হল খোলার ‘রোডম্যাপ’ দিলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা

আবাসিক হল খোলা না হলে সশরীরে পরীক্ষা দিতে চান না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা; প্রয়োজনে ‘সাময়িক আবাসন’ হিসেবে হল খুলে ধাপে ধাপে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 June 2021, 09:32 AM
Updated : 3 June 2021, 09:32 AM

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে সংবাদ সম্মেলন করে হল-ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এই দাবি জানান।

তাদের এই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাড়া না দিলে ৬ জুন রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ কর্মসূচিরও ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে আবাসিক হল না খোলার শর্তে ১৫ জুন থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের স্থগিত পরীক্ষা এবং ১ জুলাই থেকে অন্যান্য সেমিস্টার ফাইনাল, বার্ষিক কোর্স ফাইনাল ও ব্যবহারিক পরীক্ষাসমূহ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় এনেই আবাসিক হলসমূহ খোলা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ধাপে ধাপে পরীক্ষার্থীদের জন্য হল খুলে দিতে হবে। পাশাপাশি ভ্যাক্সিনেশন প্রক্রিয়া চালু রাখতে হবে‍। ইম্যিউনিটি গ্রোথ স্টেজ পার হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের হলে উঠিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করতে হবে। পূর্বে স্থগিত যেসব পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে, সেগুলো ১৫ জুন থেকেই নিতে হবে‍।

সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের পক্ষে ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ বলেন, “সমাপনী পরীক্ষার্থীদের জন্য 'টেম্পোরারি একোমোডেশন' হিসেবে হল খুলে দিয়ে পরীক্ষা নিতে হবে। হলে সিটের সংখ্যা বিবেচনায় এক বা দুইটি সেশন একসাথে হলে উঠিয়ে (টেম্পোরারি একোমোডেশন) ১ জুলাই থেকে তাদের পরীক্ষা নিতে হবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই যতটুকু সিলেবাস শেষ করা হয়েছে, তার উপর রিভিউ ক্লাস নিতে হবে (অনলাইন কিংবা অফলাইনে) এবং সম্পন্নকৃত সিলেবাসের মধ্য থেকেই পরীক্ষার প্রশ্ন নির্ধারণ করতে হবে।"

এ বিষয় উপ-কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বিশেষজ্ঞ শিক্ষক রয়েছেন যাদের সমন্বয়ে একটি উপ-কমিটি গঠন করে দ্রুতই একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনামাফিক ধাপে ধাপে পরীক্ষার্থীদের হলে রেখে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণে যে সকল পদক্ষেপ প্রশাসনকে নিতে হবে- ৭ দিন পরপর হল স্যানিটাইজ করা, ক্যাম্পাসে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা, অছাত্র ও বহিরাগত মুক্ত হল নিশ্চিত করতে হবে।"

শিক্ষার্থীদের টিকা প্রসঙ্গে আসিফ বলেন, “ইউজিসির ঘোষণা অনুযায়ী আগামী সপ্তাহ থেকে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করতে হবে। পরীক্ষা চলমান অবস্থাতেই পর্যায়ক্রমে প্রথম ডোজ এবং সময়মত দ্বিতীয় ডোজ টিকা দিয়ে 'ইম্যিউনিটি গ্রোথ স্টেজ' পার হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের জন্য স্থায়ীভাবে হল খুলে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করতে হবে।"

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়াহিদুজ্জামান এবং ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী হাসনাত আবদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।