অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা বলেন, কারিগরি শিক্ষা শেষ করে শিক্ষার্থীরা কোন ধরনের কাজে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে সেদিকটা গবেষণার মাধ্যমে বের করা প্রয়োজন।
Published : 24 Feb 2025, 06:37 PM
কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতিবছর প্রায় ২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ করার আগেই বিদায় নেন বলে ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চের গবেষণায় উঠে এসেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রায় ৭৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন, যাদের মধ্যে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন শতকরা ৭২ শতাংশ। বাকী প্রায় ২৮ শতাংশ গ্রাজুয়েশন শেষ করার আগে ঝরে পড়েছেন।
সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘টিভিইটি ইনস্টিটিউট এক্সপেন্ডিচার রিভিউ স্টাডি’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে গবেষকরা এসব তথ্য তুলে ধরেন।
গবেষণায় পাওয়া গেছে, পলিটেকনিক স্কুল ও কলেজগুলোতে সর্বমোট শিক্ষক-কর্মচারীর ঘাটতি ৬৫ শতাংশ।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ঘাটতির পরও একজন শিক্ষার্থীর পেছনে বছরে গড়ে ৩২ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। যেখানে শিক্ষক-কর্মকর্তা-শিক্ষার্থীর ঘাটতি পূরণ করা হলে একজন শিক্ষার্থীর পেছনে ৫২ হাজার টাকা করে খরচ হবে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর পেছনে বছরে প্রায় ১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা ও বুয়েট শিক্ষার্থীদের পেছনে ১ লাখ ৭৯ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে।
গবেষণার তথ্য বলছে, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে ব্যয়ের মোট ৮৮.২ শতাংশ আসে সরকারি বাজেট থেকে। বাকীটা সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়।
বৈঠকে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সচিব কে এম কবিরুল ইসলাম বলেন, “কারিগরি শিক্ষাবোর্ড পিছিয়ে থাকার কারণ সামাজিক স্টিগমা। কারিগরি বোর্ডে অধিকাংশ মানুষ মনে করে যারা বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে চান্স পায় না, তারাই কারিগরি শিক্ষায় আসে। তাই, আমাদের সমাজে যে বৈষম্য তা নিরসণ করতে না পারলে কারিগরি শিক্ষায় সবসময় এরকম বৈষম্য থেকে যাবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা বলেন, “কারিগরি শিক্ষা শেষ করে শিক্ষার্থীরা কোন ধরনের কাজে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে সেদিকটা গবেষণার মাধ্যমে বের করা প্রয়োজন।
“কারিগরি শিক্ষার প্রতি মানুষের ভুল ধারণাগুলো দূর করতে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ করা, নতুন নতুন টেকনোলজির সাথে খাপ খাইয়ে মূল ধারার কারিকুলাম আরও সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নতুন জায়গা তৈরি করতে হবে।”
গোলটেবিল বৈঠকে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক সুয়াইব আহমেদ ও ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চের চেয়ারম্যান এম এম আকাশসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।