর চিলির বিপক্ষে খেলেছেন আর্জেন্টিনার লুসিয়া টেইলর।
তবে আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে প্রথম দেড়শ স্পর্শ করতে পারলেন লি-ই। অস্ট্রেলিয়ার অ্যালিসা হিলির ১৪৮ ছিল এখানে আগের রেকর্ড।
সিডনি ক্রিকেট মাঠে রোববার দ্বিতীয় ওভারে দুটি বাউন্ডারিতে শুরু হয় লির রান উৎসব। তৃতীয় ওভারে পরপর দুই বলে উইকেট হারায় তার দল। কিন্তু পরের ওভারেই টানা দুটি ছক্কায় চাপ উড়িয়ে দেন লি। এরপর চার-ছক্কা আসতে থাকে নিয়মিতই।
সোফি ডিভাইনের এক ওভারে তিন বাউন্ডারিতে ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি ২৯ বলে। পরের পঞ্চাশে তার লাগে কেবল ২২ বল।
অ্যালান কিংয়ের এক ওভারে দুই চার এক ছক্কায় শতরানের কাছাকাছি যাওয়ার পর লিলি মিলসের বলে ছক্কা মেরে শতরানে পা রাখেন ৫১ বলে।
এলিস ভিলানির সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৬৫ বলে ১১৪ রানের জুটি গড়েন তিনি, সেখানে ভিলানির অবদান ছিল মোটে ১৯ বলে ১৪!
শেষ পর্যন্ত তাকে থামতে পারেননি কেউ। শেষ ওভারে টানা দুটি ছক্কায় পৌঁছে যান দেড়শ রানে। মাঠ ছাড়েন অপরাজিত থেকেই।
ফিটনেস নিয়ে বিতর্কের জের ধরে ২০২২ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে স্রেফ ৩০ বছর বয়সেই অবসরে চলে যান লি। এখন বলতেই পারেন, এমন ব্যাটিং করতে পারলে আর সমস্যা কোথায়!
২০ ওভারে হোবার্ট হারিকেন্স তোলে ২০৩ রান। দলের প্রায় ৭৪ শতাংশ রান একাই করেন লি।
পার্থকে ১৩১ রানে গুটিয়ে দিয়ে হোবার্ট ম্যাচ জিতে নেয় ৭২ রানে।
ম্যাচের পর লি বললেন, পুরোপুরি মনের মতো খেলতে তিনি পারেননি এই ইনিংসেও। তবে ফর্মে ফেরার সন্তুষ্টি তার আছে।
“এটা সেরকমই একটা দিন… বলব না যে, সব বলই আমার মাঝব্যাটে লাগছিল, কারণ আসলে তা হয়নি। তবে সবকিছু আমার পক্ষেই আসতে থাকে। ফর্ম একটু পড়তির দিকে ছিল। সেখানে আমার দল ও পরিবারকে পাশে পেয়েছি অবিশ্বাস্যভাবে।”