ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার আয়োজিত আলোচনা সভায় উপাচার্য বলেন, “১৫ অক্টোবর থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে এবং সকলের নিজ নিজ দায়িত্বের জায়গাটি জাগ্রত রাখতে হবে। এই ধরণের দুঃখজনক ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেদিকে যত্নবান ও সচেতন থাকার জন্য আমি সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”
১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবরের রাতে জগন্নাথ হলের অডিটোরিয়ামে অন্যদের সঙ্গে বসে শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত জনপ্রিয় নাটক ‘শুকতারা’ দেখছিলেন। সে সময় ৬৪ বছরের পুরানো চুন-সুড়কির ছাদ ভেঙে এক নারকীয় অবস্থার সৃষ্টি হয়। ২৬ জন ছাত্র, ১৪ জন অতিথি ও কর্মচারীসহ মোট ৪০ জনকে সেদিন প্রাণ হারান। আহত হন ৩০০ জন।
এরপর থেকে প্রতিবছর ১৫ অক্টোবর ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
প্রতি বছরের মতো এবছরও সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল, হোস্টেল ও প্রধান প্রধান ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়।
উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সকাল সাড়ে ৭টায় জগন্নাথ হল স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও নীরবতা পালন করেন। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারাও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শোকাবহ ওই ঘটনার স্মরণে জগন্নাথ হলে ‘অক্টোবর স্মৃতি ভবন’ নামের একটি ভবন আছে।
সেখানে আয়োজিত আলোচনা সভায় নিহতদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে উপাচার্য বলেন, “সেদিন অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যার যার সাধ্যানুযায়ী রক্ত, অর্থ ও শ্রম দিয়ে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় হতাহতদের সাহায্যে সকলে এগিয়ে এসেছিল। মানবিক বিপর্যয় প্রতিরোধে এই ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা হল আমাদের ধর্মীয়, সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধের বহিঃপ্রকাশ।”
সভায় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফর রহমান, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ মিহির লাল সাহা, শোক দিবস পালন কমিটির আহ্বায়ক দেবপ্রসাদ দাঁ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম, দুর্ঘটনায় আহত তৎকালীন ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ডেপুটি রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।