চতুর্থ দিন দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশকে ১৮২ রানে থামিয়ে ৩২৮ রানে জিতল শ্রীলঙ্কা।
Published : 25 Mar 2024, 09:03 AM
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ২৮০
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৮৮
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ৪১৮
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৫১১) ৪৯.২ ওভারে ১৮২
সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে বিব্রতকর পরাজয়ের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। ৫১১ রানের বিশাল লক্ষ্যে স্রেফ ৪৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছে তারা। বাকি ৫ উইকেটে আরও ৪৬৪ রানের লক্ষ্যে চতুর্থ দিন সকালে ব্যাট করতে নামবে স্বাগতিকরা।
মুমিনুল হক ২৯ বলে ৭ ও তাইজুল ইসলাম ১৪ বলে ৬ রানে সোমবারের খেলা শুরু করবেন। এরপর স্বীকৃত ব্যাটসম্যান আছেন শুধু মেহেদী হাসান মিরাজ। এই তিনজন মিলে অতি অবিশ্বাস্য কিছু না করলে বড় পরাজয়ই অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্য।
ইনিংসে হার ব্যতীত টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পরাজয় ৪৬৫ রানে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০০৯ সালে। এছাড়া তিনশর বেশি রানে হারের নজির আছে আরও ৫টি। অবিশ্বাস্য কিছু না ঘটলে এই তালিকায় হয়তো যোগ হবে আরেকটি ম্যাচ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (তৃতীয় দিন শেষে):
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ২৮০
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৮৮
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ৪১৮
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৫১১) ১৩ ওভারে ৪৭/৫ (জয় ০, জাকির ১৯, শান্ত ৬, মুমিনুল ৭*, শাহাদাত ০, লিটন ০, তাইজুল ৬*; ভিশ্ব ৭-৩-১৩-৩, রাজিথা ৩-০-১৯-১, কুমারা ৩-১-৬-১)
দিনের প্রথম দুই ওভারে তাইজুল ইসলামকে স্ট্রাইক দেননি মুমিনুল হক। তৃতীয় ওভারে ব্যাটিং পেয়ে প্রথম বলেই ড্রেসিং রুমে ফিরলেন প্রথম ইনিংসে দলের সর্বোচ্চ রান করা ব্যাটসম্যান।
কাসুন রাজিথার ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি ভুল লাইনে খেলেন তাইজুল। বল তার প্যাডে লাগতেই জোরাল আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। কিছুক্ষণ ভেবে রিভিউ নেন তাইজুল। তাতে লাভ হয়নি কোনো।
৫১ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে পরাজয়ের আরেকটু কাছে গেলো বাংলাদেশ।
ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসান মিরাজ। ৪২ বলে ১০ রানে খেলছেন মুমিনুল হক।
কাসুন রাজিথার অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলার চেষ্টায় পরাস্ত মেহেদী হাসান মিরাজ। বল আঘাত করল তার থাই প্যাডে। সঙ্গে সঙ্গে শ্রীলঙ্কার জোরাল আবেদন। তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার।
কিছুক্ষণ ভেবে রিভিউ নিলেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা। রিপ্লে দেখা যায়, বল চলে যেত স্টাম্পের ওপর দিয়ে। তাই বহাল থাকে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত। বিফলে যায় শ্রীলঙ্কার রিভিউ। বিপদ ঘটেনি রানের খাতা খোলার অপেক্ষায় থাকা মিরাজের।
১৬ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৫২ রান।
পঞ্চাশ ছুঁতেই ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বনিম্ন রানে অল আউট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে মুমিনুল হক ও মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে সেটি ছাড়িয়ে গেছে তারা।
কলম্বোর পি সারা ওভালে ২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। প্রায় ১১ বছর সেটিই ছিল টেস্টে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন স্কোর।
২০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৬৬ রান। মুমিনুল ৫৪ বলে ১৩ ও মিরাজ ১৮ বলে ১১ রানে খেলছেন।
দিনের শুরুতেই তাইজুল ইসলামের উইকেট হারানোর পর আর বিপদ ঘটতে দেননি মুমিনুল হক ও মেহেদী হাসান মিরাজ। অবিচ্ছিন্ন জুটিতে এখন পর্যন্ত ৩৪ রান যোগ করেছেন দুজন।
প্রথম সেশনের পানি বিরতি পর্যন্ত ২৬ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৮৪ রান। দিনের প্রথম ঘণ্টায় ১৩ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৩৭ রান করেছে তারা।
তৃতীয় দিনের শেষ দিকের মতো সোমবারও বেশ গোছানো ব্যাটিং করছেন মুমিনুল। ৮৩ বলে ২৯ রানে অপরাজিত দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। ৩১ বলে ১৪ রান করেছেন মিরাজ।
জুটি ভাঙতে মরিয়া শ্রীলঙ্কা হারাল আরও একটি রিভিউ। কাসুন রাজিথার ভেতরে আসা ডেলিভারি অন সাইডে খেলার চেষ্টায় ঠিকঠাক পারেননি মুমিনুল হক। বল তার প্যাডে লাগলে প্রছন্ন আবেদন করেন শ্রীলঙ্কার ফিল্ডাররা। আম্পায়ার সাড়া দেননি।
কিছুক্ষণ ভেবে রিভিউ নেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা। রিপ্লে দেখা যায়, প্যাডে লাগার আগে ব্যাটের ভেতরের অংশ ছুঁয়েছে বল। তাই বিপদ ঘটেনি মুমিনুলের। বিফলে যায় শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় রিভিউ। দুই দলেরই বাকি ১টি করে রিভিউ।
৩০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৯৫ রান। মুমিনুল ৯২ বলে ৩৪ ও মিরাজ ৪০ বলে ১৮ রানে খেলছেন।
মুমিনুল হক ও মেহেদী হাসান মিরাজের জুটিতে আরেকটি শঙ্কা এড়াল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন স্কোর ৮৭ রান। ২০০২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ২০২১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেটি ছাড়িয়ে গেল বাংলাদেশ।
চাপ সামলে প্রতিরোধ গড়েছেন মুমিনুল হক ও মেহেদী হাসান মিরাজ। বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় স্রেফ ৫১ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর সপ্তম উইকেটে এরই মধ্যে পঞ্চাশ রান যোগ করেছেন তারা দুজন।
৩১ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১০৫ রান। অবিচ্ছিন্ন সপ্তম উইকেট জুটির সংগ্রহ ৯৫ বলে ৫৪ রান। ম্যাচে এটাই স্বাগতিকদের প্রথম পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি।
জয় থেকে ৪০৬ রান দূরে বাংলাদেশ।
মুমিনুল ৯৫ বলে ৩৯ ও মিরাজ ৪৩ বলে ২৩ রানে অপরাজিত।
কাসুন রাজিথা অফ স্টাম্পের বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে বেশ দূর থেকেই ড্রাইভের চেষ্টা করলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল চলে গেল স্লিপ অঞ্চলে। দ্বিতীয় স্লিপে দারুণ ক্যাচ নিলেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা।
৬ চারে ৫০ বলে ৩৩ রান করে ফিরলেন মিরাজ। তার বিদায়ে ভাঙল ম্যাচে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ৬৬ রানের জুটি।
ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান শরিফুল ইসলাম। ৯৭ বলে ৪০ রানে খেলছেন মুমিনুল হক।
৩৩ ওভারে বাংলাদেশের ৭ উইকেটে ১১৯ রান।
চাপ সামলে একপ্রান্ত আগলে রেখে পরাজয়ের ব্যবধান কমাচ্ছেন মুমিনুল হক। চতুর্থ দিন সকালে প্রথম ঘণ্টায় বিদায় নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। পঞ্চাশ রানের জুটি গড়ে দ্বিতীয় ঘণ্টায় ফিরেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ফিফটির সম্ভাবনা জাগিয়ে প্রথম সেশন পার করেছেন মুমিনুল।
চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে ২৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৮২ রান করেছে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে ৩৮ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১২৯ রান। মুমিনুল ১১২ বলে ৪৬ ও শরিফুল ইসলাম ১৯ বলে ৩ রানে অপরাজিত।
ম্যাচ জিততে বাংলাদেশের এখনও প্রয়োজন ৩৮২ রান। শ্রীলঙ্কার দরকার বাকি ৩ উইকেট।
চলতি ম্যাচে এখন পর্যন্ত ২৮ উইকেট নিয়েছেন পেসাররা। বাংলাদেশের মাটিতে এক টেস্টে পেসারদের এর চেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার রেকর্ড আছে আর এক ম্যাচে। ২০০২ সালে চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসাররা মিলে নিয়েছিলেন ৩০ উইকেট।
শ্রীলঙ্কার জয়ের মাঝে শেষ কাঁটা হয়ে ব্যাটিং করে যাচ্ছেন মুমিনুল হক। একপ্রান্ত আগলে রেখে এরই মধ্যে চলতি ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম ফিফটি করেছেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
১১৫ বলে ৬ চারে ক্যারিয়ারের ১৭তম ফিফটি করলেন ৩২ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। দলের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী দেখেই হয়তো মাইলফলক ছোঁয়ার পর ব্যাট তোলেননি তিনি।
৪০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১৩৮ রান। মুমিনুল ১১৮ বলে ৫৪ ও শরিফুল সিওলাম ২৫ বলে ৩ রানে খেলছেন।
কাসুন রাজিথার অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি দূর থেকে খেলার চেষ্টা করলেন শরিফুল ইসলাম। ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল চলে গেল স্লিপ অঞ্চলে। ডান দিকে ঝাঁপিয়েও হাতে নিতে পারলেন না ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা।
ফলে ৯ রানে বেঁচে গেলেন শরিফুল। মুমিনুল হকের সঙ্গে তার অষ্টম উইকেট জুটি ছুঁয়েছে ৪০ রান।
৪৪ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১৫৮ রান। মুমিনুল ১৩০ বলে ৬৪ ও শরিফুল ৩৭ বলে ১০ রানে খেলছেন।
জীবন পাওয়ার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না শরিফুল ইসলাম। কাসুন রাজিথার পরের ওভারে ফিরতি ক্যাচ দিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তার বিদায়ে ভাঙল ৪৭ রানের সপ্তম উইকেট জুটি।
৪২ বলে ১২ রান করে ফিরেছেন শরিফুল। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান সৈয়দ খালেদ আহমেদ।
আগের ওভারে ফিরতে পারতেন মুমিনুল হকও। লাহিরু কুমারার অফ স্টাম্পের বাইরের বল দূর থেকে ড্রাইভ করেন মুমিনুল। ব্যাটের বাইরের কানায় ছুঁয়ে যাওয়া বল ক্যাচ নিলেও তেমন জোরাল আবেদন করেননি কুসাল মেন্ডিস। ফলে ৬৪ রানে বেঁচে যান মুমিনুল।
উইকেটে গিয়ে প্রথম বলেই কট বিহাইন্ড হলেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। ১৮ ম্যাচের ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার ৫ উইকেট পেলেন কাসুন রাজিথা। জয় থেকে আর ১ উইকেট দূরে শ্রীলঙ্কা।
৪৬ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৯ উইকেটে ১৬৪ রান। ১৩৬ বলে ৬৯ রানে খেলছেন মুমিনুল হক। আরেক প্রান্তে শেষ ব্যাটসম্যান নাহিদ রানা।
মুমিনুল হকের অপরাজিত ফিফটিতে পরাজয়ের ব্যবধান কিছুটা কমিয়ে ৩২৮ রানে হারল বাংলাদেশ। লাহিরু কুমারার বলে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে নাহিদ রানা ফিরলে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।
৫১১ রানের লক্ষ্যে স্বাগতিকরা গুটিয়ে গেছে ১৮২ রানে। চতুর্থ দিন শেষ ৫ উইকেটে ১৩৫ রান যোগ করেছে তারা। ১২ চার ও ১ ছক্কায় ১৪৮ বলে ৮৭ রানের ইনিংস খেলেছেন মুমিনুল।
টেস্টে রানের হিসেবে শ্রীলঙ্কার এর চেয়ে বড় জয় আছে আর একটি। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪৬৫ রানে।
ঘরের মাঠে সবশেষ ২০১৫ সালে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওই ম্যাচেও তারা হেরেছিল ৩২৮ রানে।
ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৫৬ রানে ৫ উইকেট নেন কাসুন রাজিথা। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয়বারেও বাংলাদেশের সবকটি উইকেট নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার তিন পেসার রাজিথা, কুমারা ও ভিশ্ব ফার্নান্দো।
সব মিলিয়ে ম্যাচে ৩১টি উইকেট গেছে পেসারদের ঝুলিতে। বাংলাদেশের মাটিতে এক টেস্টে এটিই রেকর্ড।
দিনের শুরুতেই তাইজুল ইসলামের বিদায়ের পর মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে ৬৬ রানের জুটি গড়েন মুমিনুল। পরে শরিফুল ইসলামকে নিয়ে যোগ করেন আরও ৪৭ রান। শেষ দিকে একার লড়াইয়ে সেঞ্চুরির কাছে গেলেও সঙ্গীর অভাবে তা করা হয়নি মুমিনুলের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ২৮০
বাংলাদেশ ইনিংস: ১৮৮
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ৪১৮
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৫১১) (আগের দিন ৪৭/৫) (মুমিনুল ৮৭*, তাইজুল ৬, মিরাজ ৩৩, শরিফুল ১২, খালেদ ০, নাহিদ ০; ভিশ্ব ১৫-৫-৩৬-৩, রাজিথা ১৪-১-৫৬-৫, কুমারা ১১.২-১-৩৯-২, জয়াসুরিয়া ৯-১-৩৭-০)