টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংসে ৪ উইকেটে ৩১৪ রানে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছে সফরকারীরা।
Published : 30 Mar 2024, 08:39 AM
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ৩১৪/৪
ব্যাটিং ব্যর্থতায় বড় পরাজয়ে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজ। প্রথম ম্যাচ জিতে এগিয়ে গেছে শ্রীলঙ্কা। সিরিজ জয়ের সুযোগ আর নেই স্বাগতিকদের। অন্তত ড্র করার লক্ষ্যে মাঠে নামছে নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বাধীন দল।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টেস্ট শুরু শনিবার সকাল ১০টায়।
এই মাঠে দুই দলের সবশেষ তিন টেস্টই হয়েছে ড্র। ২০০৯ সালের পর আর বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। এই সময়ে ছয় সিরিজের পাঁচটি শেষ হয়েছে শ্রীলঙ্কার ১-০ জয়ে।
২০১৭ সালের সিরিজটি ১-১ ব্যবধানে ড্র করেছে বাংলাদেশ। লঙ্কানদের বিপক্ষে টেস্টে বাংলাদেশের একমাত্র জয়ও ওই সিরিজে। প্রায় সাত বছর আগের স্মৃতি ফেরানোর অভিযানেই এবার নামবেন তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজরা।
ঘুরে দাঁড়ানোর অভিযানে স্বাগতিকদের বাড়তি প্রেরণা হতে পারে সাকিব আল হাসানের অন্তর্ভুক্তি। প্রায় এক বছর পর টেস্টে ফিরছেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার।
চট্টগ্রামে কয়েনভাগ্য পাশে পেলেন না নাজমুল হোসেন শান্ত। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা।
সিলেট টেস্টে টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ। সফরকারীরা সে পথে হাঁটেনি। প্রথম ম্যাচের বড় জয়ের পর এবার আগে ব্যাট করবে তারা।
প্রায় এক বছর পর টেস্টে ফিরলেন সাকিব আল হাসান। প্রথমবারের মতো সাদা পোশাকের ক্রিকেটে মাঠে নামার সুযোগ পেলেন হাসান মাহমুদ। এই সংস্করণে বাংলাদেশের ১০৪তম ক্রিকেটার ২৪ বছর বয়সী পেসার।
বাংলাদেশের একাদশে পরিবর্তন এই দুটিই। আগের ম্যাচের একাদশে থাকা দুই পেসার শরিফুল ইসলাম ও নাহিদ রানার জায়গা হয়নি এবার।
হাসানের সঙ্গে একাদশে আরেক পেসার সৈয়দ খালেদ। বোলিং বিভাগের বাকি তিন জন স্পিনার- সাকিব, তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
ব্যাটিং ব্যর্থতায় ম্যাচ হারলেও ব্যাটিং লাইনআপে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
বাংলাদেশ একাদশ: মাহমুদুল হাসান জয়, জাকির হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, সাকিব আল হাসান, শাহাদাত হোসেন, লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, হাসান মাহমুদ
চোটের কারণে ছিটকে যাওয়া কাসুন রাজিথার বদলে শ্রীলঙ্কার একাদশে একটি পরিবর্তন ছিল অনিবার্য। তার জায়গায় স্কোয়াডে সুযোগ পাওয়া আসিথা ফার্নান্দোকেই দলে নিয়েছে সফরকারীরা। তাদের একাদশে পরিবর্তনও এই একটিই।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: দিমুথ কারুনারাত্নে, নিশান মাদুশকা, কুসাল মেন্ডিস (উইকেটরক্ষক), অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, দিনেশ চান্দিমাল, ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা, কামিন্দু মেন্ডিস, প্রাবাথ জয়াসুরিয়া, আসিথা ফার্নান্দো, লাহিরু কুমারা, ভিশ্ব ফার্নান্দো।
আঁটসাঁট লাইন-লেংথে সকালের সেশনের শুরুটা বেশ ভালো করেছেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও হাসান মাহমুদ। অফ স্টাম্পের আশপাশ থেকে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে বেশ ভুগতে হয়েছে নিশান মাদুশকা, দিমুথ কারুনারাত্নে।
টানা ভালো বোলিংয়ের পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন হাসান। কিন্তু স্লিপে সেটি নিতে পারলেন না মাহমুদুল হাসান জয়। শুরুতেই জীবন পেলেন মাদুশকা।
ষষ্ঠ ওভারে হাসানের অফ স্টাম্পের বাইরে লেংথ ডেলিভারি সামনের পায়ে খেলবেন নাকি পেছনের পায়ে থাকবেন দ্বিধায় লাগে মাদুশকার ব্যাটের বাইরের কানায়। সহজ ক্যাচ ওঠে দ্বিতীয় স্লিপে। কিন্তু হাতে জমাতে পারেননি জয়। ৯ রানে বেঁচে যান মাদুশকা।
প্রথম ম্যাচের প্রথম ইনিংসেও স্লিপে ক্যাচ ছেড়েছিলেন জয়। শূন্য রানে বেঁচে গিয়ে ১০২ রানের ইনিংস খেলেন কামিন্দু মেন্ডিস। অধিনায়ক ধানাঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে গড়েন দুইশ রানের জুটি।
উদ্বোধনী জুটি ভাঙার আশায় সপ্তম ওভারে অভিজ্ঞ স্পিনার সাকিব আল হাসানকে বোলিংয়ে এনেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম ওভারে ৬ রান দিয়েছেন সাকিব।
৭ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৯ রান। মাদুশকা ২৪ বলে ৯ ও কারুনারাত্নে ১৮ বলে ১০ রানে অপরাজিত।
চট্টগ্রামের ঘাসহীন ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে দারুণ শুরু করেছে শ্রীলঙ্কা। নতুন বলে শুরুর কয়েক ওভার পর মুভমেন্ট অনেকটাই কমে গেছে। অনায়াসে দলের রান বাড়িয়ে চলেছেন নিশান মাদুশকা ও দিমুথ কারুনারাত্নে।
দিনের প্রথম ঘণ্টায় কোনো সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ। সুযোগ অবশ্য এসেছিল। দ্বিতীয় স্লিপে নিশান মাদুশকার ক্যাচ নিতে পারেননি মাহমুদুল হাসান জয়। এর বাইরে আর কোনো সুযোগ না দিয়ে উদ্বোধনী জুটিতে পঞ্চাশ রান যোগ করেন দুই ওপেনার।
১৪ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫০ রান। ৯ রানে বেঁচে যাওয়া মাদুশকা ৪৯ বলে ৩২ রানে অপরাজিত। ৩৫ বলে ১৮ রানে খেলছেন কারুনারাত্নে।
দুই পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও হাসান মাহমুদের সঙ্গে দুই স্পিনার সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজকেও ব্যবহার করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পেসাররা কিছুটা হলেও সমীহ আদায় করলেও স্পিনারদের বিপক্ষে তেমন সমস্যায় পড়তে দেখা যায়নি দুই ওপেনারকে।
হতাশাময় প্রথম ঘণ্টার পর দ্বিতীয় ঘণ্টার শুরুতেই এলো রান আউটের সুযোগ। কিন্তু কাজে লাগাতে পারলেন না মেহেদী হাসান মিরাজ। এবার বেঁচে গেলেন দিমুথ কারুনারাত্নে।
ষোড়শ ওভারে সৈয়দ খালেদ আহমেদের প্রথম বল আলতো করে পয়েন্টের দিকে খেলে রানের জন্য ছোটেন নিশান মাদুশকা। শুরুতে সাড়া দেন কারুনারাত্নে। মাঝপথে গিয়ে বুঝতে পারেন বিপদ আসন্ন। তাই অনেকটাই হাল ছেড়ে দেন তিনি।
কিন্তু দারুণ ফিল্ডিংয়ে বল ধরলেও স্টাম্প ভাঙতে পারেননি মিরাজ। ফলে ১৮ রানে বেঁচে যান কারুনারাত্নে। আরও একবার হতাশায় ডোবে বাংলাদেশ। এর আগে ৯ রানে স্লিপে ক্যাচ দিয়েও জীবন পান ওপেনার মাদুশকা।
১৬ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৬ রান। মাদুশকা ৫৭ বলে ৩৭ ও কারুনারাত্নে ৩৯ বলে ১৯ রানে অপরাজিত।
নতুন বলে প্রথম স্পেলে দারুণ বোলিং করলেন হাসান মাহমুদ। কয়েক ওভার বিরতির পর দ্বিতীয় স্পেলে ফিরেও অভিষিক্ত পেসার করলেন আঁটসাঁট বোলিং। দুই স্পেলেই জাগালেন উইকেটের সম্ভাবনা। কিন্তু ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় দুইবারই ডুবলেন হতাশায়। দলের চিত্রও অভিন্ন।
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনের প্রথম সেশনে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৮৮ রান করেছে শ্রীলঙ্কা। মধ্যাহ্ন বিরতির আগের এই ২৭ ওভারে অন্তত ৩টি সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। সবকটিই গেছে বিফলে।
নিশান মাদুশকা ৯৭ বলে ৫৫ ও দিমুথ কারুনারাত্নে ৬৫ বলে করেছেন ৩৩ রান।
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নামার পর শুরুর দিকে কিছুটা মুভমেন্ট পান সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও হাসান মাহমুদ। ষষ্ঠ ওভারে হাসানের বলে স্লিপে ক্যাচ দেন মাদুশকা। মাহমুদুল হাসান জয় ক্যাচ ছাড়লে ৯ রানে বেঁচে যান লঙ্কান ওপেনার।
প্রথম ঘণ্টায় আর তেমন সুযোগ আসেনি। দ্বিতীয় ঘণ্টার শুরুতে কারুনারাত্নেকে রান আউটের সুযোগ আসে। এবার পয়েন্ট থেকে স্টাম্প ভাঙতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ।১৮ রানে প্রথমবার বাঁচেন কারুনারাত্নে।
পরে হাসানের বাউন্সারে ডিপ ফাইন লেগে ক্যাচ তোলেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি ওপেনার। কিন্তু ক্ষণিকের হিসেবের ভুলে ভারসাম্য হারিয়ে সেটিও নিতে পারেননি সাকিব আল হাসান। এবার ২২ রানে জীবন পান কারুনারাত্নে।
দুই ওপেনারকে ফেরানোর তিন সুযোগের বাইরে পুরো সেশনে কোনো দাপট দেখাতে পারেনি বাংলাদেশ। উইকেটও আছে ব্যাটসম্যানদের পক্ষে। ঘাসহীন চকচকে উইকেটে অনায়াসেই রান তুলেছেন মাদুশকা ও কারুনারাত্নে
মধ্যাহ্ন বিরতির পর শুরুতেই উদযাপনের উপলক্ষ পেল বাংলাদেশ। অভিষিক্ত হাসান মাহমুদের দারুণ থ্রো ধরে স্টাম্প ভেঙে নিশান মাদুশকার বিদায় নিশ্চিত করলেন লিটন কুমার দাস।
মেহেদী হাসান মিরাজের বল কভারের দিকে খেলে রানের জন্য ছোটেন দিমুথ কারুনারাত্নে। প্রথম রান সম্পন্ন করার পর দ্বিতীয় রানের জন্যও ডাকেন তিনি। তবে কয়েক ধাপ গিয়েই ফিরিয়ে দেন। ততক্ষণে প্রায় মাঝ ক্রিজে মাদুশকা।
পপিং ক্রিজে ফেরার চেষ্টায় ডাইভ দেন লঙ্কান ওপেনার। তাতে লাভ হয়নি কোনো। তার বিদায়ে ভাঙে ৯৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। ৬ চারে ১০৫ বলে ৫৭ রান করেছেন মাদুশকা।
তিন নম্বরে নেমে প্রথম বলেই বাউন্ডারি মারেন কুসাল মেন্ডিস। ২৯ ওভারে একশ ছুঁয়ে ফেলে শ্রীলঙ্কা।
কারুনারাত্নে ৬৮ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত।
ভাগ্যের ছোঁয়ায় উদ্বোধনী জুটি ভাঙলেও শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারছে না বাংলাদেশ। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে স্বাচ্ছন্দ্যে রান করছেন দিমুথ কারুনারাত্নে ও কুসাল মেন্ডিস।
এরই মধ্যে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন কারুনারাত্নে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিরও পঞ্চাশ রান পূর্ণ হয়েছে।
৪২ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১ উইকেটে ১৪৬ রান। কারুনারাত্নে ৯৫ বলে ৫৬ ও কুসাল ৫২ বলে ২৮ রানে অপরাজিত।
জুটি ভাঙার আশায় ৪১তম ওভারে দ্বিতীয় সেশনে প্রথম পেসার আনেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কাজ হয়নি তাতে। উল্টো আলগা বোলিংয়ে ৩ চারে ১৪ রান খরচ করে বসেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ।
অন্য প্রান্তে মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলামরাও তেমন কোনো প্রভাব তৈরি করতে পারছেন না।
জুটি ভাঙতে যেন মরিয়া হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। সেই আশায়ই হয়তো অদ্ভুত এক রিভিউ নিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। রিভিউ হারানো ছাড়া আর কিছুই মেলেনি তাতে।
তাইজুল ইসলামের গুড লেংথ ডেলিভারি ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেন কুসাল মেন্ডিস। খালি চোখেই দেখা যায়, মাঝ ব্যাট লেগেছে কুসালের। কিন্তু হুট করেই রিভিউয়ের ইঙ্গিত করেন শান্ত।
রিপ্লেতে দেখা যায়, বল লেগেছে কুসালের মাঝ ব্যাটে। তাই বল ট্র্যাকিংয়ের দিকেও যাননি টিভি আম্পায়ার।
পরের বলে আবারও ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে লং অফ দিয়ে বাউন্ডারি মারেন কুসাল।
৪৪ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১ উইকেটে ১৫৫ রান। কুসাল ৬০ বলে ৩৩ ও দিমুথ কারুনারাত্নে ৯৯ বলে ৬০ রানে খেলছেন। জুটির সংগ্রহ ৫৯ রান।
চট্টগ্রামে কিছুতেই কিছু হচ্ছে না বাংলাদেশের। স্পিনারদের সঙ্গে পেসারদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করেও কোনো ফল পাচ্ছেন না নাজমুল হোসেন শান্ত। দারুণ ব্যাটিং উইকেটে স্বাগতিক বোলার-ফিল্ডারদের হতাশায় ডুবিয়ে এগিয়ে চলেছেন দিমুথ কারুনারাত্নে ও কুসাল মেন্ডিস।
কারুনারাত্নের পর পঞ্চাশ করেছেন কুসাল। একই ওভারে পূর্ণ হয়েছে দুজনের দ্বিতীয় উইকেট জুটির একশ রান। পরের ওভারে দুইশ রানও ছুঁয়ে ফেলেছে শ্রীলঙ্কা।
৫৪ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১ উইকেটে ২০৫ রান। কারুনারাত্নে ১২৪ বলে ৮৩ ও কুসাল ৯৫ বলে ৬০ রানে অপরাজিত।
উইকেটে টার্নের দেখা মেলেনি তেমন। বাউন্সও সুষম। উইকেটের চারপাশে শট খেলতে তাই কোনোরকম সমস্যাই হচ্ছে না দুই ব্যাটসম্যানের। বড় জুটিতে স্বাগতিক ফিল্ডারদের শরীরী ভাষায়ও কমে গেছে তেজ।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর প্রথমবার আক্রমণে এসেই সাফল্য পেলেন হাসান মাহমুদ। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের ডেলিভারি ড্রাইভ করতে গিয়ে কিছুটা আগেই শট খেলে ফেলেন দিমুথ কারুনারাত্নে। ব্যাটের নিচের কানায় লেগে বল আঘাত করে অফ স্টাম্পে। টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম উইকেট পান হাসান।
৮ চার ও ১ ছক্কায় ১২৯ বলে ৮৬ রান করা অভিজ্ঞ ওপেনারের বিদায়ে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে বাংলাদেশ দলে। দ্বিতীয় উইকেট জুটি থেমেছে ১১৪ রানে।
চার নম্বরে নেমেছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। ৯৭ বলে ৬২ রানে অপরাজিত কুসাল মেন্ডিস।
৫৬ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২ উইকেটে ২১০ রান।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর খেলা শুরু হতেই রান আউট নিশান মাদুশকা। আর সেশনের শেষ দিকে বোল্ড দিমুথ কারুনারাত্নে। দ্বিতীয় সেশনে শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনারের উইকেট নিতে পেরেছে বাংলাদেশ। তাতে ফিরেছে কিছুটা স্বস্তি।
অবশ্য নিয়ন্ত্রণ এখনও সফরকারীদের হাতেই। চা বিরতি পর্যন্ত ৫৮ ওভারে তাদের সংগ্রহ ২ উইকেটে ২১৪ রান। মধ্যাহ্ন বিরতির পর ৩১ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে তারা করেছে ১২৬ রান। ওভারপ্রতি নিয়েছে ৪-এর বেশি।
কুসাল মেন্ডিস ১০৫ বলে ৬৫ ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ৯ বলে ১ রানে অপরাজিত।
সেশনের শুরুতে কারুনারাত্নের ভুলে দুই রান নেওয়ার চেষ্টায় রান আউট হন ৫৭ রান করা নিশান মাদুশকা। ডিপ কভার থেকে দারুণ থ্রো করেন হাসান মাহমুদ। পরে ৮৬ রান করা কারুনারাত্নের উইকেট নেন অভিষিক্ত পেসার।
দুই উইকেট পড়লেও বোলিং-ফিল্ডিংয়ে দাপট দেখাতে পারেনি বাংলাদেশ। বরং সাবলীল ব্যাটিংয়ের অনায়াসেই রান করেছেন মেন্ডিস, কারুনারাত্নেরা।
চা বিরতির পরও একই ছন্দে এগোচ্ছেন কুসাল মেন্ডিস ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। উইকেটের আশায় আরেকটি রিভিউ হারিয়েছে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের রিভিউ বাকি আর একটি।
মেহেদী হাসান মিরাজের মিডল স্টাম্পে পিচ করা অফ স্পিনে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলার চেষ্টায় ব্যাটে লাগাতে পারেননি। বল প্যাডে আঘাত করতেই জোরাল আবেদন। তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার।
বেশ কিছুক্ষণ আলোচনার পর একদম শেষ মুহূর্তে রিভিউ নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে চলে যেত বল। তাই বিফলে যায় রিভিউ। এর আগে কুসালকে আউটের চেষ্টায়ই প্রথম রিভিউ হারায় বাংলাদেশ।
দিনের শেষ সেশনেও ইতিবাচক ব্যাটিং করছেন কুসাল ও ম্যাথিউস। হাসান মাহমুদের এক ওভারে ৩টি চার মেরেছেন কুসাল। তাইজুল ইসলামের পরের ওভারে ছক্কা ওড়ান ম্যাথিউস। এই সেশনে ওভারপ্রতি প্রায় সাড়ে ৪ করে রান করছেন তারা।
৬৬ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২ উইকেটে ২৪৬ রান। কুসাল ১৩৩ বলে ৮৭ ও ম্যাথিউস ২৯ বলে ১০ রানে খেলছেন।
স্লিপ অঞ্চলে দুটি ক্যাচ পড়ার পর তৃতীয়বারে গিয়ে সাফল্য পেল বাংলাদেশ। সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে নব্বই ছুঁয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরলেন কুসাল মেন্ডিস।
সাকিব আল হাসানের হালকা ঝুলিয়ে দেওয়া ডেলিভারি সামনের পায়ে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেন কুসাল। টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়ার মুখে কুসালের ব্যাটের কাঁধের অংশে লাগে বল। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে প্রথম স্লিপে দারুণ ক্যাচ নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
১১ চার ও ১ ছক্কায় ১৫০ বলে ৯১ রান করেছেন কুসাল। পাঁচ নম্বরে নেমেছেন দিনেশ চান্দিমাল।
কুসালের বিদায়ের আগে প্রথম দুই উইকেটের মতো তৃতীয়টিতেও হয়েছে পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি। তৃতীয় উইকেটে পঞ্চাশ রানের জুটি গড়তে ৯১ বল খেলেছেন কুসাল ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। কুসালের বিদায়ে ভেঙেছে ৫৩ রানের জুটি।
৭২ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২৬৪ রান। ৪৫ বলে ২১ রানে অপরাজিত ম্যাথিউস।
দিনের শেষ ঘণ্টায় দ্বিতীয় নতুন বল পেল বাংলাদেশ। ৮০ ওভার পূর্ণ হতেই আর সময় নষ্ট করেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। নতুন বল নিয়ে হাসান মাহমুদকে আক্রমণে ফেরালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
৮০ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২৮৯ রান। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ৬৫ বলে ২৩ ও দিনেশ চান্দিমাল ৩১ বলে ২৪ রানে অপরাজিত। চতুর্থ উইকেট জুটির সংগ্রহ ২৬ রান।
দ্বিতীয় নতুন বলে সাফল্য পেতে একদমই সময় লাগল না বাংলাদেশের। প্রথম ওভারেই অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে ড্রেসিং রুমে ফেরালেন হাসান মাহমুদ।
অফ স্টাম্পের বাইরের ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারি ছাড়ব না খেলব দ্বিধায় ম্যাথিউসের ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে চলে যায় স্লিপ অঞ্চলে। তৃতীয় স্লিপে ক্যাচ নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
২ চার ও ১ ছক্কায় ৭১ বলে ২৩ রান করে ফিরেছেন ম্যাথিউস। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান ছন্দে থাকা ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা। ৩১ বলে ২৪ রানে খেলছেন দিনেশ চান্দিমাল।
৮১ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৮৯ রান। দিনের খেলা বাকি আর ৯ ওভার।
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন শেষে চালকের আসনে শ্রীলঙ্কা। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ৯০ ওভারে ৪ উইকেটে ৩১৪ রান করেছে সফরকারীরা। টপ-অর্ডারের তিন ব্যাটারই খেলেছেন পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস।
প্রথম ম্যাচের ফিল্ডিংয়ের ব্যর্থতার ধারা অব্যাহত দ্বিতীয় টেস্টেও। প্রথম দিন তিনটি ক্যাচ ছেড়েছে বাংলাদেশ। এর সঙ্গে হাতছাড়া হয়েছে গোটা দুয়েক রান আউটের সুযোগ।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা লঙ্কানরা প্রথম সেশনের পুরোটা কাটায় নির্বিঘ্নে। উইকেটের সুযোগ অবশ্য তৈরি করেছিলেন হাসান মাহমুদ। অভিষিক্ত পেসারের বলে ৯ রানে থাকা নিশান মাদুশকার ক্যাচ নিতে পারেননি মাহমুদুল হাসান জয়।
জীবন পেয়ে ৫৭ রান করে রান আউট হন মাদুশকা। দ্বিতীয় সেশনে ৯৬ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি।
প্রথম সেশনে দিমুথ কারুনারাত্নেও বেঁচে যান দুইবার। পরিষ্কার রান আউটের সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। হাসানের বলে ডিপ ফাইন লেগে ক্যাচ নিতে পারেননি সাকিব আল হাসান।
দুইবার জীবন পাওয়া কারুনারাত্নে জাগান সেঞ্চুরির সম্ভাবনা। ৮০ পেরোনর পর তাকে বোল্ড করেন হাসান। তিন নম্বরে নামা কুসাল মেন্ডিস যান তিন অঙ্কের আরও কাছে। ৯৩ রান করা কিপার-ব্যাটসম্যানকে ফেরান সাকিব।
দিনের শেষ ভাগে দ্বিতীয় নতুন বল নিয়ে চতুর্থ সাফল্য পায় বাংলাদেশ। নতুন বলে প্রথম ওভারেই অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের উইকেট নেন হাসান।
অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ২৫ রান যোগ করেন দিনের খেলা শেষ করেন দিনেশ চান্দিমাল ও ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে (মাদুশকা ৫৭, কারুনারাত্নে ৮৬, কুসাল ৯৩, ম্যাথিউস ২৩, চান্দিমাল ৩৪*, ধানাঞ্জয়া ১৫*; খালেদ ১০-১-৪১-০, হাসান ১৭-৫-৬৪-২, সাকিব ১৮-২-৬০-১, মিরাজ ২৮-৪-৯৫-০, তাইজুল ১৭-৪-৪৮-০)