স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে দরকার প্রযুক্তিনির্ভর অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ: ঢাবি উপাচার্য

“জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠিত হলে সেই সমাজে সাম্প্রদায়িকতা থাকে না, সে সমাজে অশুভ তৎপরতা থাকে না,” বলেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2023, 03:22 PM
Updated : 16 Jan 2023, 03:22 PM

স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করতে ‘জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন’ জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।

তিনি বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে যে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলেছেন, তার জন্য দরকার নলেজ বেইজ্ড ইকোনোমি, কিন্তু প্রযুক্তিনির্ভর।”

সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমদ অডিটোরিয়ামে 'সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ' আয়োজিত 'মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির গুরুত্ব' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, “জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠিত হলে সেই সমাজে সাম্প্রদায়িকতা থাকে না, সে সমাজে অশুভ তৎপরতা থাকে না। হ্যাঁ থাকবে, যেমন বিশ্বের উন্নত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের মত এসব দেশেও রয়েছে, তবে আইনও আছে। কিন্তু কথা হলো আইন শক্তিশালী থাকবে- অশুভ তৎপরতাকে দমন করার জন্য, সেগুলোকে তখন দমিয়ে রাখা যাবে।

“যুগে যুগে এ অঞ্চলে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান ঘটেছিল। তবে সামাজিক প্রতিরোধের মুখে অল্প সময়ের মধ্যেই তারা স্তিমিত হয়ে পড়ে। এসব সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এখনও সক্রিয় রয়েছে। এদের সম্পর্কে সর্বদা সজাগ থাকতে হবে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, “ধর্ম সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, ধর্মের সাথে আমাদের আত্মিক একটি যোগাযোগ রয়েছে। কিন্তু ধর্মকে যখন রাজনৈতিকহীন উদ্দেশ্য ব্যবহার করেন, সাম্প্রদায়িকতা ও রাজনৈতিকতা যখন একাকার হয়ে যায়; তখন সেটি বিষবাষ্পের মত ছড়িয়ে পড়ে এবং সেটি সমাজকে ক্ষতবিক্ষত করে।

“আমরা দেখেছি ধর্মকে নানাভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপব্যবহার করা হয়েছে। ধর্মের যে মূল সুর বা বাণী সেটি হল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, ভালোবাসা, মানবকল্যাণ এবং এগিয়ে যাওয়া। এই ধর্মের বাণী কিন্তু বঙ্গবন্ধু তার অসাম্প্রদায়িক প্যারাডাইমস- সেটির মধ্যে নিয়ে এসেছিলেন।”

ধর্মীয় বিভাজন সৃষ্টি করে একটি দেশ এগিয়ে যেতে পারে না মন্তব্য করে সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, “আপনারা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো দেখেন- ইউরোপ, লাতিন আমেরিকার দেশ যারাই এই পথে চলেছে। তারা মারামারি ও হানাহানি করেছে, মানবসম্পদের বিকাশ স্তব্ধ করেছে, নিজেদের সম্পদ শেষ করেছে।

“এদেশ এগিয়ে চলতে হলে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে চলতে হবে, সব ধর্মের, সকল বর্ণের মানুষের বিকাশের সুযোগ দিতে হবে। ধর্মীয় বিভাজনের সৃষ্টি করা যাবে না।”

সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক অরুণ কুমার গোস্বামীর সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক মহসীন হাবিব।