ঢাবি শিক্ষার্থীকে মারধর: ‘প্রলয়’ চক্রের সদস্যদের বহিষ্কার দাবি

‘গ্যাং’ মুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2023, 11:25 AM
Updated : 27 March 2023, 11:25 AM

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়ের ইবনে হুমায়ূনকে মারধরের ঘটনায় ‘প্রলয়’ চক্রের সদস্যদের বহিষ্কারের দাবি উঠেছে ক্যাম্পাসে।

রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে এ হামলায় জড়িতদের স্থায়ী বহিষ্কারের পাশাপাশি ‘গ্যাং’ মুক্ত ক্যাম্পাসের দাবি জানান‌।

মানববন্ধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জোবায়েরের সহপাঠী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদ্দীন হলের সামনে অপরাধ বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী জোবায়ের ইবনে হুমায়ুনকে মারধর করেন তারই একদল সহপাঠী। এরপর হামলাকারীরা ‘প্রলয়’ নামে ক্যাম্পাসভিত্তিক একটি গ্যাংয়ের সদস্য বলে তাদের নাম সামনে আসে।

এঘটনায় রোববার রাতে জোবায়ের মা ওই চক্রের ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৬/৭ জনকে দায়ী করে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন।

অভিযোগের ভিত্তিতে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে শাহবাগ থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তার দুইজন হলেন- নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের ফয়সাল আহমেদ সাকিব।

সংঘবদ্ধ হামলায় জোবায়েরের গুরুতর আহত হওয়া এবং মামলার পর ‘প্রলয়’ চক্র নিয়ে ক্যাম্পাসে আলোচনা শুরু হয়।

Also Read: ঢাবি শিক্ষার্থীকে মারধর: ‘প্রলয়’ চক্রের বিরুদ্ধে মামলা, আটক ২

এ চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক সেবন ও মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে।

‘প্রলয়’ চক্রের সদস্যরা ক্যাম্পাসে সংঘবদ্ধভাবে চলাফেরা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা চিকিৎসাকেন্দ্রের তৃতীয় তলায় তাদের একটি ‘অস্থায়ী কার্যালয়’ রয়েছে বলেও সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে।

সোমবার মানববন্ধনে অংশ নিয়ে অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার ফারজানা রহমান বলেন, সংঘবদ্ধভাবে একজন শিক্ষার্থীর উপর হামলা করা খুবই ভয়ানক বিষয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস- ঐতিহ্যের সঙ্গে যায় না। এর আগে এ ধরনের অপরাধের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনেক শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তি দিয়েছে। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি হয়েছে।

"আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপর আস্থা রাখি। আশা করছি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আগামীতে এ ধরনের গ্যাং কালচার থেকে মুক্ত থাকবে আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।"

অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাত ইশা বলেন, “আমাদের দাবি একটি, সেটি হল জোবায়েরের ওপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে যেন প্রশাসন যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

“ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি, পুলিশ প্রশাসন দু'জনকে আটক করেছে। আমরা প্রশাসনের ওপর আস্থা রেখে বলছি, পুলিশ প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জোবায়েরর ওপর অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলাকারীদের শাস্তির আনবে।“

জোবায়েরের সহপাঠী জামিল শামস বলেন, “জোবায়েরের ওপর যেভাবে হামলা করা হয়েছে তা কোনো মানুষের কাজ হতে পারে না। আমরা চাই না এই ক্যাম্পাসে আর কোন অপরাধী চক্র গড়ে না উঠুক, কোন গ্যাং তৈরি না হোক।

"আমরা চাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকে; প্রত্যেকটি শিক্ষার্থী যাতে ন্যায় বিচার পায়; ক্যাম্পাসে নিরাপদভাবে চলাচল করতে পারে। রাতের বেলাও একজন শিক্ষার্থী চলাফেরা করে যেন এটা মনে না করে যে এই ক্যাম্পাস অনিরাপদ।"