সাম্প্রদায়িকতাকে সবার অভিন্ন শত্রু হিসেবে বর্ণনা করে তা রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, “আমাদের সকলের অভিন্ন শত্রু সাম্প্রদায়িকতা। সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলকে আমি বলব, আমাদের এখন প্রধানতম লক্ষ্য হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদকে রুখতে হবে।”
বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে সরস্বতী পূজা পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বিদ্যাদেবীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, “এই ক্যাম্পাসকে শান্তিময় ক্যাম্পাসে রূপ দিতে হবে। এখানে শেখ হাসিনার আমলে আর অস্ত্রের ঝনঝনানি হবে না, যেই অস্ত্রের ঝনঝনানিতে একসময় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অস্থিতিশীল ছিল।
“এই ক্যাম্পাস এখন শান্তিপূর্ণ। এখানে সাম্প্রদায়িকতার আগ্রাসন, জঙ্গিবাদের আগ্রাসন আমরা চাই না। এ দেশের রাজনীতিতে আমরা সম্প্রীতির সেতুবন্ধন রচনা করব, এই হোক আমাদের শপথ। শেখ হাসিনা সেই সত্য সুন্দরের অভিসারী।”
‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “শেখ হাসিনা এগিয়ে যাচ্ছেন রূপকল্প-২০৪১ নিয়ে, যার মূল থিম হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ। আসুন আমরা এই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে যার যার জায়গা থেকে শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করি, তার হাতকে শক্তিশালী করি।
“অসুরের বিরুদ্ধে সুরের ঝঙ্কার তুলি। আসুন, অশান্তির বিরুদ্ধে শান্তির পতাকা উড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা রূপান্তর করি।”
একসময়ের আন্দোলন-সংগ্রামের কেন্দ্রস্থল জগন্নাথ হল নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “এই জগন্নাথ হল আমার জীবনের এক স্মৃতিময় অধ্যায় রচনা করেছে। ১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদের সকল কর্মকাণ্ড এই জগন্নাথ হল থেকে পরিচালিত হয়েছে। আমরা একঝাঁক তরুণ সেদিন প্রতিবাদের মিছিলে সামিল হয়েছিলাম।
“এই জগন্নাথ হল থেকেই আমরা প্রথম প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। আজকে সেই স্মৃতি মনে পড়ছে। আন্দোলন করায় পরবর্তীতে এই হল থেকেই আমি গ্রেপ্তার হই এবং জিয়ার কারাগারে বন্দি হই।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমি গর্বিত, কারণ কারাগার থাকা অবস্থায় আমি প্রথম ছাত্রলীগের সভাপতি হই। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে আমি আওয়ামী লীগের মতো পার্টিতে তিন-তিনবার সাধারণ সম্পাদক হয়েছি। আমি এজন্যও গর্বিত যে, আমার ধমনিতে ছাত্রলীগের রক্ত প্রবাহিত।
“আমার চেতনায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের চেতনা প্রবাহিত। আমি ছাত্রলীগের গৌরবময় ইতিহাসের উত্তরাধিকারী। কাজেই ছাত্রলীগ করে কেউ হারিয়ে যায় না। কমিটমেন্ট থাকলে, লেগে থাকলে জীবনে অনেক অসাধ্যকে সাধন করা যায়, অনেক কৃতিত্ব অর্জন করা যায়।”
এ সময় পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিহির লাল সাহা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ হল ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।