রোববার সন্ধ্যায় ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইমরান আলী অর্ক নামের ২৯ বছর বয়সী ওই যুবকের মৃত্যু হয় বলে তার বন্ধু শিহাব উদ্দিন ইনান জানান।
অর্ক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮তম আবর্তনের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। রংপুর জেলার কাউনিয়া উপজেলার মধুপুর গ্রামের ছেলে অর্ক লেখাপড়া শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের গেরুয়া এলাকায় ভাড়া থেকে চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
ইনান বলেন, রোববার সকালে পেটের পীড়া ও বমি শুরু হলে অর্ক সাভার স্থানীয় একটি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরে আসেন। দুপুরের পর আবার তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে সাভারের সুপার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানকার ডাক্তাররা অর্ককে এনাম মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলেন। এনাম মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন।
"ঢাকায় নেওয়ার পথে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে অর্ককে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে নিয়ে যাই আমরা। সেখানকার জরুরি বিভাগের ডাক্তাররা জানান, অতিরিক্ত বমির কারণে অর্ক হাইপোভোলেমিক শকে আক্রান্ত, তাকে আইসিউতে রাখা প্রয়োজন।
“কিন্তু সোহরাওয়ার্দীতে আইসিইউ না পেয়ে আমরা আশপাশের প্রাইভেট হাসপাতালে খোঁজ করতে থাকি। এর মাঝেই সব শেষ হয়ে যায়।"
অর্কের মৃত্যু সংবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছালে নেমে আসে শোকের ছায়া। রাত ১১ টার দিকে হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তার জন্য মোনাজাতে অংশ নেন। এরপর মরদেহ পাঠানো হয় অর্কের গ্রামের বাড়িতে।
রোববার দুপুরে সেখানে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে অর্ককে দাফন করা হবে বলে জানা ইনান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।
অর্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন 'জলসিঁড়ি'র সদস্য ছিলেন জানিয়ে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, “অর্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিত মুখ ছিল, সুন্দর গান করত। তার এমন অবেলায় চলে যাওয়া কষ্টদায়ক।"
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, "অর্ক ভাই একজন গানপাগল অমায়িক মানুষ ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব মহলে তার জনপ্রিয়তা ছিল। তার এভাবে চলে যাওয়া আমরা মেনে নিতে পারছি না।”