আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বললেও আগামী চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে চোখ রাখছেন ৩৭ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার।
Published : 09 Jul 2024, 01:21 PM
শেষ হইয়াও যেন হইল না শেষ! এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পর্ক চুকেবুকে গেছে ডেভিড ওয়ার্নারের। তার পরিচয় এখন ‘সাবেক ক্রিকেটার।’ তবে প্রয়োজনে আবার পুরোনো পরিচয়ে ফিরতেও রাজি তিনি। দল প্রয়োজন মনে করলে আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে চান ৩৭ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।
গত নভেম্বরে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল আপাতত ওয়ার্নারের ক্যারিয়ারের শেষ ওয়ানডে। পরে জানুয়ারিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে তিনি বিদায় জানান সাদা পোশাককেও। তবে তখনই বলেছিলেন, দল চাইলে তিনি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে প্রস্তুত থাকবেন।
সম্প্রতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে এই সংস্করণকেও বিদায় জানান তিনি। সব মিলিয়ে পাকাপাকিভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে গেলেও মনের কপাট তিনি পুরোপুরি বন্ধ করছেন না।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে পেছন ফিরে তাকিয়ে সোমবার ইনস্টাগ্রামে বিশাল এক বার্তা দেন ওয়ার্নার। সেখানেই ছোট্ট করে জানিয়ে রাখলেন ফেরার সম্ভাবনার কথা।
“আপাতত আরও কিছুদিন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট চালিয়ে যাব এবং যদি দলে নেওয়া হয়, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতেও উন্মুক্ত থাকব আমি।”
ওয়ার্নারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে জানুয়ারিতেই নিজের ভাবনা জানিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান টেস্ট ও ওয়ানডে অধিনায়ক প্যাট কামিন্স।
“আমার মনে হয়, সময়টা এখন ওয়ানডেতে অন্যদেরকে বাজিয়ে দেখার। তবে সে (ওয়ার্নার) যদি তখনও খেলতে থাকে… এটা হতে পারে, অতি জরুরি কোনো পরিস্থিতিতে সমাধান। ডেভিড (ওয়ার্নার) হয়তো বিশ্বের কোনো প্রান্তে রান করেই যাবে… তাই কেউ জানে না, এখানেই তার শেষ কি না।”
অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের ধারা ও সংস্কৃতি অনুযায়ী যদিও, ওয়ার্নারের ফেরা বা তাকে ফেরানো সম্ভাবনা খুবই সামান্য। আপাতত অনেক দিন ওয়ানডে ক্রিকেট নেই তাদের। পরবর্তী সিরিজ তারা খেলবে সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ড সফরে, এরপর নভেম্বরে দেশের মাঠে খেলবে পাকিস্তানের বিপক্ষে দেশের মাঠে। এই সময়টায় মূলত উদ্বোধনী জুটিতে ট্রাভিস হেডের নতুন সঙ্গী খোঁজা হবে। সেখানে আপাতত অনেকটাই এগিয়ে জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক।
ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক বা অন্য কেউ খুব বাজেভাবে ব্যর্থ না হলে বা কামিন্স যেমন বলেছেন, অতি জরুরি পরিস্থিতির তৈরি না হলে ওয়ার্নারের দুয়ারে কড়া নাড়ার কথা নয় অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকদের।
সামনে কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি ও কেম্যান আইল্যান্ডে টি-টেন ক্রিকেটে খেলবেন ওয়ার্নার। বিগ ব্যাশে তাকে পেতে আশাবাদী সিডনি থান্ডার। যদিও সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইএল টি-টোয়েন্টিতে দুবাই ক্যাপিটালসের হয়ে চুক্তি আছে তার। এই দুই টুর্নামেন্ট হবে কাছাকাছি সময়েই।
ইনস্টাগ্রামে তার বার্তার শুরুতে অবশ্য পুরোপুরি বিদায়ের ঘোষণাই থাকল।
“অধ্যায় শেষ!! এত লম্বা সময় ধরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলতে পারা ছিল অবিশ্বাস্য এক অভিজ্ঞতা। অস্ট্রেলিয়াই আমার দল। ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই খেলেছি। এটা করতে পারা ছিল আমার জন্য বিশাল সম্মানের। তিন সংস্করণেই একশর বেশি ম্যাচ খেলতে পারা ক্যারিয়ারের উল্লেখযোগ্য ব্যাপার।”
“যাদের কারণে এতটা সম্ভব হয়েছে, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। আমার স্ত্রী ও কন্যারা, যারা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে, ওদেরকে ধন্যবাদ। কেউই বুঝতে পারবে না, কিসের ভেতর দিয়ে আমাদের যেতে হয়েছে। ক্রিকেট সমর্থক যারা আছেন, আশা করি সত্যিকার অর্থেই আপনাদের বিনোদন দিতে পেরেছি এবং ক্রিকেটকে বদলে দিতে পেরেছ, বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে যেভাবে অন্যদের চেয়ে বেশি দ্রুততায় রান করেছি। আমাদের ভালোবাসার কাজটি সমর্থকদের ছাড়া আমরা করতেই পারতাম না। কাজেই, কৃতজ্ঞতা।”
তিন সংস্করণ মিলিয়ে ১৮ হাজার ৯৯৫ রান করে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসের দ্বিতীয় সফলতম ব্যাটসম্যান ওয়ার্নার (রিকি পন্টিংয়ের রান ২৭ হাজার ৩৬৮)। সেঞ্চুরিতেও ওয়ার্নারের (৪৯টি) ওপরে আছেন কেবল পন্টিং (৭০টি)।
তিন সংস্করণই একশর বেশি ম্যাচ খেলা অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র ক্রিকেটার ওয়ার্নারই।