‘শিক্ষকরা নির্বাচনে, ডাকসু কেন নির্বাসনে’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে পৌনে দুই বছর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছে একদল ছাত্র।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Dec 2021, 12:35 PM
Updated : 30 Dec 2021, 12:35 PM

বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ভোটগ্রহণ শুরুর পর ছাত্র অধিকার পরিষদের ব্যানারে তারা টিএসসি থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ভোটকেন্দ্রের সামনে অবস্থান নেন।

‘শিক্ষকরা নির্বাচনে, ডাকসু কেন নির্বাসনে’, ‘শতবর্ষের অর্জন ডাকসু কেন বর্জন’, ‘শিক্ষকদের নির্বাচন হয়, ছাত্রদের নির্বাচন কবে’, ‘ডাকসু নির্বাচন বন্ধ শিক্ষকদের চোখ কি অন্ধ’ স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে তারা সেখানে স্লোগান দেন।

২৮ বছর পর ২০১৯ সালের ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় ডাকসু নির্বাচন। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ২৩ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বায়িত্ব নেন। সে হিসেবে গত বছর ২৩ মার্চ শেষ হয় সেই কমিটির মেয়াদ।

ওই সংসদের ২৫টি পদের ২৩টিই ছিল ছাত্রলীগের দখলে। শুধু ভিপি ও সমাজসেবা সম্পাদক পদে জয়ী হয় কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্যানেল থেকে নূর ও আখতার হোসেন।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বন্ধ ক্যাম্পাসে যথাসময়ে নির্বাচন আয়োজন করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ডাকসুর ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার দেড় বছরেরও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও নতুন নির্বাচনের আর কোনো তৎপরতা নেই।

অপরদিকে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে শিক্ষকদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ দেখিয়ে বিএনপি-জামায়াত সমর্থক সাদা দল সমিতির ২০২১ সালের নির্বাচন বর্জন করলে বিনা ভোটেই সব পদে জেতে আওয়ামী লীগ-সমর্থক  নীল দল।

এবার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৫টি পদে নীল দল ও সাদা দল তাদের দলীয় প্যানেল চূড়ান্ত করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।

নির্বাচন চলাকালীন ভোটকেন্দ্রের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান করতে দেখে  বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক  এ কে এম গোলাম রাব্বানী  তাদের সেখান থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। তাদের নিজের কার্যালয়েও ডাকেন তিনি।

তাকে স্বাগত জানিয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, “আমরা ডাকসু নির্বাচন চাই। এখানে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন হচ্ছে, এখানে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমাদের বড় একটি প্রশ্ন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় মূল উপকরণ কারা? এটা ছাত্ররা অবশ্যই। এজন্য ছাত্রদের নির্বাচনটি বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।”

হলগুলোতে নিয়ম মেনে প্রশাসনিকভাবে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া, অথিতি কক্ষে নির্যাতন প্রতিরোধে আইন পাশ ও হল সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন বলেন, “হলের হাউজ টিউটরদের বেতন দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের সিট দেওয়ার জন্য, হলের নিয়ন্ত্রণের জন্য। কিন্তু আমরা দেখতে পাই,  হল চালায় সম্পূর্ণ ছাত্রলীগ।

“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনাকালীন সময়ে শিক্ষকদের নির্বাচন হয়েছে, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের নির্বাচনসহ সবার নির্বাচন হয় কিন্তু ছাত্রদের নির্বাচন হয় না। আমরা অতি দ্রুত ডাকসু নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।”